অভিরূপ দাস: দুটো-পাঁচটা হবে না। কিনতে হবে এক প্যাকেট। সিগারেটের ক্ষেত্রে দ্রুত এই নিয়ম বলবৎ করতে মেয়রের দ্বারস্থ ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন।
এমন চিন্তার নেপথ্যে কারণ একটাই। সিগারেটের খুচরো বিক্রি জল ঢালছে সচেতনতায়। অবিলম্বে তা বন্ধ করার চিঠি, কলকাতার মহানাগরিকের হাতে তুলে দিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। মঙ্গলবার বিশ্ব তামাক বর্জন দিবসে সে প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন মেয়র। কথা দিয়েছেন ব্যবস্থা হবে দ্রুত। সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে জ্বলজ্বল করে ক্যানসার আক্রান্তের ছবি। ভয়ংকর সে ছবি ছাপার মূল উদ্দেশ্য ধূমপায়ীদের মনে ভীতির উদ্রেক করা। চিকিৎসকরা বলছেন, খুচরো সিগারেট বিক্রি জল ঢালছে সে অভিপ্রায়ে।
[আরও পড়ুন: ‘হেরে গিয়েও কাজ করছে, ওকে দেখে শিখুন’, বাঁকুড়া থেকে সায়ন্তিকার ভূয়সী প্রশংসা মমতার]
প্যাকেট সিগারেট বিক্রির এই আইন নতুন নয়। ভারত সরকারের ‘কটপা অ্যাক্টেই’ রয়েছে এহেন অঙ্গীকার। দ্য সিগারেট অ্যান্ড আদার টোবাকো প্রোডাক্ট অ্যাক্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে, খুচরো সিগারেট বিক্রি করা যাবে না। তামাকজাত দ্রব্য দেওয়া যাবে না ১৮ বছরের নিচের কাউকে। আইএমএ’র রাজ্য সম্পাদক ডা. শান্তনু সেন জানিয়েছেন, আপাতত কলকাতা পুরসভা এলাকায় চালু করতেই হবে এই কটপা অ্যাক্ট। মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রস্তাবপত্র গ্রহণ করেছেন। বলেছেন, “আমাদের যৌবনে সিগারেট ছিল স্টাইল স্টেটমেন্ট। এখন তা নয়। যেটা আমরা পারিনি নতুন প্রজন্মকে সেটা করতেই হবে।” জুলাই থেকেই লাগু হতে পারে এই নিয়ম।
উত্তরোত্তর বাড়ছে মুখের ক্যানসার। আইএমএ, কলকাতা পুরসভা আর মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কলকাতা পুরসভার ১৬টি বোরোয় প্রত্যেক মাসে একদিন করে ক্যাম্প করার। সেখানে মুখের ক্যানসার, স্তন ক্যানসার, সার্ভিকাল ক্যানসারের স্ক্রিনিং টেস্ট হবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। আইএমএ জানিয়েছে এই প্রকল্পে বোরো অফিসের ঘরটাই শুধু নেওয়া হবে। চিকিৎসক আসবেন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন থেকে। যাঁরা ক্যাম্পে আসবেন তাঁদের শরীরে সন্দেহজনক কিছু মিললে মেমোগ্রাম, প্যাপস্মিয়ার, বায়োপসি জাতীয় টেস্ট বিনামূল্যে করবে মেডিকা সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল।
রাজ্যের প্রতিটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ক্যানসার চিকিৎসা চলছে। তবু কেন ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ের ক্যাম্প? মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালগুলোয় দেখা যায়, গুরুতর অসুস্থ ক্যানসার রোগীদের দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। সামান্য পেট খারাপের রোগীও চলে আসছেন জেলা থেকে। এই ধরনের ক্যাম্প হলে ক্যানসার রোগীদের আর দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। উত্তম মঞ্চে বিশ্ব তামাক বর্জন দিবসের অনুষ্ঠানে ছিলেন মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চেয়ারম্যান ড. অলোক রায়, ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক ডা. রাজু বিশ্বাস।
[আরও পড়ুন: গান স্যালুটে বিদায় জানানো হবে কেকে’কে, ঘোষণা মমতার, বাঁকুড়া থেকে দ্রুত ফিরছেন কলকাতা]
জনস্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. অনির্বাণ দলুই জানিয়েছেন, শুধু অসুখ নয়, সিগারেট বিড়ি থেকে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। সিগারেটের ফেলে দেওয়া ফিল্টার থেকে বছরে ১৩৩ টন বর্জ্য জমা হচ্ছে রাজ্যে।