চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: করোনা এড়াতে গোমূত্রের পর দাওয়াই হোম যজ্ঞ। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে পুজো ও যজ্ঞের পথে গেলেন একদল জ্যোতিষী। এই বিশ্বাসে কুলটির নিয়ামতপুরে হয়ে গেল করোনা মুক্ত মহামৃত্যুঞ্জয় যজ্ঞ। জ্যোতিষীদের দাবি সংস্কৃত মন্ত্রপাঠের পাশাপাশি যজ্ঞকুণ্ডে মন্ত্রোৎসর্গ করলে মুক্ত হবে করোনা ভাইরাস।
করোনা এড়াতে দেশজুড়ে জারি হয়েছে সতর্কতা। যেখানে বারবার হাত ধোওয়া বা জনবহুল এলাকায় মুখে N-95 মাস্ক লাগাতে বলা হচ্ছে সেখানে ধর্মভীরু কিছু মানুষ পুজো ও যজ্ঞের ওপরেই ভরসা রাখছেন। জ্যোতিষীদের সম্মিলিত আয়োজনে মঙ্গলবার হয়ে গেল এই যজ্ঞের। আসানসোলের বিশিষ্ট জ্যোতিষী সন্তোষ কুমার পাণ্ডের দাবি, এই যজ্ঞের মাধ্যমে রক্ষাকবচ তৈরি হবে। করোনা ভাইরাস প্রভাব ফেলতে পারবে না এলাকায়। যাঁরা পুজোয় এসেছেন তাঁরা এবং তাঁদের পরিবার সুরক্ষার আওতায় আসবেন। আরেক জ্যোতিষী আচার্য উপেন্দ্র পাণ্ডে বলেন, “মহামৃত্যুঞ্জয় যজ্ঞের মাধ্যমে করোনা রক্ষাকবচ তৈরি করা হবে। আদি অনন্তকাল ধরে এই পদ্ধতিতেই করোনার মত মহামারি আটকানো হয়েছে অতীতে। যজ্ঞের ধোঁয়ার এই ভাইরাসের মৃত্যু হবে।”
[ আরও পড়ুন: বন্ধ ব্রিদ অ্যানালাইজিং টেস্ট, রাতদুপুরে রাস্তায় মদ্যপদের তাণ্ডবের আশঙ্কা ]
এদিন দেখা যায় বহু পরিবার যজ্ঞে শামিল হয়েছেন। তাঁরাও মনে করেন এইভাবে করোনা ভাইরাসের মোকাবিলা করা যাবে। এদিন জ্যোতিষীরা ভক্তদের পরামর্শ দেন, ঘরোয়া কিছু উপাচার মানলেই করোনা এড়ানো সম্ভব। কী সেই উপাচার? আয়োজকদের দাবি বাড়িতে রুম স্প্রে ছেড়ে দু’বেলা ধুপ প্রদীপ জ্বালাতে হবে। সন্ধ্যারতি করতে হবে কর্পূরে। গরম গরম খাবার ও উষ্ণ গরম জল পান করতে হবে। মুখে মাস্কের থেকে ঢের ভালো কর্পূর মাখানো পরিস্কার রুমাল। তা দিয়েই মুখে বাঁধতে হবে। পশ্চিমী সভ্যতার হ্যান্ডসেক ছেড়ে নমস্কার করা উচিত মানুষের। পাশাপাশি আয়োজকদের উপদেশ আমিষ ছেড়ে সবুজ সবজি ও নিরামিষ খাবার খেলেই করোনা ভাইরাস মুক্ত হওয়া সম্ভব।
অন্যদিকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের রাজ্য কাউন্সিলের সদস্য তথা বিজ্ঞানের শিক্ষক কিংশুক মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “সারা বিশ্বজুড়ে এখন গবেষণা চলছে Covid-19 নিয়ে। সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করে এই ভাইরাসটির সংক্রমণ ও বিস্তারের ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব। এই সময় মানুষকে কুংস্কার ছেড়ে বিজ্ঞানসম্মতভাবে সচেতন হতে হবে। এই সময়ে আতঙ্কের কিছু নেই, আবার অবহেলা করার বিষয়ও নিয়ে। কিছু মানুষের জন্য এই ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে। এর ফলে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট এবং অর্গান বিপর্যয়ের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। তবে খুব কম ক্ষেত্রেই এই রোগ মারাত্মক হয়।” কিংশুকবাবুর অভিযোগ, “সমাজের একশ্রেণি সাধারণ মানুষকে কুসংস্কারে রেখে ব্যবসা করার জন্য এসব করছে। সমাজের সমস্ত শিক্ষিত মানুষকে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।”
[ আরও পড়ুন: ‘আগেও খেয়েছি, প্রয়োজনে আবারও খাব’, গোমূত্রের পক্ষে সুর চড়ালেন দিলীপ ঘোষ ]
The post করোনার থেকে বাঁচতে মহামৃত্যুঞ্জয় যজ্ঞ, সংক্রমণ এড়ানোর রক্ষাকবচ দিচ্ছেন জ্যোতিষীরা appeared first on Sangbad Pratidin.
