দেবব্রত মণ্ডল, ডায়মন্ড হারবার: আবারও ওঝার কেরামতিতে প্রাণ হারালেন সাপে কামড়ানো এক যুবক। মৃতের নাম সিরাজুল গাজি (৪৫)। মৃতের বাড়ি গোসাবা (Gosaba) ব্লকের ৪ নম্বর আরামপুর গ্রামে।

স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক সপ্তাহ আগে সিরাজুল গাজি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সোদপুরের ঘোলা এলাকার এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সোমবার সেখানে সিরাজুলকে একটি চন্দ্রবোড়া সাপে কামড় দেয়। পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় চিকিৎসার জন্য। সেখানে চিকিৎসা ভাল হচ্ছে না ভেবে লিখিত দরখাস্ত জমা দিয়ে নিজেদের ইচ্ছায় রোগীকে বাড়িতে নিয়ে আসে তাঁর পরিবারের লোকজন। পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কথায় ওঝার কাছে নিয়ে যায় সিরাজুলকে। তিনদিন ধরে ওঝা তাঁর কেরামতি দেখায়, ঝাঁড়ফুঁক করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এরপরই ওঝা রোগীকে ছেড়ে পালিয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: ‘এখনই ভোট হলে ৫০ হাজারে হারবে গদ্দার’, নন্দীগ্রাম থেকে শুভেন্দুকে খোলা চ্যালেঞ্জ অভিষেকের]
অবস্থা বেগতিক বুঝে বৃহস্পতিবার সকালে গোসাবা থেকে সিরাজুলকে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় তাঁর পরিবারের লোকজন। সেখানে মিনিট দশেক চিকিৎসার পর মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনার খবর পেয়ে ক্যানিং থানার পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। অন্যদিকে মৃতের পরিবার শোকে কান্নায় ভেঙে পড়ে।
ঘটনা প্রসঙ্গে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সর্প বিশেষঞ্জ চিকিৎসক ডাঃ সমরেন্দ্র নাথ রায় বলেন, “প্রথমত রোগীকে আমরা চিকিৎসা করার সুযোগ পাইনি। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। সাগর দত্ত হাসপাতালে ভরতি করার পরও রোগীর পরিবার যে ভুল করে রোগীকে ওঝার কাছে নিয়ে গিয়েছেন তা ক্ষমার অযোগ্য। জোর করেই মেরে ফেললেন রোগীকে। আগামী দিনে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তারজন্য প্রশাসনকে নজর দেওয়া উচিত। পাশাপাশি ওঝা গুণীনদের ধরে আইনত ব্যবস্থা গ্রহন করলে তবেই শিক্ষা হবে। সাপের কামড়ে রোগীর মৃত্যু কমবে।”