সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: কথা ছিল, ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে হাতে হাত ধরে বেরিয়ে পড়বেন দু’জনে। হেঁটে যাবেন বহু দূর। অনেকদিন ধরে স্বপ্ন দেখেছিলেন এই বিশেষ দিনটি একসঙ্গে কাটানোর। কিন্তু প্রেমিকার এক ফোনেই স্বপ্ন চুরমার। প্রেমিকার অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে, এই খবর একেবারেই মেনে নিতে পারেননি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার যুবক দীপঙ্কর দলুই। ভালবাসার দিনে নিজের বাড়িতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। শুক্রবার ভোরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় ২২ বছরের যুবকের।
বাড়িতে চলছিল বিয়ের প্রস্তুতি, কাশ্মীর থেকে খবর এল শহিদ নদিয়ার সুদীপ
কয়েক মাস আগে প্রতিবেশী মেয়েটির সঙ্গে সম্পর্কে তৈরি হয় মহেশতলার চট্টা কালিকাপুরের দীপঙ্কর দোলুইয়ের। একে অন্যকে জানতে, বুঝতে শুরু করেন তাঁরা। এবার ছিল প্রথম ভ্যালেন্টাইন্স ডে। তাই দু’জনে মিলে পরিকল্পনা করেছিলেন, বিকেলে একসঙ্গে ঘুরতে যাবেন কোথাও। সেইমতো কারখানায় কাজের পর্ব দ্রুত মিটিয়ে সময়মতো নির্দিষ্ট জায়গায় প্রেমিকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন দীপঙ্কর। দীর্ঘক্ষণ পর এল প্রেমিকার ফোন। আর তাতেই সব শেষ। বন্ধুরা জানিয়েছেন, বিকেলে ফোন করে মেয়েটি দীপঙ্করকে জানান যে, তাঁর অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়েছে। তাই গুরুজনেরা বাড়ির বাইরে আর যেতে দেবেন না। ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র বিকেল, সন্ধেটা আর একসঙ্গে কাটানো হবে না তাঁদের। এটুকু বলে মেয়েটি ফোন রেখে দেয়। হতভম্ব দীপঙ্করের এসব কথা বুঝতেই বেশ কিছুটা সময় চলে যায়। হঠাৎ প্রেমিকা এমন কেন বলছে, তারই উত্তর খুঁজতে থাকেন বছর বাইশের যুবক।
কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক খুনে গ্রেপ্তার আরও ২, এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত
এরপর দীপঙ্কর ফোন করেন তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে। গোটা বিষয়টি বিস্তারিতভাবে জানান তাঁরা। তারপর বাড়ি ফিরে যান। রাতে অনেকক্ষণ একা ঘরে দরজা বন্ধ করে ছিলেন দীপঙ্কর। সন্দেহ হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ডাকতে যান। ঘরের দরজা খুলে দেখা যায়, বিষ খেয়েছেন বাড়ির ছেলেটি। অচৈতন্য হয়ে পড়ে আছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় এক বেসরকারি হাসপাতালে। শুক্রবার ভোরে সেখানেই মৃত্যু হয় দীপঙ্কর দলুইয়ের। তাঁর দাদা গৌতম দলুইয়ের অভিযোগ, প্রেমিকা দীপঙ্করের সঙ্গে প্রতারণা করে অন্যত্র বিয়েতে মত দিয়েছে। তা মেনে নিতে না পেরেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন তাঁর ভাই। মহেশতলা থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে প্রেমদিবসেই এমন মর্মান্তিক একটা ঘটনায় শোকস্তব্ধ এলাকাবাসী।
