সৈকত মাইতি, তমলুক: মুখে দাদা বললেও মন থেকে ‘দাদা’ বলে মেনে নিতে পারেননি তরুণী। বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি ‘দাদা’। উলটে ‘বোনের’ মন ভেঙে বিয়ে করেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থানা এলাকার বাসিন্দা। আর সেই বিয়েই কাল হল। ভালবাসার মানুষকে অন্য কারোর হতে দেখতে পারেননি ওই মহিলা। তাই বউভাতের দিন নতুন বউদিকে বিষ দিয়ে খুন করল ‘ননদ’। মর্মান্তিক এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
নন্দকুমার থানার সাওড়াবেরিয়া জালপাই ১ নম্বর অঞ্চলের রুপাহার গ্রামের বাসিন্দা বিদ্যুৎ দাস অধিকারী। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর সঙ্গে বিয়ে হয় তমলুক থানার অন্তর্গত শ্রীরামপুর অঞ্চলের গোপীনাথপুর গ্রামে রিয়া দাস অধিকারীর। ৮ ফেব্রুয়ারি ছিল তাঁদের বউভাত। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন ‘পাতানো বোন’ পুজা মণ্ডল বর্মন। সেখানেই সে কুকীর্তিটি ঘটায়।
[আরও পড়ুন: শীঘ্রই শিয়ালদহ থেকে ফুলবাগান রুটে মিলবে মেট্রো পরিষেবা, গুণতে হবে বাড়তি ভাড়া]
স্থানীয় সূত্রে খবর, বিদ্যুৎ পেশায় বাসের কন্ডাক্টর। যাতায়াতের পথেই বছর বত্রিশের পুজার সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। পরিবার সূত্রে খবর, বিদ্যুৎ পুজাকে বোন হিসেবে দেখতেন। কিন্তু পুজার মনে অন্যরকম অনুভূতি ছিল বিদ্যুতের জন্য। মনের কথা জানিয়েওছিলেন। কিন্তু জুটেছিল শুধু প্রত্যাখ্যান। বিদ্যুৎ জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি পুজাকে বোন হিসেবেই দেখেন। বিয়েতে ‘বোনকে’ আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন। বউভাতে এসে মনের মানুষকে অন্যের হতে দেখতে পারেনি পুজা। তখনই চরম পদক্ষেপ নিয়ে ফেলে সে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বউভাতের দিন নতুন বউ রিয়ার কোল্ড ড্রিংকসের মধ্যে ঘাস মারার বিষ মিশিয়ে দেয় পুজা। এর পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন রিয়া। সঙ্গে সঙ্গে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তমলুকের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পরে কলকাতায় আনা হলে তাঁকে বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া। দোষীর কঠোর শাস্তি দাবি করেছে পরিবার। মঙ্গলবার পুজাকে আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।