shono
Advertisement
Royal Bengal Tiger

পালামৌ থেকে এসেছে জিনাত সঙ্গী! মাসখানেক বাঘবন্দি খেলার পর মিলল খোঁজ

বুধবার বাংলা-ঝাড়খণ্ডের কোথাও তার পায়ের ছাপ পাওয়া যায়নি।
Published By: Sayani SenPosted: 11:09 PM Jan 29, 2025Updated: 11:09 PM Jan 29, 2025

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ঠিক এক মাসের মাথায় খোঁজ মিলল জিনাত সঙ্গীর প্রাথমিক পরিচয় ও আবাসস্থলের। জানা গেল তার আগমনের পথ। কিন্তু এই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের আদি বাসস্থান কোথায় তার কোন রেকর্ড নেই শেষবার অর্থাৎ ২০২১-র ব্যাঘ্র সুমারিতে। পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়তলি ও ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির আমঝরনায়
ট্র্যাপ ক্যামেরায় বন্দি হওয়া ওই বাঘের ছবি দেখে ডোরাকাটার নমুনা ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়াতে পাঠানোর পর জিনাত প্রেমিকের সেখানে কোন রেকর্ড মেলেনি। তারপরেই বিভিন্ন ব্যাঘ্র প্রকল্প ধরে দেখা যায় জিনাত সঙ্গীর ছবি রয়েছে ঝাড়খণ্ডের পালামৌতে।

Advertisement

এরপর পরিষ্কার হয়ে যায় জিনাত সঙ্গীর আগমনের পথ। রাজ্যকে এই তথ্য জানানোর পরেই বাংলার হাত ধরে দেশজুড়ে বাঘের খতিয়ানে জিনাত প্রেমিককে নিয়ে নতুন তথ্যপঞ্জি তৈরির কাজ শুরু হল। তবে এই বাঘের বর্তমান আই ডি, তার নম্বর কি হবে তা জানা যাইনি। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল তথা চিফ ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন দেবল রায় বলেন, "এই বাঘটির কোন রেকর্ড নেই। ২০২১-র বাঘসুমারিতে কোন তথ্য ছিল না। তবে ঝাড়খণ্ডের পালামৌতে কয়েকবার তার ছবি পাওয়া যায়।"

গত এক মাস ধরে রেডিও কলারহীনহীন এই বাঘ বাংলা-ঝাড়খণ্ড বনবিভাগকে রীতিমতো নাকানিচোবানি খাওয়াচ্ছে। কখনও ঝাড়খণ্ড। কখনও বাংলা। ৪৮ ঘন্টার সাঁড়াশি অভিযান করেও তাকে বন্দি করা যায়নি। তাই এই একমাস জুড়ে সকলের একটাই প্রশ্ন এই বাঘ এল কোথা থেকে? উত্তর দিতে পারেনি পালামৌ ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষও। ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা-খরসোওয়া বনবিভাগের চাণ্ডিল বনাঞ্চলে এই বাঘটি বেশ কয়েকদিন থাকার সময় ওই ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষের আধিকারিকরা সেখানে থেকে তদারকি চালালেও তারাও ঠাহর করতে পারেননি যে এই ব্যাঘ্র তাদের প্রকল্পের! বরং উঠে এসেছিল আরও নানান তথ্য। বন্যপ্রাণ ও বাঘ নিয়ে বাংলা-ঝাড়খণ্ডে কাজ করা বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন, এই বাঘটি হাজারিবাগ, বেতলা, ছত্তিশগড়, এমনকি মধ্যপ্রদেশ থেকেও আসতে পারে।

তবে পালামৌর কথা যে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল তা কিন্তু নয়। তবে প্রাথমিক পরিচয়, বাসস্থান মিললেও এই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার বুঝিয়ে দিয়েছে বাংলার জঙ্গল বিশেষ করে বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়তলির বনাঞ্চল যে তার পছন্দের! গত ৩০ দিনে বারে বারে সে রাইকা পাহাড়তলি ছুঁয়ে গিয়েছে। এখানেই যে অস্থায়ী ডেরা বেঁধেছিল সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে আসা জিনাত। তার ফেলে আসা পথেই এখনও হাঁটছে জিনাত সঙ্গী। তবে এর মধ্যেই জিনাতের প্রেমিককে রাজ্যের বনবিভাগ 'বাংলার গর্ব' বলে অভিহিত করে তাকে বন্দি করার অভিযান বন্ধ করেছে।

গত ৩১ ডিসেম্বর ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা-খরসোওয়া বনবিভাগের চাণ্ডিল বনাঞ্চলের বালিডিতে একটি গবাদি পশু ও বাছুর 'খুন' করে তার অস্তিত্ব জানান দিয়েছিল। তারপর ওই বাঘ চাণ্ডিল বনাঞ্চল থেকে খুঁটি বনাঞ্চলের তামাড় এলাকাও ঘুরে আসে। ১২ জানুয়ারি দলমা থেকে প্রবেশ করে বাংলায়। টানা আট দিন থাকার পর শেষ দুদিনে রাইকা পাহাড়তলি এলাকায় ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা দেয় সে।

২০ তারিখ ঝাড়খণ্ডে গিয়ে ২৩ তারিখ বেলপাহাড়িতে ওই ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা দিয়ে দক্ষিণ বাঁকুড়ায় চলে যায়। সেখানে দুদিন থাকার পর ২৬ শে জানুয়ারি বান্দোয়ান প্রবেশ করে আবার দক্ষিণ বাঁকুড়া যায়। সেখান থেকে রাইকা পাহাড় ছুঁয়ে যমুনাগোড়া হয়ে ২৮ জানুয়ারি আবার দলমা মুখী হয়। বুধবার অবশ্য বাংলা-ঝাড়খণ্ডের কোথাও তার পদচিহ্ন মেলেনি। তার অবস্থান জানতে দুই রাজ্যের বনবিভাগই নজরদারি চালাচ্ছে। সেই নজরদারির মধ্যেই প্রশ্ন জিনাত সঙ্গী কি 'ঘরে' ফিরবে? নাকি ছোটনাগপুর মালভূমিতেই স্থায়ীভাবে বিচরণ করবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • পালামৌ থেকে এসেছে জিনাত সঙ্গী!
  • মাসখানেক বাঘবন্দি খেলার পর মিলল খোঁজ।
  • বুধবার বাংলা-ঝাড়খণ্ডের কোথাও তার পায়ের ছাপ পাওয়া যায়নি।
Advertisement