সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ভরদুপুরে পুরুলিয়ার রেলশহর আদ্রায় শুটআউট! দুপুর তখন বারোটা। কাজের দিনে ব্যস্ত শহর। আচমকাই পরপর গুলির শব্দ শুনে হতভম্ব হয়ে যান পথচারীরা। দেখা যায়, প্রকাশ্য দিবালোকে এক বাইক আরোহীকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে কয়েকজন আততায়ী। বাইক আরোহী লুটিয়ে পড়লে গুলি ছুড়তে ছুড়তেই দ্রুত বাইকে চেপে আততায়ীরা এলাকা ছাড়ে। মৃতের নাম হামিদ আনসারি (৪২)। হামিদ কাশীপুরের প্রাক্তন ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি। এমন ভয়াবহ দৃশ্য দেখে আতঙ্কে যে যেদিকে পারে ছুটতে শুরু করে। শুক্রবার দুপুরে আদ্রা থেকে মিশিরডি যাওয়ার পথে গ্রামের রাস্তায় এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। আদ্রার পলাশকলা গ্রামে মৃতের বাড়ি। এদিন বাইকে চেপে হামিদ আদ্রা থেকে মিশিরডি গ্রামে যাওয়ার পথে এই ঘটনা ঘটে।
পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের যুব সভাপতি সুশান্ত মাহাতো বলেন, “হামিদ সক্রিয় তৃণমূল কর্মী ছিলেন। বিজেপিই আমাদের কর্মীকে হামলা চালিয়ে এভাবে খুন করেছে।” যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হামিদের মাথায় হেলমেট ছিল বলে প্রথমে তাঁর দেহ শনাক্ত করতে সমস্যা হচ্ছিল। পরে আদ্রা থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে হামিদকে শনাক্ত করে। মৃত যুবক পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে খুব খাটাখাটি করেছিলেন।
[খেলতে গিয়ে বোমা ফেটে জখম তিন বালক, এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য]
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাম আমলে পুরুলিয়ার এই রেলশহরে প্রায়শই গোলমাল লেগে থাকত। সন্ধে নামলেই গুলি-বোমাবাজি হত। মূলত রেলের ঠিকাদারির ঝামেলা নিয়েই অতীতে এই শহরে অনেক খুনের ঘটনা ঘটেছে। পালাবদলের পর রাজ্য সরকার আদ্রায় পৃথক থানা করেছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বর্তমানে সেখানে যথেষ্ট উন্নতিও হয়েছে। কিন্তু শুক্রবার দিনেদুপুরে এভাবে শুটআউটের ঘটনায় এলাকাজুড়ে নতুন করে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। জেলার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকায় পুলিশ পিকেট থাকছে।”
[দুষ্কৃতীর ছুরিকাঘাতে ভুটান সীমান্তে জখম বিহারের ৪ বাসিন্দা]
The post ভরদুপুরে পুরুলিয়ার আদ্রায় শুটআউট, নিহত যুব তৃণমূল নেতা appeared first on Sangbad Pratidin.
