নিজস্ব সংবাদদাতা, ফরাক্কা: রেডিমেড পোশাকের ধাক্কায় দর্জির দোকান ফাঁকা। মহালয়ার পরেও প্রায় অলস দুপুর কাটাতে হচ্ছে টেলার মাস্টারদের। অথচ বছর কয়েক আগে পর্যন্ত চিত্রটা ছিল ভিন্ন। মহালয়ার অনেক আগেই দর্জির দোকানে ঝুলিয়ে দেওয়া হত অর্ডার ক্লোজ বোর্ড। বছর দুয়েক আগেও দর্জির দোকানে পরিচিত প্রতিবেশিদের আকুতি মিনতি করতে দেখা যেত। সেই চেনা ছবি আজ উধাও। বাজারজুড়ে রেডিমেড পোশোকের রমরমায় শোচনীয় অবস্থা পাড়ার দোকানের টেলার মাস্টারদের।
[অপদেবতার প্রকোপ রুখতে বাবার ১০ আঙুল কাটা হয়েছে, আদালতে কবুল ছেলের]
পুজো মানে উৎসব। বাঙালির শ্রেষ্ঠ পার্বণ। পুজো মানে নতুন জামা কাপড়। শার্ট, প্যান্ট তৈরি। বাজার ঘুরে পছন্দের জামা ও প্যান্টের কাপড় কিনে আনা। তারপর দর্জির দোকানে হাজির। নানা রকমের শার্ট, প্যান্ট বানাতে দর্জিকে কত রকম ফিরিস্তি দেওয়া হত। তারপর দর্জির দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ে দোকানে হাজির হয়ে ট্রায়াল দেওয়ার পালা চলত। ট্রায়ালে পোশাক পছন্দের হলে তবে টেলার মাস্টার দিতেন ফিনিশিং। পুজোর সময় বা অন্য সময় জামা, প্যান্ট দর্জির কাছে গিয়ে বানানো ছিল দীর্ঘ প্রতীক্ষার বিষয়। সময় বাঁচাতে হাল ফ্যাশানের জামাকাপড় এক লহমায় পছন্দ করে নিতে এখন ভরসা রেডিমেড দোকান বা মল। আধুনিকতার হাতছানিতে খানিকটা পিছিয়ে গিয়েছেন পাড়ার সাবেকি দর্জিরা। এর ফলে পুজোর বাজারে কপালে হাত দর্জিদের।
এপ্রসঙ্গে ফরাক্কার টেলার মাস্টার মহারাজা দাস, আবদুল মান্নান, সামশেরগঞ্জের সন্টু শেখ, ছকড়ি মণ্ডল, সুতির হুমায়ন কবীর, সাগরদিঘির অশোক মণ্ডল ও রঘুনাথগঞ্জের বাবলু শেখরা জানান, শুধু ইদ আর দুর্গা পুজো নয়। সারা বছর তাঁদের কদর ছিল। ইদের আগের দিন সারারাত জেগে কাজ করতে হত। দুর্গাপুজোর দশমী পর্যন্ত পোশাক ডেলিভারি করতে হত তাঁদের। এর জন্য কারিগরদের বাড়তি মজুরি দিতে হত। এখন সব অতীত। রেডিমেড পোশাকের রমরমাতে তাঁরা আজ বিপন্ন। নতুন প্রজন্ম এই পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
[আম্বানির সঙ্গে চুক্তিতে বাধ্য হয়েছিল দাসাল্ট, রাফালে ইস্যুতে চাঞ্চল্যকর মোড়]
The post রেডিমেড পোশাকের ধাক্কা, পুজোর মরশুমে মন্দায় জেরবার দর্জিরা appeared first on Sangbad Pratidin.
