বিক্রম রায়, কোচবিহার: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলা। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের গোসানিমারা এলাকায় নিশীথের কনভয় লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছোঁড়া হয়। অভিযোগ, রাজ্যের উদয়ন গুহর উসকানিতে পুলিশের সামনেই তৃণমূল কর্মীরা হামলা চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বাঁশ-লাঠি নিয়ে পালটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন বিজেপি কর্মীরাও। সবমিলিয়ে এদিন দুপুরে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়।
এদিন দুপুরে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে সিতাই যাচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। সেই সময় গোসানিমারি এলাকায় রাস্তার ধারে গ্রামবাসীরা দাঁড়িয়েছিলেন। অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গেই মিশে ছিলেন তৃণমূল কর্মীরাও। নিশীথের কনভয় যাওয়ার সময় আচমকাই হামলা হয় বলে দাবি। অভিযোগ, পুলিশের সামনেই হামলা হয়। পালটা প্রতিরোধ গড়ে বিজেপি কর্মীরাও। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এদিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: Gujarat Assembly Poll: গুজরাট নির্বাচনের সূচি ঘোষণা নির্বাচন কমিশনের, গণনা হিমাচলের সঙ্গেই]
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, নিশীথ ঘোষের দাড়ি-গোঁফ উপরে নিতে হবে। বিজেপির অভিযোগ, উদয়নের উসকানিমূলক মন্তব্যের জেরেই এদিনের হামলা। যদিও সে কথা মানতে নারাজ রাজ্যের মন্ত্রী। ঘটনার প্রেক্ষিতে উদয়নের প্রতিক্রিয়া, “কোচবিহারে যত অশান্তি, তার বীজবপণ করেছে নিশীথ। সেই গাছে ফল হয়েছে। তার ফল ভুগতে হচ্ছে ওঁকেই। এটা হুমকির পরিণতি নাকি অন্য কিছুর তা জানি না।”
হামলা প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক বলছেন, “এটা তো তৃণমূলের সংস্কৃতি। তবে কেউ যদি মনে করে হামলা করবে, তাহলে বলব আমরাও হাতে চুড়ি পরে বসে নেই। কেউ এক গালে চড় মারলে অন্য গাল এগিয়ে দেব না। আমাদের মারলে তাদের উপর পুষ্পবর্ষণ করব না। হামলা হলে তার প্রতিফলন হবে।” যদিও ঘটনার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বলছেন, “এই ধরনের ঘটনা অশান্তি যে বা যারাই করে থাকুন সমর্থন যোগ্য নয়। তবে তৃণমূলের কেউ জড়িত নয়। দুটো সম্ভাবনা, তৃণমুলকে দোষ দিয়ে নাটক তৈরি করেছেন কিনা পুলিশ তদন্ত প্রয়োজন। দুই, নেতিবাচক কোনও অশুভ শক্তি খবরের কেন্দ্রে আসার জন্য এটা করেছে কিনা। তৃণমূলের কাজ নেই ওকে খবরে আনবে। একটা বিবৃতির লড়াই চলছিল, তার সঙ্গে বিজেপি এটাকে যোগ করে তৃণমূলের দিকে আঙুল তোলার চেষ্টা হতে পারে। সেই সুযোগ ওরা নিল কিনা সেই তদন্ত হতে পারে।”
[আরও পড়ুন: চেন্নাইয়ে রাজ্যপাল লা গণেশনের পারিবারিক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী, কথা রজনীকান্তের সঙ্গে]
পঞায়েত ভোটের আগে উত্তপ্ত কোচবিহার। এদিনের হামলা প্রসঙ্গে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার সানী রাজ জানিয়েছেন, “সাংসদের কনভয়কে কালো পতাকা দেখান হচ্ছিল। সেই সময় সাংসদের কনভয়ের সঙ্গে থাকা সঙ্গীরা বাইক থেকে নেমে বিক্ষোভকারীদের কালো পতাকা কেড়ে নেয়। তাদের ঘুষি মারে। এই ঘটনায় দুজন জখম হয়েছেন- জয়দীপ মণ্ডল ও প্রতাপ বর্মন। বিক্ষোভকারীদের ৩টি বাইক নষ্ট হয়েছে।”