নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: কেকের (KK) মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় শহর। কীভাবে মৃত্যু হল, কারও গাফিলতি ছিল কিনা, প্রশ্ন উঠছে লাগাতার। এই পরিস্থিতিতে কেকের মৃত্যুর পিছনে প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগ তুলে সিবিআই (CBI) তদন্ত চাইলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ (BJP MP Soumitra Khan)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তের দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Home Minister Amit Shah) চিঠি দিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ। তাঁর এই অভিযোগের পালটা দিয়েছে তৃণমূলও (TMC)।
ঘাসফুল শিবিরের মিডিয়া কো অর্ডিনেটর কুণাল ঘোষ বলেন, “ওঁর (কেকে) শারীরিক অস্বস্তি ছিল। এর সঙ্গে অযথা পারিপার্শ্বিক বিষয় জড়িয়ে ফেলা উচিত নয়। যখন ওঁর ম্যানেজার কোনও অভিযোগ করছেন না তখন এই বিজেপি নেতার এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।”
[আরও পড়ুন: ধমনীতে ৭০% ব্লকেজ নিয়েও অনুষ্ঠান, জীবন দিয়ে পেশাদারিত্বের প্রমাণ দিলেন কেকে]
বৃহস্পতিবার অমিত শাহকে পাঠানো চিঠিতে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন সৌমিত্র। এক, কেন সেখানকার (নজরুল মঞ্চ) এসি কাজ করছিল না? দুই, টেকনিশিয়ানরা কোথায় ছিলেন? তিন, ইভেন্ট ম্যানেজার অথবা ম্যানেজমেন্টের লোকজন কোথায় ছিলেন? চার, নজরুল মঞ্চে ৩ হাজার দর্শকের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে ৭ হাজার মানুষ কীভাবে ঢুকল? তাঁর অভিযোগ, প্রশাসনিক গাফিলতির জেরেই কেকের মৃত্যু হয়েছে।
এর পরই বিজেপি সাংসদ আক্রমণ শানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে। চিঠিতে লিখেছেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি, দেখনদারি বন্ধ করুন। আপনার পুলিশকে বলুন তদন্ত করতে।” পালটা দিয়েছে তৃণমূলও। কুণাল ঘোষের কথায়, “বিজেপি নেতারা কথায় কথায় সিবিআই ডেকে আনছে। তাহলে তো বিজেপি নেতাদের কীর্তির তদন্তও করতে হয় সিবিআইকে।”
[আরও পড়ুন: সিবিআই তলবে সাড়া, সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছলেন অনুব্রত মণ্ডল]
প্রসঙ্গত, গুরুদাস কলেজ ফেস্টে ভিড়ে ঠাসা নজরুল মঞ্চে মঙ্গলবার রাতে শেষবার অনুষ্ঠান করেন কেকে। ওই অনুষ্ঠান চলাকালীন অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন সংগীতশিল্পী (Singer KK)। গরম লাগছে বলে জানান। প্রচণ্ড ঘামতে থাকেন। জোরালো আলো নিভিয়ে দিতে বলেছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে কলকাতার পাঁচতারা হোটেলে পৌঁছন কেকে। লিফটে ওঠার সময় অসুস্থতা আরও বাড়তে থাকে। তা সত্ত্বেও লিফটে ওঠার সময় বেশ কয়েকজন অনুরাগীর সঙ্গে সেলফি তোলেন। তারপর হোটেলে ঢুকে সোফায় বসতে গিয়েই পড়ে যান। সেই সময় টেবিলে ধাক্কা লেগে সামান্য চোট পান কেকে। অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলাও রুজু হয়। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার পর অস্বাভাবিক মৃত্যুর তত্ত্ব খারিজ করেন তদন্তকারীরা। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, বাঁদিকের ধমনীতে থাকা ৭০ শতাংশ ব্লকেজের ফলে মৃত্যু কেকে’র। অতিরিক্ত উত্তেজনায় সেই ব্লকেজ বেড়ে আচমকাই বন্ধ হয়ে যায় রক্ত চলাচল। পরিণতি, কার্ডিয়াক অ্যাটাক এবং কেকে’র অকাল প্রয়াণ।