স্টাফ রিপোর্টার: তৃণমূল স্তর থেকে ফুটবলার তুলে আনার লক্ষ্যে নতুন পদক্ষেপ ভবানীপুর ক্লাবের (Bhawanipore Club)। এজন্য লা লিগা অ্যাকাডেমি ফুটবল স্কুলের (La Liga Academy Football School) সঙ্গে গাটছাড়া বাঁধল ময়দানের শতাব্দীপ্রাচীন এই ক্লাব। লা লিগার ‘ফুটবল ডেভলপমেন্ট প্ল্যান’ অনুসরণ করে ফুটবলার তৈরি করা হবে ‘ভবানীপুর এফসি প্রো-ইন্ডিয়া সেন্টার অফ এক্সেলেন্সে’। শনিবাসরীয় বিকালে কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবে ঘোষণা করা হল সেকথা।
কীভাবে অনুসরণ করা হবে ‘ফুটবল ডেভলপমেন্ট প্ল্যান’?
মূলত তিনটি বিষয়ের উপরে জোর দেওয়া হবে ‘ভবানীপুর এফসি প্রো-ইন্ডিয়া সেন্টার অফ এক্সেলেন্সে’। প্রথমত, অনূর্ধ্ব ৭ পর্যায় থেকেই ফুটবলের পাঠ দেওয়া হবে স্প্যানিশ ঘরানা অনুসরণ করে। শুধু ফুটবলারই নয়, তাদের তৈরি করার দায়িত্বে থাকা কোচদেরও এই ধারার সঙ্গে পরিচিত করা হবে। পাশাপাশি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে ফুটবলারদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহের জন্য। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সেই ফুটবলারকে। এজন্য সাহায্য নেওয়া হবে ‘স্টেপ আউট অ্যানালিটিক্স’ নামে একটি সংস্থার, যারা ভারতের বিভিন্ন পেশাদার ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া সরাসরি সম্প্রচার করা হবে অ্যাকাডেমির ম্যাচ, প্র্যাকটিস সেশন এবং এআইএফএফ-এর বিভিন্ন লিগে অ্যাকাডেমির খেলা। আপাতত বিভিন্ন জেলায় বেবি লিগ ও স্কাউটিংয়ের মাধ্যমে খুদে ফুটবলারদের চিহ্নিত করা হবে। প্রাথমিক প্রশিক্ষণের পর সেখান থেকে বাছাই করা ফুটবলারদের আনা হবে ‘ভবানীপুর এফসি প্রো-ইন্ডিয়া সেন্টার অফ এক্সেলেন্সে’। আপাতত অনূর্ধ্ব ১৩ এবং অনূর্ধ্ব ১৫ পর্যায়ের ২৫ জন করে ফুটবলারকে নিয়ে চলবে এই সেন্টার।
[আরও পড়ুন: এক ওভারে ছয় ছক্কা, যুবরাজ-পোলার্ডদের পাশে নাম নেপালি ক্রিকেটারের]
এই পুরো পরিকল্পনায় টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেবে লা লিগা অ্যাকাডেমি ফুটবল স্কুলস ইন্ডিয়া। শনিবার স্কুলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর (ভারত) মিগুয়েল কাসাল বলে গেলেন, “ভারতে স্প্যানিশ ফুটবলের ঘরানা বেশ জনপ্রিয়। বিভিন্ন ক্লাবে স্প্যানিশ কোচ ও ফুটবলারের সংখ্যাটা দেখলেই তা স্পষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু সেই ধারার সঙ্গে ফুটবলারদের ছোটবেলায় পরিচয় করাতে হবে। ভবানীপুর এফসি প্রো-ইন্ডিয়া সেন্টার অফ এক্সেলেন্স সেই বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে। ওদের যাবতীয় টেকনিক্যাল সাপোর্ট আমরা দেব। সেন্টারের ফুটবলারদের পাশাপাশি কোচদেরও আমরা স্প্যানিশ ফুটবলের পদ্ধতি মেনে ট্রেনিং দেব।” এ শহরে ফুটবলের জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখেই কলকাতাকে বেঁছে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিগুয়েল। সঙ্গে ভবানীপুরের মতো আরও ক্লাবের এমন পদক্ষেপ করা প্রয়োজন বলেও মনে করছেন এই উয়েফা প্রো লাইসেন্স কোচ। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত থেকে এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন আইএফএ চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত। সেন্টার অফ এক্সেলেন্সের সিইও অপরূপ চক্রবর্তী জানালেন, বছরে একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে ফুটবলারদের। সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন ক্রীড়া মনোবিদ মৃণাল চক্রবর্তীও।
[আরও পড়ুন: নাইট কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের বিরুদ্ধে ‘মিলিটারি’ শাসনের অভিযোগ! কী বললেন মেন্টর গম্ভীর?]
অবশ্য এই সেন্টারে যে শুধু ফুটবলারদের খেলার দিকটা নজর করা হবে, তা নয়। সঙ্গে জোর দেওয়া হবে তাদের পড়াশোনার উপরেও। সেকথাই শোনালেন ভবানীপুরের কর্তা সৃঞ্জয় বোস। “আমরা এই ফুটবলারদের ফুটবল শেখানোর পাশাপাশি উপযুক্ত প্রথাগত শিক্ষাও দেব। এজন্য বিভিন্ন স্কুলের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। কারণ খেলার সঙ্গে পড়াশোনাও জরুরি,” বলে গেলেন তিনি। সেন্টারের কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা রাজ্যে একাধিক প্লেয়ার ডেভলপমেন্ট সেন্টার গড়ব। সেখান থেকে এআইএফএফ স্কাউটরা প্লেয়ার বেছে নিতে পারবেন। পাশাপাশি সেই সেন্টারে নজর কাড়া ফুটবলারদের আনা হবে আমাদের এলিট প্লেয়ার ডেভলপমেন্ট সেন্টার। সেখানে ভালো খেললে সুযোগ মিলবে ভবানীপুর এফসি প্রো-ইন্ডিয়া সেন্টার অফ এক্সেলেন্সে খেলার। সেখানে লা লিগা অ্যাকাডেমির নির্দেশিকা মেনে তৈরি করা হবে ফুটবলারদের।” এই ফুটবলাররা এআইএফএফ এবং আইএফএ আয়োজিত বিভিন্ন অনূর্ধ্ব ১৩, অনূর্ধ্ব ১৫ এবং অনূর্ধ্ব ১৭ পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশও নিতে পারবে।
সব মিলিয়ে, সংক্রান্তির দিনই বঙ্গ ফুটবলে নতুন শুরুর বার্তা দিল ‘ভবানীপুর এফসি প্রো-ইন্ডিয়া সেন্টার অফ এক্সেলেন্স’।