বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: শান্তিপুর বিষমদ কাণ্ডে নয়া মোড়৷ লাগাতার তল্লাশি অভিযান চালিয়ে অবশেষে গ্রেপ্তার করা হল বিষমদ কাণ্ডের কিংপিন গণেশ হালদারকে৷ অভিযোগ, নৃসিংহপুরের চৌধুরিপাড়ার মৃত চন্দন মাহাতো ওরফে গুলবরের ঠেকে চোলাই সরবহার করত ধৃত৷ গঙ্গার চরে গোপন ডেরায় চোলাই তৈরি করে গুলবরের ঠেকে পাঠাত গণেশ৷ তদন্তকারীদের ধারণা, ধৃত গণেশের তৈরি চোলাই পান করেই নৃসিংহপুরের ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ বিষমদ কাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে এই নিয়ে মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ৷
[স্বামীর বন্ধুর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে প্রতারণার শিকার গৃহবধূ]
ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। রাজ্য পুলিশও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। নদিয়ার শান্তিপুরের ওই ঘটনায় আবগারি দপ্তরের বেশ কয়েকজন আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের সৃজনী সভাকক্ষের পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। আবগারি দপ্তরকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন, বেআইনি কারবার রুখতে নিয়মিত নজরদারি করতে হবে, অভিযান চালাতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালাতে হবে। ৩৬৫ দিনই অভিযান চালাতে হবে।” শান্তিপুরের ঘটনায় পূর্ব বর্ধমান জেলার দিক থেকে বিষ মদ গিয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন জেলার আবগারি ও পুলিশ কর্তাদের।
[উপস্থিত বুদ্ধিতেই রক্ষা, প্রশাসনের সাহায্যে নিজের বিয়ে রুখল নাবালিকা]
দক্ষিণবঙ্গের আইজি নীরজকুমার সিংয়ের নেতৃত্বে মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআইজি বাস্তব বৈদ্য, নদিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার ইতিমধ্যেই মৃতদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন৷ গিয়েছিলেন ওই চোলাই মদের ঠেকের মালিক চন্দন মাহাতো ওরফে গুলবরের বাড়িতেও। এলাকার সব ঠেকে হানা দিয়ে মদের পাউচ, ড্রাম ও কিছু চোলাই মদ আটক করা হয়েছে৷ যদিও পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে বাসিন্দাদের৷ এলাকার মানুষের দাবি, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন এই চোলাই কারবারের রাশ টানলে এতগুলি মানুষ বলি হতেন না৷ তাঁদের দাবি, ধৃত গণেশ হালদার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এলাকায় বেআইনি চোলাই তৈরির কারবার চালাত৷ স্থানীয়রা প্রতিবাদ করায়, বছর-খানিক যাবত গঙ্গার চরে মদ তৈরি শুরু করে৷ সেখান থেকে এলাকায় সরবরাহ করা হত চোলাই৷ স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নেমে নৃসিংহপুরের চৌধুরিপাড়ার থেকেই বছর ৫০-এর গণেশ হালদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ ধৃতকে জেরা করে বাকিদের খোঁজও শুরু করেছে পুলিশ৷ পুলিশ কর্তাদের বক্তব্য, সব জায়গায় তল্লাশি চলছে। অপরাধীরা কেউ ছাড়া পাবে না।
[উলুবেড়িয়ায় চোলাই মদের কারবারীদের ত্রাস এই ‘বীরাঙ্গনা’ গৃহবধূ]
অন্যদিকে, কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত শান্তিপুরে ছিলেন৷ আজ শুক্রবার শান্তিপুর হাসপাতালে যান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ আজই ঘটনাস্থলে যাচ্ছে বিজেপির প্রতিনিধি দল৷ বিষমদ কাণ্ডের প্রতিবাদে এসইউসিআই-এর পক্ষ থেকে আজ গোটা নদিয়া জেলাজুড়ে চলছে ১২ ঘণ্টার বন্ধ৷
ছবি: সুজিত মণ্ডল৷
The post শান্তিপুর বিষমদ কাণ্ডে গ্রেপ্তার কিংপিন গণেশ হালদার appeared first on Sangbad Pratidin.
