সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: অভিষেক-বীরবাহার কনভয়ে হামলায় বিজেপি যোগের প্রমাণ প্রকাশ্যে! মঙ্গলবার রাতে ঝাড়গ্রাম শহর থেকে হামলায় অভিযুক্ত এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে হামলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বুধবার ওই বিজেপি কর্মীকে আদালতে তোলা হবে।
ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম জয় মাহাতো। এলাকায় তিনি বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচিত। সোশ্যাল মিডিয়ায় দলীয় পতাকা হাতে তাঁর একাধিক ছবি রয়েছে। এমনকী, রাজ্যস্তরের নেতাদের নিতে পোস্টও করতেন জয়। তিনি কুড়মি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বলেও খবর। হামলার পর থেকে গাঢাকা দিয়েছিলেন। তবে শেষরক্ষা হল না। উল্লেখ্য, হামলার পরই এর নেপথ্যে বিজেপির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সেই অভিযোগেই কার্যত সিলমোহর পড়ল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
[আরও পড়ুন: অরুণলাল-আশিস বিদ্যার্থীর পর এবার লক্ষ্মণ শেঠ, সাতাত্তরের দাপুটে নেতা ফের ছাদনাতলায়]
যদিও বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, “ধৃত বিজেপি কর্মী কি না জানি না। তবে ঝাড়গ্রামে আমাদের দলের লোকেদের উপর অত্যাচার করলে আমরাও পথে নামব।” যদিও রাজ্য বিজেপির অফিসে ধৃত জয় মাহাতোর ছবি রয়েছে। এমনকী, বিজেপি নেতা দিতেন্দ্র তিওয়ারি, সজল ঘোষদের সঙ্গেও তাঁর ছবি দেখা গিয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে জঙ্গলমহলে বিজেপি কর্মীদের গায়ে হাত পড়লে জ্বালিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি।
গত ২৬ মে, গড় শালবনিতে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে কুড়মিরা বিক্ষোভ দেখায় বলেই অভিযোগ। মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা-সহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে লক্ষ্য করে ইট ও পাথরবৃষ্টি চলে। তাতে বীরবাহার গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। তাঁর চালকের চোখে মারাত্মক আঘাত লাগে। এছাড়াও অল্পবিস্তর জখম হন বেশ কয়েকজন। এই ঘটনার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয় অভিষেকের। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কুড়মির বিবৃতির দাবিও জানান তিনি। অভিষেকের কথা মতো হামলার মাত্র ১৮ ঘণ্টার মধ্যে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেন কুড়মিরা। জানিয়ে দেন এই হামলার সঙ্গে তাঁরা কোনওভাবেই জড়িত নন। ঘটনার সমালোচনাও করেন।
[আরও পড়ুন: অরুণলাল-আশিস বিদ্যার্থীর পর এবার লক্ষ্মণ শেঠ, সাতাত্তরের দাপুটে নেতা ফের ছাদনাতলায়]
তারপর থেকেই শুরু হয় পুলিশি ধরপাকড়। একে একে গ্রেপ্তার হন রাজেশ মাহাতো, শিবাজি মাহাতো, রাকেশ মাহাতো ও অনুভব মাহাতো নামে চার কুড়মি নেতা। গত শনিবার আরেক কুড়মি নেতা অনুপ মাহাতো-সহ চারজন গ্রেপ্তার হন। মঙ্গলবার রাতে জয় মাহাতো নামে আরও একজন গ্রেপ্তার হলেন। এনিয়ে কনভয়ে হামলার ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯। হামলার তদন্তে কোমর বেঁধে নেমেছে সিআইডি। জেলে গিয়ে ধৃত কুড়মি নেতাদের জেরার অনুমতি পেয়েছে তাঁরা। জেরার প্রক্রিয়া দ্রুতই শুরু করবে তারা।