ধীমান রায়, কাটোয়া: টানা প্রায় দু’মাসের লড়াইয়ের সমাপ্তি। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় জখম পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু। মৃত বছর পঁয়ত্রিশের শেখ খোকন, পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার ভাটাকুল গ্রামের বাসিন্দা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোরে ওড়িশার কটক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেখ খোকনের মৃত্যু হয়েছে। এযাবৎ সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর মৃতদেহ নিয়ে আসা হচ্ছে ভাটাকুল গ্রামে তাঁদের বাড়িতে।
গত ২ জুন ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শালিমার চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ওই ট্রেনেই কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন পেশায় রাজমিস্ত্রি শেখ খোকন। সংসারের জোয়াল ছিল তার কাঁধেই। ছিল না বসবাসের উপযোগী বাড়ি। একটি বাড়ি তৈরির স্বপ্ন নিয়ে কেরলে রুজিরোজগারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন শেখ খোকন। তারপর সেই ভয়ংকর দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনিও। মাথায় ও কোমরে গুরুতর চোট লাগে। জখম অবস্থায় ওড়িশার কটক হাসপাতালে তাঁকে ভরতি করা হয়েছিল। সেখানেই টানা চিকিৎসা চলছিল।
[আরও পড়ুন: উধাও দাঁত, বক্সায় হাতির কাটা মাথা উদ্ধারের নেপথ্যে চোরাশিকারিদের দাপট?]
শুক্রবার ভোরে তাঁর মৃত্যুর খবর আসে গ্রামে। আর এই খবর ছড়াতেই এলাকায় শোকের ছায়া। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী ও দুই নাবালক সন্তান। একচিলতে খড়ের চাল মাথা গোঁজার ঠাঁই। কোনওরকমে দিন চলত। পেটের তাগিদেই পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিতে হয়েছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার পর থেকে তাঁর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। চারদিন পর তাঁর পরিবার খোঁজ পান কটক হাসপাতালে ভরতি আছেন খোকন। পরিবারের লোকজন তখনই ওড়িশায় রওনা দেন।
এদিন খোকন শেখের মৃত্যুর খবর আসার পর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী। মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে ভাঁটাকুল গ্রামে দেখা করতে যান যুব তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক শান্তনু কোঁয়ার, বলগোনা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি প্রণব পাঁজা। শান্তনু কোঁয়ার বলেন, “বাড়ির লোকজন আশায় ছিলেন খোকন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু তা হল না। এটা মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা ওর পরিবারের পাশে আছি।”
