মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) আগে শেষ রবিবাসরীয় প্রচারে গিয়ে বিতর্কে জড়ালেন উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) সমীর পাঁজা। জনসভায় নির্দল প্রার্থীদের ভোট না দেওয়ার আবেদন জানাতে গিয়ে তাঁর হুঁশিয়ারি, নির্দলে ভোট দিলে আগামী মাস থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার আর ঢুকবে না। আর তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। তবে বিধায়কের সাফাই, তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে।
নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতার ময়দান থেকে নির্দল কাঁটা উপড়ে ফেলতে কড়া দাওয়াই দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। বারবার তিনি জানিয়েছেন, প্রার্থী হতে না পেরে দলের কেউ যদি নির্দল (Independent)হয়ে ভোটে লড়াই করেন, তাহলে তাঁর আর ঠাঁই হবে না তৃণমূলে। বহিষ্কার করা হবে তাঁদের। প্রত্যেক জনসভাতেই তিনি এ ব্যাপারে সতর্ক করছেন। এবার সেই বার্তা অনুযায়ী আরও কড়া হুঁশিয়ারি শোনা গেল উদয়নারায়ণপুরের (Udaynarayanpur) তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজা। রবিবার বসন্তপুরের ভেটকেপাড়ায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে নির্দলের মই চিহ্নকে নিশানা করে বলেন, ”কারও কথা শুনে মইয়ে উঠবেন না যেন। মইয়ে উঠলে পুকুরে গিয়ে পড়বেন, সামনের মাস থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ঢুকবে না। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা যা পান, তা তৃণমূল কংগ্রেসের জন্যই।”
[আরও পড়ুন: প্রেমিকের সঙ্গে থাকতে দু’বছরের সন্তানকে খুন! ‘দৃশ্যম’-এর মতো প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা মহিলার]
এ বিষয়ে বিতর্ক উঠতেই সমীরবাবুর সাফাই, তাঁর কথার ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে। তিনি বলতে চেয়েছেন, অন্য কাউকে ভোটে জেতালে লক্ষ্ণীর ভাণ্ডার পেতে সমস্যা হতে পারে আইনিভাবে। তাই সতর্কতা হিসেবে বলেছেন যে লক্ষ্ণীর ভাণ্ডারে টাকা ঢুকবে না। এর মানে সত্যিই বন্ধ হয়ে যাবে, তা তিনি বলতে চাননি। তবে সমালোচনা থামছে না।
[আরও পড়ুন: বিশ্বকাপে সুযোগ না পেয়ে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে গৃহযুদ্ধ, সতীর্থদের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন অধিনায়কের]
বামফ্রন্টের (Left Front) হাওড়া জেলার আহ্বায়ক দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ”আমরা তৃণমূল বিধায়কের এই কথার তীব্র নিন্দা করছি। কারণ, এটা তাঁরও ব্যক্তিগত টাকা নয়। এটা জনগণের টাকা জনগণকে দেওয়া হয়। আমরা এবার ক্ষমতায় আসব। আমরা বলছি, সমস্ত ভাতা থাকবে এবং তার পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।” হাওড়া জেলার বিজেপির (BJP) গ্রামীণ এলাকার পঞ্চায়েত কনভেনার রমেশ সাধুখাঁ বলেন, ”তৃণমূল সরকারি সমস্ত প্রকল্পকে নিয়ে রাজনীতি করছে। ওদের পায়ের তলার মাটি যত সরছে ততই ওরা মানুষের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে এবং ভুলভাল বলে বেড়াচ্ছে। তৃণমূলকে না ভোট দিলে সরকারি প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে – এই ধরনের কথাবার্তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা এই কথার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”