নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: রাজ্যে একের পর এক উপনির্বাচনে হার। সংগঠনে ভাঙন। কর্মীদের মনোবল হারানো। এ সবকিছুকে উপেক্ষা করে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিল বিজেপি। এবারে গেরুয়া শিবির রাজ্যের মোট ৩৭টি আসনকে টার্গেট করছে। এর মধ্যে ১৮টি আসনে তারা আগেরবারই জয় পেয়েছিল। হেরে যাওয়া বাকি ২৪ আসনের মধ্যে ১৯টিকে টার্গেট করে এগোচ্ছে বিজেপি। সংখ্যলঘু অধ্যুষিত ৫টি আসনে জয়ের সম্ভাবনা না নেই ভেবে সেই আসনগুলির লক্ষ্যা ঝাঁপাচ্ছেও না গেরুয়া শিবির।
দিনকয়েক আগেই বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah), দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda) বাংলা নিয়ে প্রকাশ্যেই সরব হয়েছেন। তারপরেই নড়েচড়ে বসেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিছুদিন আগেই গতবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি দেশের যে সমস্ত আসনগুলি জিততে পারেনি, তার মধ্য ১৪৪টি আসনকে চিহ্নিত করে এখন থেকে দলের ভিত শক্ত করার কাজ শুরু করবে বলে ঠিক করেছে বিজেপি। এই তালিকায় বাংলার ১৯টি আসন রয়েছে।
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি নির্বাচন: ‘আগে জানলে দ্রৌপদীকে সমর্থন করা যেত’, মমতার পাশে দাঁড়িয়ে দাবি যশবন্তের]
একগুচ্ছ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বাংলার এই আসনগুলিতে কাজ শুরু করার নির্দেশ আগেই দেওয়া হয়েছিল। মোদি-শাহ-নাড্ডারা বাংলা নিয়ে মুখ খোলার পরে সেই কাজে গতিবৃদ্ধি হয়েছে। আগামী সোমবার থেকেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কর্মসূচি বাংলায় শুরু হতে চলেছে। কেন্দ্রীয় আইন দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী এস পি সিং বাঘেল (SP Singh Baghel) সোমবার থেকে তিনদিন রাজ্যের মথুরাপুর ও আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্র দুটি চষে বেড়াবেন, দলের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আগ্রার সাংসদ। বাঘেল দক্ষ সংগঠন হিসাবে পরিচিত। তাঁর কাধ্যেই রাজ্যের এই দুই কেন্দ্রের দায়িত্ব দিচ্ছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
[আরও পড়ুন: অস্বস্তি বাড়াচ্ছে দেশের করোনা গ্রাফ, উদ্বেগজনক এই ৫ রাজ্যের সংক্রমণের ছবি]
শুধু বাঘেল নন, পুরো জুলাই মাস ধরে স্মৃতি ইরানি, ধর্মেন্দ্র প্রধান, বীরেন্দ্র কুমারের মতো প্রথম সারির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের পাশাপাশিই প্রতিমা ভৌমিক, পঙ্কজ চৌধুরির মতো রাষ্ট্রমন্ত্রীরাও রাজ্যের বিভিন্ন লোকসভা কেন্দ্রে প্রবাস কর্মসূচি পালন করবেন। মাস খানেক ধরে এই কর্মসূচি চলবে। ধর্মেন্দ্র প্রধান কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় প্রবাস পালন করবেন। প্রতিমা ভৌমিক ঘুরবেন ডায়মন্ড হারবার ও সংলগ্ন এলাকায়। স্মৃতি ইরানি (Smriti Irani) হুগলি এবং সংলগ্ন এলাকায় চষে বেড়াবেন। বাংলায় মূলত লড়াকু নেতানেত্রীদের পাঠানো হচ্ছে। হারা আসন কীভাবে জেতাতে হয়, সেটা তাঁরা ভালমতোই জানেন। বিজেপি (BJP) সূত্রের খবর, শেষ হলে নাড্ডার কাছে আলাদা আলাদাভাবে রিপোর্ট জমা দেবেন তারা। তার উপর ভিত্তি করেই বাংলার জন্য রণকৌশল তৈরি করবেন শাহ-নাড্ডা। এটা প্রথম ধাপ। জুলাই মাস-জুড়েই হবে। পরবর্তী ধাপে আবারও রাস্তায় নামবেন কেন্দ্রীয় নেতারা।