রমেন দাস: সোনাগাছি অথবা কলকাতার নিষিদ্ধ পল্লিতে যাতায়াত রয়েছে বাবুদের! যৌনপল্লিতে সুখে থাকার ‘সুখবর’ ভাসে আকাশ-বাতাসেও। কিন্তু সবকিছুর ঊর্ধ্বেও বারবার ব্রাত্যই থেকে যায় ওরা! যৌনকর্মীর সন্তান তকমা নিয়ে সামাজিক বিড়ম্বনায় পড়তে হয় নিরন্তর। এবার ওদের কথা ভেবেই কলকাতার কালীঘাটের যৌনপল্লিতে তৈরি হল অভিনব এক স্কুল (School) ! যৌনকর্মীর সন্তানদের কথা মাথায় রেখে এই স্কুলের ব্যবস্থা করল ‘আমরা পদাতিক’ (Amra Padatik) নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যেই শুরু করেছে কাজ।
কী হবে ওই ‘অন্য’ স্কুলে? ‘ব্রেক দ্য বেরিয়ার’ (Break the Barriers) নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি আসলে এমন একটি উদ্যোগ, যা প্রতি মুহূর্তে পিছিয়ে যাওয়াদের জন্য কাজ করবে। মায়ের পেশাকে সম্মান জানিয়েই যৌনকর্মীদের সন্তানরাই পড়তে এবং পড়াতে আসবেন এখানে। পড়াশোনার পাশাপাশি এখানে শেখানো হবে নাচ, গান, ছবি আঁকাও। কলকাতার (Kolkata) কালীঘাট (Kalighat) বাজারের কাছের যৌনপল্লির (Sonagachhi) এই প্রতিষ্ঠানই পথ দেখাবে নতুন করে, দাবি উদ্যোক্তাদের।
[আরও পড়ুন: তৃণমূল ছাড়ছেন রাজন্যা! এবার কোন ভূমিকায় দেখা যাবে ছাত্রনেত্রীকে?]
এ প্রসঙ্গে ‘আমরা পদাতিক’ সংগঠনের সভাপতি রতন দলুই জানান, ”আমরা বহু বছর ধরে যৌনকর্মীদের পেশাকে সম্মান জানিয়ে কাজ করছি। মূলত, যারা কাজ করি প্রায় প্রত্যেকেই যৌনকর্মীদের সন্তান। এক্ষেত্রেও অন্যথা হয়নি। এটিকে স্কুলই বলতে পারেন। যেখানে স্কুলছুট অথবা স্কুলে পড়তে পারে না এমন সকলেরই পড়ার ব্যবস্থা হয়েছে। মায়ের কাজের সময় অর্থাৎ সন্ধ্যা থেকে নানা বিষয়ে শিক্ষা পাবে পড়ুয়ারা।”
[আরও পড়ুন: মেরা নাম জোকার! নিজেকে অন্ধকারে রেখেও ‘সান্তা’দের আলো দেখাচ্ছেন কলকাতার সেলিম]
ইতিমধ্যেই ‘আমরা পদাতিকে’র এই স্কুলে হাজির হয়েছে প্রায় ৫০ জন পড়ুয়া। এরা প্রত্যেকেই যৌনপল্লির বাসিন্দা। সন্ধ্যায় পড়াশোনার সঙ্গেই বেড়ে ওঠার স্বপ্ন দেখতে হাজির হয়েছে ওরা। এমনই এক পড়ুয়া রূপম (নাম পরিবর্তিত)। মায়ের ব্যস্ততার সময়ে পড়তে এসেছে সে-ও। তার কথায়, ”আমি স্কুলে যেতে পারিনি, সবাই বাজে কথা বলে স্কুলে গেলে। এখানে আসছি। ভালো লাগছে।” আমরাও পড়তে চাই, রূপমের সুরে প্রায় একই কথা বলছে বাকিরাও।