shono
Advertisement

উদ্ধারে ব্যর্থ হল NDRF, ৭০০ ফুট গভীর খাদানেই ‘হারিয়ে’গেলেন রানিপুরের সুস্মিতা

মাস দুয়েক বাদেই বিয়ে ছিল বছর একুশের তরুণীর। The post উদ্ধারে ব্যর্থ হল NDRF, ৭০০ ফুট গভীর খাদানেই ‘হারিয়ে’ গেলেন রানিপুরের সুস্মিতা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:53 PM Jan 07, 2020Updated: 09:53 PM Jan 07, 2020

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ৭০০ ফুট গভীর খাদানের অতলেই কি হারিয়ে গেলেন সুস্মিতা? টানা চারদিন ধরে উদ্ধারকাজ চলার পরেও পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া থানার রানিপুরের পরিত্যক্ত কয়লাখনি থেকে তাঁকে বের করা গেল না। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার সকালে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দলও ফিরে যাওয়ায় এই কোলিয়ারির বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এখন এই কথাই ভেসে আসছে। ফলে হতাশ, মনমরা, শোকে মূহ্যমান সমগ্র রানিপুর। এমনকি খনি অঞ্চল নিতুড়িয়াও।

Advertisement

কারণ, গত শুক্র থেকে সোমবার এই চার দিন দিনভর ওই পরিত্যক্ত কয়লা খাদানের দিকেই তাকিয়ে ছিল রানিপুর। এমনকি আলো জ্বেলে রাতেও সুস্মিতার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছিল। কিন্তু তারপরেও ‘জীবিত’ বা ‘মৃত’ সুস্মিতাকে উদ্ধার করতে পারল না জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলার মত প্রশিক্ষিত দলও। ফলে প্রশাসনের খাতায় ‘নিখোঁজ’ হয়েই রইল সুস্মিতা গোপ। বয়স একুশ। সাকিন নিতুড়িয়া ব্লকের শালতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের রানিপুর। রঘুনাথপুর মহকুমা শাসক আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর বলেন, “এখন আর অপেক্ষা করা ছাড়া কিছু নেই। আমরা সবরকম চেষ্টা করেছিলাম। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলার মতো দলও এসেছিল। কিন্তু পারল না।” ফলে ৭০০ ফুট গভীর খাদানের কাছে যেন হার মানতেই হল ওই দল-সহ প্রশাসনকেও।

তাই রানিপুর জুড়ে এখন কান্নার রোল। স্বজন হারানোর হাহাকার কালো হীরের দেশে। রানিপুরের বাঁকে বাঁকে একটাই কথা সুস্মিতা কি ওই খাদানের অতলেই হারিয়ে গেল? কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তর নেই এই বিস্তীর্ণ খনি এলাকায়। মঙ্গলবার সকালেই যখন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দল জানিয়ে দেয় তাদের ফিরে যেতে হবে। তখন যেন বাকরুদ্ধ টানা চারদিন এই খাদানের পাশে বসে দিন-রাত কাটানো উদ্ধারকাজে তদারকি করা নিতুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শান্তিভূষন প্রসাদ যাদব। মর্মান্তিক এই ঘটনায় মনমরা হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর কথায়, “অনেক চেষ্টা করেছিলাম। পারলাম না। এখন শুধুই ওই খাদানের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা।”

আসলে এই সহ-সভাপতির অনুরোধেই সোমবার রাতে দু’দুটি ক্যামেরা নামানো হয়েছিল এই সাতশো ফুট পরিত্যক্ত কোলিয়ারিতে। একটি ক্যামেরা পঞ্চাশ ফুট নিচে নামতেই বিকল। আরেকটি ৬৫ ফুট নামার পরেই অকেজো হয়ে যায়। আটের দশকে বন্ধ হওয়া ইসিএলের কয়লাখনি এখন যেন রহস্যে মোড়া! যেমন জল জমে রয়েছে। তেমনই এই ধরনের খনিতে থাকে মিথেন গ্যাস। যা প্রাণঘাতী। সেই সঙ্গে বিষাক্ত পোকামাকড় তো রয়েইছে। তাই প্রায় চার দশক আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই পরিত্যক্ত খাদান সম্বন্ধে কোন তথ্যই দিতে পারছে না ইসিএল।

গত শুক্রবার সকাল ন’টা নাগাদ এই খাদানে ঝাঁপ দিয়েছিলেন রানিপুরের তরুণী সুস্মিতা গোপ। মাস দুয়েক পরে তাঁর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল এক সিআরপিএফ জওয়ানের সঙ্গে। কিন্তু বিয়ের আগেই কেন এভাবে পরিত্যক্ত কয়লা খাদানে ঝাঁপ দিলেন সেটাও যেন অতলে হারিয়ে যাওয়ার মতোই রহস্যে মোড়া!

ছবি: সুনীতা সিং

The post উদ্ধারে ব্যর্থ হল NDRF, ৭০০ ফুট গভীর খাদানেই ‘হারিয়ে’ গেলেন রানিপুরের সুস্মিতা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement