ধীমান রায়, কাটোয়া: শনিবারের রেলযাত্রা যে এমন মধুর চমক নিয়ে হাজির হবে, তা ভাবতেই পারেননি যাত্রীরা। ট্রেনে টিকিট কেটে উঠলেই হাতের মুঠোয় মিলছে নলেন গুড়ের টাটকা রসগোল্লা আর পান্তুয়া! শুনতেই অবাক লাগলেও এ দিন পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামের পাঁচুন্দি স্টেশনে এমনই দৃশ্য দেখা গেল। একাধিক ব্যক্তি হাতে মিষ্টির পাত্র নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন যাত্রীদের দিকে। একটাই প্রশ্ন—‘টিকিট কেটে উঠেছেন?’
যাঁদের উত্তরে মিলেছে ‘হ্যাঁ’, তাঁদেরই মিষ্টিমুখ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এই উদ্যোগ রেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নয়। এই অভিনব আয়োজন করেছে কাটোয়া-আহমদপুর জ্ঞানদাস রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন। টিকিট কেটে ট্রেনে যাত্রা করতে মানুষকে সচেতন ও উৎসাহিত করতেই তাঁদের এই উদ্যোগ। এদিন দেখা যায় স্টেশনজুড়ে ছিল ‘টিকিট কাটুন, ট্রেনে চাপুন’ লেখা পোস্টার। সংগঠনের সদস্যদের বক্তব্য, সৎ ও সচেতন যাত্রীদের ধন্যবাদ জানাতেই মিষ্টিমুখ করানোর ব্যবস্থা। আর যাঁরা বিনা টিকিটে ভ্রমণ করছিলেন, তাঁদের হাতজোড় করে অনুরোধ করা হয়—এমন অভ্যাস থেকে বিরত থাকার জন্য।
রেলযাত্রী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রী ঘোষ জানান, কাটোয়া-আহমদপুর রুটে ট্রেন সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে রেল কর্তৃপক্ষকে। তাঁর কথায়, “যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে। তাই ট্রেন বাড়ানো জরুরি। তবে রেল যাতে তা বিবেচনা করে, সে জন্যই সব যাত্রীর টিকিট কেটে ট্রেনে ওঠা অত্যন্ত প্রয়োজন। যাত্রীদের সে দিকেই উৎসাহিত করতে এ দিনের উদ্যোগ।” যাত্রীদের অনেকেই জানান, এমন সচেতনতামূলক উদ্যোগ শুধু যে মন ভাল করে দেয় তা নয়, ট্রেনে টিকিট চেকিংয়ের আচমকা চাপও কমাতে পারে। তাঁদের আশা, এ ধরনের প্রচার বাড়লে রেলের আয় যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনই যাত্রীদের পরিষেবাও আরও উন্নত হবে।
