shono
Advertisement
C V Ananda Bose

আউশগ্রামের আদিবাসী গ্রামে রাজ্যপাল, আলু পোস্ত-পিঠের স্বাদে আপ্লুত বোস

শুখাডাঙ্গা গ্রামের মানুষদের অভাব অভিযোগের কথাও শোনেন রাজ্যপাল।
Published By: Sayani SenPosted: 11:16 PM Jan 15, 2025Updated: 11:19 PM Jan 15, 2025

ধীমান রায়, কাটোয়া: আদিবাসীদের বাদনা পরবের মধ্যেই পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামে আদিবাসী অধ্যুষিত শুখাডাঙ্গা গ্রামে যান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। গ্রামের একটি বাড়িতে পিঠেপুলি খান। চেখে দেখেন আলু পোস্ত। তারিফ করেন আদিবাসীদের হাতে তৈরি দুলপিঠের।

Advertisement

আদিবাসী বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ রাজ্যপালের। ছবি: জয়ন্ত দাস

আউশগ্রামের শুখাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দারা এক রাশ অভাব অভিযোগের কথা জানালেন রাজ্যপালের কাছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের অভিযোগ এই গ্রাম থেকে বিরোধীদল সিপিএম জয়লাভ করায় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত থেকে কোনও কাজ করা হয়নি। রাস্তাঘাট থেকে পানীয়জলের সমস্যার পাশাপাশি স্থানীয়দের বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে সরকারি আবাস যোজনার অনুদান থেকেও। রাজ্যপাল গ্রামবাসীদের সমস্ত অভিযোগের কথা শুনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা রাজ্যপালের। ছবি: জয়ন্ত দাস

আদিবাসী সমাজের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। মূলত আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের হাতে তৈরি বিভিন্ন শিল্প সামগ্রী বিপননের সুযোগ করে দেয় ওই সংস্থাটি। ওই সংস্থার আমন্ত্রণেই বুধবার আউশগ্রামের শুখাডাঙ্গা গ্রামে যান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। গ্রামের মোড়ে অনুষ্ঠানমঞ্চ তৈরি করা হয়।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অনুষ্ঠান মঞ্চে রাজ্যপাল। ছবি: জয়ন্ত দাস

এরপর দুপুরে তিনি শুখাডাঙ্গা গ্রামে গ্রামবাসী নারান সোরেনের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন সারেন। নারান সোরেনের স্ত্রী সুমিতা সোরেন ভাত, ডাল, শাক,বেগুনভাজা,আলুপোস্ত-সহ পিঠে তৈরি করেছিলেন রাজ্যপালের জন্য। ছিল একাধিক ফল। তবে রাজ্যপাল কিছু ফল ও পিঠে খান। চেখে দেখেন আলুপোস্ত। প্রথম আলুপোস্ত খেয়ে জানতে চান এটি কি?

এরপর তিনি শুখাডাঙ্গা গ্রামের রাস্তায় হেঁটে ঘোরেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। রাজ্যপালের কাছে অভাব অভিযোগের কথা তুলে ধরলেন শুখাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দারা। স্থানীয় মহিলারা জানান, বছরের পর বছর ধরে তাদের রাস্তাঘাট বেহাল,পানীয়জলের পাইপলাইন এলেও এখনও জল আসেনি। সরকারি আবাস যোজনায় অনুদান থেকেও তাদের বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে বলে স্থানীয়রা রাজ্যপালের কাছে নালিশ করেন। তাদের কাছে সমস্ত কথা শুনে রাজ্যপাল তাদের অভিযোগের কথা লিখিতভাবে জমা দেওয়ার জন্য বলেন। পাশাপাশি আশ্বাস দেন সমস্ত অভাব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।

আউশগ্রামের আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামে রাজ্যপাল। ছবি: জয়ন্ত দাস

এদিন রাজ্যপাল শুখাডাঙ্গা গ্রামে ঘোরার সময় রাজভবনের পক্ষ থেকে স্থানীয় বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীর হাতে তাঁর লেখা বই উপহার দেন। দেন মিষ্টি। আগামী ২৬ জানুয়ারি শুখাডাঙ্গা গ্রামের কয়েকজনকে রাজভবনে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। আমন্ত্রিতদের মধ্যে রয়েছেন অনুষ্ঠানের আয়োজক কয়েকজন আদিবাসী যুবক এবং নারান সোরেনকে সপরিবারে কলকাতায় যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাজ্যপাল।

স্থানীয়দের হাতে উপহার তুলে দেন রাজ্যপাল। ছবি: জয়ন্ত দাস

২০০১ সালে এই শুখাডাঙ্গা গ্রামকেই আদর্শ গ্রাম হিসাবে সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে তখন একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল।
তৃণমূল পরিচালিত আউশগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট সদস্য রয়েছেন ২০ জন। শুখাডাঙ্গার বাসিন্দা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মদন হাঁসদা বলেন, "আউশগ্রাম পঞ্চায়েতের ২০ জনের মধ্যে আমরা তিনজন বিরোধীদল সিপিএমের সসদ্য রয়েছি। কিন্তু তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের কোনও বোর্ড মিটিংয়ে আমাদের ডাকা হয় না। আমাদের গ্রামে বিরোধীদল জিতেছে বলে গ্রামের উন্নয়ন হয়নি। আমি দীর্ঘদিন ধরেই পঞ্চায়েত থেকে ব্লক প্রশাসনের কাছে বলে এসেছি। কিন্তু কোনও গুরুত্ব পাইনি। আমাদের গ্রাম উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত বলেই মাননীয় রাজ্যপালের কাছে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন।" পালটা আউশগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন," উন্নয়ন নিয়ে আমরা সবাইকে সমান চোখে দেখি। ওই অভিযোগ সঠিক নয়।"

আদিবাসী গ্রামে গিয়ে আপ্লুত রাজ্যপাল। ছবি: জয়ন্ত দাস

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • আউশগ্রামের আদিবাসী গ্রামে রাজ্যপাল।
  • আলু পোস্ত-পিঠের স্বাদে আপ্লুত রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।
  • শুখাডাঙ্গা গ্রামের মানুষদের অভাব অভিযোগের কথাও শোনেন রাজ্যপাল।
Advertisement