সৌরভ মাঝি, বর্ধমান: ফের আদিবাসী মহিলাকে ডাইনি অপবাদ দিল গ্রামের মোড়লরা। শুধু অপবাদ দেওয়াই নয়, ডাইনি সন্দেহে তাঁকে ব্যাপক মারধর করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই মহিলা।
ঘটনা পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের উক্তার পিচকুড়ির। টিমলি কিস্কু (৪০) নামে ওই মহিলা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যদিও পুলিশের দাবি, ডাইনি সন্দেহে কাউকে মারধর করা হয়েছে তেমন কোনও খবর নেই। স্থানীয় সূত্রে তারা জানতে পেরেছে একটি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক মহিলাকে মারধর করা হয়েছে। টিমলির দিদি শান্তি সোরেন, স্বামী গুমড়ো কিস্কুরা সোমবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন। তাঁরা জানান, কিছুদিন আগে গ্রামের এক যুবকের জ্বর হয়েছিল। তার জ্বর সারছিল না। তখন গ্রামের মোড়ল টিমলিকে ডাইনি বলে ঘোষণা করে বলে দাবি করেছেন শান্তি। শনিবার রাতে টিমলির বাড়িতে টাকা চুরি যায়। রবিবার তিনি গ্রামের মোড়লকে চুরির নালিশ জানাতে যান। শান্তি এদিন দাবি করেন, “মোড়ল সেখানে টিমলিকে ডাইনি আখ্যা দেয়। সঙ্গে বলে, “তোর বাড়িতে টাকা তো চুরি হবেই। শুধু চুরি নয়, তোকে মারাও হবে।”
[ফিরল নির্ভয়া স্মৃতি, ধর্ষণের পর আদিবাসী তরুণীর উপর নারকীয় অত্যাচার]
অভিযোগ, এরপরই মোড়ল ও তার কয়েকজন সাঙ্গপাঙ্গ টিমলির উপর হামলা করে। তাঁকে ব্যাপক মারধর করা হয়। গুরুতর জখম হন টিমলি। তাঁকে প্রথমে স্থানীয় বননবগ্রাম স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ডাইনি সন্দেহে মারধর করা হয়েছে বলে টিমলির পরিবারের লোকজন দাবি করলেও পুলিশ তা মানতে নারাজ। তবে এই প্রথম নয়, বছর দু’য়েক আগেও আউশগ্রাম থানা এলাকাতেই এক মহিলাকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে তাঁকে ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে ঘরছাড়া করা হয়েছিল। ওই মহিলা স্থানীয় পঞ্চায়েত ও পুলিশের কাছে গেলেও সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ। শেষপর্যন্ত রাজ্য মহিলা কমিশনের তৎকালীন চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায় ছুটে এসেছিলেন আউশগ্রামে। গুসকরা বিডিও কার্যালয়ে সচেতনতা শিবির করেন। সেখানে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্তাদের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছিলেন তিনি।
[বিজেপির প্রাসাদোপম পার্টি অফিস তৈরিতে কত খরচ? টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন মমতার]
ছবি: মুকলেসুর রহমান
The post পূর্ব বর্ধমানে ডাইনি সন্দেহে বেধড়ক মার মহিলাকে appeared first on Sangbad Pratidin.
