নন্দন দত্ত, বীরভূম: শিয়রে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বিজেপি-তৃণমূলের তুমুল কথার লড়াই। একদিকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘বহিরাগত’ বলে কটাক্ষ করছে তৃণমূল। অন্যদিকে, দুর্নীতি-কুকথা নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বকে বিঁধছেন বিজেপি নেতারা। মঙ্গলবারও তার ব্যতিক্রম হল না।
পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করতে এসে বীরভূমের চিলার ময়দানে জনসভা করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (J P Nadda)। সেখান থেকে তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল বাংলার সংস্কৃতি নষ্ট করছে। কুকথা নিয়ে তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ শানান তিনি। দিন কয়েক আগে কাঁথির জনসভা থেকে শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশে কুকথা বলেছিলেন অভিষেক। রীতিমতো তুই-তোকারি করেছিলেন তিনি। এবার সেই বক্তব্যকেই হাতিয়ার করলেন নাড্ডা। তাঁর কথায়, “ভাইপো সভায় দাঁড়িয়ে এমন ভাষা প্রয়োগ করছেন, তা তো মুখে আনা যায় না। সকলের নামের সঙ্গে কোনও না কোনও বিশেষণ জুড়ে দিচ্ছেন। এটা কি বাংলার সংস্কৃতি?” এরপরই তাঁর কটাক্ষ, “সস্তায় ক্ষমতা পেয়েছেন তো, তাই মস্তি করছেন।”
[আরও পড়ুন : ‘বর্গী এসে সব নিয়ে যাবে, কৃষকরা চোখের জল ফেলবে’, ফের কেন্দ্রকে খোঁচা মুখ্যমন্ত্রীর]
নাড্ডার অভিযোগ, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে বাংলার সংস্কৃতি সংকটে পড়েছে। তৃণমূল সকলকে বহিরাগত বলছে। ভাইয়ে ভাইয়ে লড়াই বাঁধানো হচ্ছে।” তাই রাজ্যে সরকার বদলের ডাক দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। তাঁর কথায়, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বাংলায় বদল হচ্ছে। তাই তিনি বারবার এ রাজ্যে আসবেন।বাংলা ওঁর মনে রয়েছে। কখনও তিনি খালি হাতে এখানে আসেন না।” তুলে ধরেন এবার সাধারণ বাজেটে বাংলার প্রাপ্তির কথা। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন ছুড়ে দেন নাড্ডা। জানতে চান, “এত ভয় কীসের দিদি?” এদিনের সভা থেকে বাংলায় বাক স্বাধীনতা নেই বলেও অভিযোগ করেন নাড্ডা। এ প্রসঙ্গে তুলে আনেন, আরামবাগ টিভির সম্পাদক, যাদবপুরের অধ্যাপকের প্রসঙ্গও।
কেন্দ্রের প্রকল্প রাজ্যের নামে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। তৃণমূলের স্লোগান নিয়েও কটাক্ষ করেন তিনি। তাঁর কথায়, “মায়ের কোনও চিহ্ন নেই এ দলে। মাটির প্রতি মমতা নেই। মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতাও নে্ই এই সরকারের।” উল্লেখ্য, এদিন সভার শুরুতেই নাড্ডার মাইক বিভ্রাট হয়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ নাড্ডার বক্তব্য, “মঞ্চ বদলে যেতে পারে। কিন্তু উদ্দেশ্য তো বদলাবে না।” সভা বানচাল করার ছক কষা হচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ছবি: সুশান্ত পাল।