সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের (Bangladesh) পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জলসা ঘিরে অশান্তি, মৃত্যুর নেপথ্যে বিএনপি ও জামাতের বড়সড় হাত রয়েছে। এমনই দাবি করলেন সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। সোমবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এই কথা বলেন। তাঁর মন্তব্যকে সমর্থন করে বিএনপি-জামাতকেই (BNP-Jamat) এই অশান্তির জন্য দায়ী করেছেন আরও দুই মন্ত্রী। তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের বক্তব্য, পঞ্চগড়ের ঘটনা সারা দেশে বিএনপির ষড়যন্ত্রের অংশ। আর রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ”তৌহিদি জনতার ব্যানারে বিএনপি-জামাতের নেতা,কর্মীরা পঞ্চগড়ে আহমদিয়াদের গ্রামে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। সোমবার তিনি পঞ্চগড়ে আহমদিয়াদের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি পরিদর্শন করেন।”
পঞ্চগড়ে আহমদিয়াদের জলসা বন্ধ করতে অপরপক্ষের হামলা (Attack), সংঘর্ষ, মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘‘আহমদনগর এলাকায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। প্রতিবারই তাঁরা দু’দিনব্যাপী একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এবারও সেই অনুষ্ঠান করতে যাওয়ায় জামাতে ইসলামির সক্রিয় সদস্য ও বিএনপি নেতারা একসঙ্গে জড়িত হয়ে তাঁদের বাধা দিয়েছে। তারপর তাঁদের ঘরবাড়িতে আগুন ধরানো হয়। যেখানে অনুষ্ঠান হচ্ছিল, সেখানেও আগুন ধরায়। এতে এক কাদিয়ানি (Kadiyani) সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। মারামারি করতে গিয়ে একজন জামাতে সদস্যও আহত হয়ে মারা যায়।’’
[আরও পড়ুন: কলকাতা পৌঁছতেই সমর্থকদের ভিড়, জোকা ESI হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা অনুব্রতর]
এই সহিংসতার ঘটনায় সাতটি মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮১ জনকে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি নেতা ফজলে রাব্বি আছেন। তিনি স্বীকারোক্তি করেছেন, সমাবেশটি বন্ধ করতেই তাঁরা এসেছিলেন। নেপথ্যে তিনিও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেখানে র্যাবের এক সদস্যও আহত হয়েছেন। এসবের পর অবশ্য এখন পঞ্চগড়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেই আশ্বস্ত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: ‘মোদি আসলে শয়তানের বশে থাকা হিন্দু’, প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ পাক ক্রিকেট অধিনায়কের]
সোমবার অশান্ত এলাকা পরিদর্শন করতে যান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, ‘‘একটি গোষ্ঠী সবসময় ধর্মকে ব্যবহার করে আসছে। তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে নানা ফৌজদারি অপরাধ ঘটাচ্ছে। পঞ্চগড়ে তৌহিদি জনতার ব্যানারে বিএনপি-জামায়াত যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তা একাত্তরের নৃশংসতাকেও হার মানায়। বিএনপি-জামায়াত নানা নামে-বেনামে গুপ্ত হামলা করে মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। হামলাকারীরা পূর্বপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছে। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। তবে এত বড় ঘটনা ঘটার আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেন কোনও তথ্য পেল না? এখানে তাদের কোনও গাফিলতি আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’