shono
Advertisement
Chicken's Neck

জ্বলছে পদ্মাপাড়! 'চিকেনস নেকে'র সুরক্ষায় আরও তৎপর বিএসএফ, ড্রোন, থার্মাল ক্যামেরায় চলছে নজরদারি

নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে দীর্ঘ সীমান্ত সংলগ্ন প্রতিটি জনপদ।
Published By: Kousik SinhaPosted: 02:28 PM Dec 19, 2025Updated: 03:02 PM Dec 19, 2025

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: নতুন করে উত্তপ্ত বাংলাদেশ। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির মৃত্যুর পর সেই উত্তেজনা অগ্নিগর্ভ আকার নেয়। বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির সংবাদপত্র 'প্রথম আলো'-সহ একাধিক অফিসে অগ্নিসংযোগ থেকে শুরু করে মধ্যরাতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বঙ্গবন্ধুর বাড়িও। নতুন করে বাংলাদেশে অশান্তির ঘটনায় কড়া নজর রাখছে দিল্লি। শুধু তাই নয়, অশান্তির আঁচ যাতে কোনওভাবে বাংলায় এসে না পড়ে সেজন্য সতর্ক সীমান্তরক্ষী বাহিনীও। বিশেষ করে 'চিকেনস নেকে'র (Chicken's Neck) সুরক্ষায় কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না। চরম অরাজক পরিস্থিতির জেরে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় আরও কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে। কার্যত নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে দীর্ঘ সীমান্ত সংলগ্ন প্রতিটি জনপদ। থার্মাল ক্যামেরা, নাইটভিশন ক্যামেরা, সিসিটিভি ক্যামেরা ও ড্রোনের সাহায্যে নজরদারি চালানো হচ্ছে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, দুই দিনাজপুর এবং মালদহ মিলিয়ে ছয় জেলায় প্রায় ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। এরমধ্যে ১৯৫ কিলোমিটার সীমান্তে নদী, জমির সমস্যার জন্য কাঁটাতারের বেড়া নেই। আবার নদীর পারে কাঁটাতার ফেলা থাকলেও তাতে নিরাপত্তা পুরোপুরি সুনিশ্চিত হয়নি। ওই এলাকায় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) টহল বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সীমান্ত রয়েছে কোচবিহার জেলায়। ৫৫০ কিলোমিটার। এরপর দক্ষিণ দিনাজপুর, ২৫০ কিলোমিটার। উত্তর দিনাজপুরে রয়েছে ২২৭ সীমান্ত। এই বিরাট সীমান্তের দুই দিনাজপুর এবং মালদহের অধীনে থাকা প্রায় ৭০০ কিলোমিটার এবং কোচবিহারের ৫৫০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

সীমান্ত এলাকায় কড়া নিরাপত্তা বিএসএফের।

ইতিমধ্যে ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত 'চিকেনস নেক' নামে পরিচিত 'শিলিগুড়ি করিডোর' রক্ষায় বাংলাদেশ সীমান্তের পাশে অসমের ধুবড়ি সংলগ্ন বামুনি, বিহারের কিশনগঞ্জ এবং উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া এলাকায় গড়ে ওঠা তিনটি সামরিক ঘাঁটিকে সতর্ক করা হয়েছে। চিকেনস নেক ঘিরে রয়েছে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ ও চিন। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে এলাকাটি অত্যন্ত সংবেদনশীল। হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকে এখানে সামরিক বাহিনীর তৎপরতা বেড়েছে। এই এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে ভারতীয় সেনার ত্রিশক্তি কর্পস। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ওই ইউনিটের তৎপরতা বেড়েছে। অবশ্য আগে থেকেই হাসিমারা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে মোতায়েন রাখা হয়েছে রাফাল যুদ্ধবিমান, বিভিন্ন মিগ ভ্যারিয়েন্ট ও ব্রাহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেখানেও বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয় নাগরিক ও কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানের উপর বড়সড় জঙ্গি হামলার ছক কষছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। সূত্র অনুযায়ী, বছর শেষের আগেই নাকি বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার দপ্তর, ভিসা দপ্তরে আত্মঘাতী হামলা ছক আইএসআইয়ের। এই ষড়যন্ত্রে সক্রিয়ভাবে একাধিক কট্টরপন্থী ইসলামি সংগঠন জড়িত বলেও গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জামাত-ই-ইসলামি, নিষিদ্ধ সংগঠন হিজব উত তাহরির, আনসার আল ইসলাম এবং তথাকথিত ‘স্ট্র্যান্ডেড পাকিস্তানি’ বা মোহাজির সম্প্রদায়ের একটি অংশ। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ১৭ ডিসেম্বর ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশন ঘেরাও কর্মসূচির পিছনে আইএসআই-র হাত রয়েছে। পরিকল্পনা ছিল কমিশন চত্বরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং ভারতীয় কূটনীতিকদের শারীরিকভাবে আক্রমণ করা। যদিও নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে বড়সড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জেনেছে, বাংলাদেশে ভারত বিরোধী কার্যক্রমের মূলে রয়েছে আইএসআই-র ছক। সম্প্রতি ‘মোহাজির রেজিমেন্ট’ নামে একটি নতুন জঙ্গি ইউনিট গঠনের তথ্য মিলেছে। যেখানে বাংলাদেশে থাকা পাকিস্তানি যুবকদের নিয়োগ করা হয়েছে। এই ইউনিটকে আত্মঘাতী হামলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিক খবর পেয়েছে গোয়েন্দারা। সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য হল হামলার নীলনকশা বাস্তবায়নের নেতৃত্ব দিতে পারে এক কুখ্যাত জিহাদি প্রকাশনার সম্পাদক। যিনি আগে থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় উগ্রপন্থী প্রচারের সঙ্গে যুক্ত। তার মাধ্যমে অনলাইন ও অফলাইন—দুই মাধ্যমেই উসকানি ছড়ানো হচ্ছে বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • নতুন করে উত্তপ্ত বাংলাদেশ।
  • অশান্তির আঁচ যাতে কোনওভাবে বাংলায় এসে না পড়ে সেজন্য সতর্ক সীমান্তরক্ষী বাহিনীও।
  • বিশেষ করে 'চিকেনস নেকে'র সুরক্ষায় কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না।
Advertisement