শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: টার্গেট দেড় লক্ষ মানুষের জন সমাবেশ। প্রস্তুতিও চূড়ান্ত। কিন্তু জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের ধূপগুড়ি বিধানসভায় ময়নাতলি এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর সভা ভরানোর পথে কাঁটা আবহাওয়া! গত রবিবার ক্ষণিকের 'টর্নেডো'য় বিপুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের একাংশ। আর, রবিবারও সেই ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে হাওয়া অফিস। ফলে এদিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভায় কতটা জন সমাবেশ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
এদিন সকালে এক্স হ্যান্ডেলে বাংলায় জনসভার কথা লিখেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। লিখেছেন, "আজ বিকেলে, আমি জলপাইগুড়ির মানুষদের মধ্যে থাকব একটি সমাবেশে ভাষণ দিতে। ওখানে বিজেপির প্রতি অসাধারণ জনসমর্থন রয়েছে।" সেখানেও রাজ্য়ের শাসকদলকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি মোদি। লিখেছেন, "পশ্চিমবঙ্গের মানুষ টিএমসির দুর্নীতি আর কুশাসনে ক্লান্ত। একমাত্র বিজেপি ওঁদের স্বপ্নপূরণ করতে পারে।"
[আরও পড়ুন: উপাচার্যদের উনিই বেতন দিন! ‘শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ’ ইস্যুতে রাজ্যপালকে তোপ ব্রাত্যর]
২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে পাশের ময়নাগুড়ি বিধানসভার চূড়াভান্ডার এলাকায় সভা করে গিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। জেলার বিজেপি নেতাদের কথায়, ওটাই ছিল মাস্টার স্ট্রোক। তৃণমূলের জেতা আসনে পদ্ম ফুটে ছিল সেবার। ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৪ ভোটে জিতে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী ডা: জয়ন্ত কুমার রায়। সেবার লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হয়ে ছিলো মোদির জনসভায়। এবার প্রার্থী ডাঃ জয়ন্ত কুমার রায়। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক শ্যাম প্রসাদের কথায়, সেবার এক লক্ষ মানুষের জমায়েতে প্রায় দুই লক্ষ ভোটে জিতেছিলেন বিজেপি প্রার্থী। এবার প্রধানমন্ত্রীর সভায় দেড় লক্ষ মানুষের জন সমাবেশ থেকে দুই লক্ষাধিক ভোটে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ডাঃ জয়ন্ত কুমার রায়কে জেতানোর বার্তা দিতে চান তাঁরা। কোথা থেকে কতো লোক আসবে তার হিসেবও চূড়ান্ত। কিন্তু চিন্তা বাড়িয়েছে আবহাওয়া।
গত রবিবারের মতোই এই রবিবার ও ঝড়, বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া দপ্তর। তাতেই চিন্তার মেঘ ঘনিয়েছে স্থানীয় বিজেপি নেতাদের কপালে। ৩১ নং জাতীয় সড়কের পাশে ময়নাতলি লাল স্কুল সংলগ্ন যে মাঠে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী তার ঠিক উলটো দিকে তৈরি করা হয়েছে হেলিপ্যাড। হেলিপ্যাডে নেমে গাড়িতে করে সভাস্থলে পৌছবেন মোদি।
[আরও পড়ুন: ‘রাহুল রাজনীতির সেরা ফিনিশার, কংগ্রেসকে ফিনিশ করবেই’, খোঁচা রাজনাথের]
ঝড়, বৃষ্টি এমনকি তীব্র দাবদাহের কথা মাথায় রেখে আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি করা হচ্ছে সভামঞ্চ। আধা সামরিক বাহিনীর ডগ স্কোয়াড, বম্ব স্কোয়াড এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশের কড়া নজরদারিতে তৈরি হচ্ছে সভামঞ্চ। তবে সবকিছু মাথায় রেখে মঞ্চ ও সভাস্থল তৈরি করা হলেও হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস যদি মিলে যায়। দুর্যোগের কালো মেঘ যদি আকাশ ঢাকে, তাহলে হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী আসবেন কী করে, সেই চিন্তাও এখন তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে বিজেপি নেতাদের। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক দীপক বর্মন বলেন, "আমরা সমস্ত প্রস্তুতি সেরে রাখছি। দেড় লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশ হবে।" প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কী বার্তা দেন সেই দিকেই তাকিয়ে আছে সব মহল।