shono
Advertisement

মল্লিকার পরিবারের লড়াই এখন অঙ্গদানের প্রচারের মুখ, উদ্বুদ্ধ করতে আগ্রহী স্বাস্থ্যমহল

আরও মানুষ এগিয়ে আসুক, চাইছে মল্লিকার পরিবার৷ The post মল্লিকার পরিবারের লড়াই এখন অঙ্গদানের প্রচারের মুখ, উদ্বুদ্ধ করতে আগ্রহী স্বাস্থ্যমহল appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 07:46 PM Aug 19, 2018Updated: 08:16 PM Aug 19, 2018

সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: ১৫ বছরেই নিভে গিয়েছে মল্লিকা মজুমদারের জীবনপ্রদীপ। বুক চাপা কান্না আর দীর্ঘশ্বাসকে সঙ্গী করেও মানবিকতার পাঠ হারিয়ে ফেলেননি প্রান্তিক জীবনে অভ্যস্ত মল্লিকার একচিলতে পরিবার। ছোট্ট মল্লিকার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে জীবন ফিরে পেয়েছেন দেশের তিন প্রান্তের তিন জন। ইতিমধ্যেই মিডিয়ার দৌলতে তা জাতীয় স্তরে পৌঁছে গিয়েছে৷ বাহবা, প্রশংসা থেকে গাড়িচালক বাবা ও সামান্য গৃহবধূ মায়ের মানসিকতা তারিফ কুড়িয়েছে। এর পরেই থেমে যেতে নারাজ মা-বাবা ঠাকুরমারা। তারা একবার যখন পথ খুঁজে পেয়েছেন, তখন আরও একটি পদক্ষেপ এগোতে দ্বিধা করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মল্লিকার বাবা মানিকবাবু, মা সুলতাদেবী। আর তাই জীবনোত্তর মল্লিকার নামকে কাজে লাগিয়ে দেহদান ও অঙ্গদানের প্রচার চালাতে চান তাঁরা।

Advertisement

[রাত বাড়তেই ধুপধাপ শব্দ-মহিলার কান্না, ভূতুড়ে হস্টেল ঘিরে চাঞ্চল্য ডুয়ার্সে]

ইতিমধ্যেই রাজনীতির ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে মল্লিকার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব থেকে শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য কিংবা শিলিগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্য স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির সদস্য রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য৷ পরিবারের এই পদক্ষেপকে চিরস্থায়ী করতে তাঁদের সঙ্গে নিয়ে ভবিষ্যতে উত্তরবঙ্গবাসীর কাছে বা অঙ্গদানকে আরও জনপ্রিয় করে তোলা যায় কি না তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কাজ করা সংস্থাগুলি। সমাজকর্মী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় এমনই একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। তিনি বলেন, ‘‘মল্লিকা ও তার পরিবারের এই পদক্ষেপ একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এর আগে এমন নজির নেই। উত্তরবঙ্গে দু’একটি থাকলেও তা এতটাই বিরল যে মানুষের মধ্যে তার কোনও প্রভাব নেই।” মল্লিকার এই ঘটনা এতটাই মানবিক, যা মানসিকভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে জেলা চাইল্ড লাইনের দায়িত্বপ্রাপ্ত চাইল্ড ইন নিড ইন্সটিটিউট উত্তরবঙ্গের সমন্বায়ক শেখর সাহাকেও। তিনি বলেন, ‘‘সমস্তটাই সংবাদমাধ্যমে আগাগোড়া দেখেছি ও পড়েছি। কি বলে তাঁদের ধন্যবাদ জানাবো, তা জানা নেই। এতটা মহানুভব নিজেরাও হতে পারব কিনা তাও জানি না। ফলে মল্লিকার পরিবারের এই আত্মত্যাগ ও কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসার মানসিকতাকে তারিফ না করে পারছি না। ভবিষ্যতে বিভিন্ন সময়ে অঙ্গদানে উদ্বুদ্ধ করতে মল্লিকার পরিবারকে পাশে চাইবো।” ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছেন রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব, যাতে এই ঘটনাকে প্রচারের মুখ করে তোলা যায়। এমন তো রোজ ঘটে না! এখনও মানুষের মধ্যে কিছুটা সংস্কার, কিছুটা অজ্ঞতা কাজ করে যা দূর করতে এর চেয়ে ভাল উদাহরণ আর হতে পারে না।”

[নদীর চরে ফুটবল খেলতে গিয়ে বজ্রাঘাতে মৃত ৩]

আর মল্লিকার পরিবার! তাঁরা এ নিয়ে কী বলছেন? বাবা মানিকবাবুর মন্তব্য, “সংস্কার যা ছিল তা তো ভেঙেই ফেলেছি। এখন আমার মেয়ের শরীরের বিভিন্ন অংশ বেঁচে রয়েছে অন্যের শরীরে এটুকু সান্ত্বনা নিয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দেব। আর এ নিয়ে যদি কোথাও কিছু বলতে হয় বা প্রচারে যেতে হয়, কেউ চাইলে নিশ্চয়ই পাশে থাকব।” পাশে বসে মা সুলতাদেবীর মৌনতা স্বামীর বক্তব্যকেই সমর্থন জানাচ্ছিল।

[রেস্তরাঁর আড়ালে আসানসোলে অবৈধ হুক্কাবার, তালা দিল পুলিশ]

স্কুলে খেলতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিল মেয়েটি। তারপর মাথাব্যথা থেকে কানে পুঁজ। না কমায় গত ৩১ জুলাই থেকে কানের সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি ছিল এসএসকেএমে৷ ১৪ আগস্ট তার ব্রেন ডেথ হয়। এরপর চিকিৎসকরা অঙ্গদানের বিষয়টি বলে বাবা ও ঠাকুমাকে। তাঁরাই ছিলেন শেষ সময়ের সঙ্গী। প্রথমে আদরের ছোট্ট মেয়েটির দেহ কাটাকাটি করা হবে মেনে নিতে পারেননি। পরে বুঝতে পারেন, মেয়ে আর ফিরবে না। এরপর ৭২ ঘণ্টা নিজের মনের সঙ্গে লড়াই করে রাজি হন মানিকবাবু।

The post মল্লিকার পরিবারের লড়াই এখন অঙ্গদানের প্রচারের মুখ, উদ্বুদ্ধ করতে আগ্রহী স্বাস্থ্যমহল appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement