গোবিন্দ রায়: নন্দীগ্রাম ভূমি আন্দোলনে 'নিখোঁজ' হয়ে যান তিনজন। জেলাপরিষদের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী মৃত বলে উল্লেখ করা হয়েছে তাঁদের। কিন্তু পরিবারের লোকজন পাননি মৃত্যুর শংসাপত্র। ওই তিন 'নিখোঁজে'র পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে কঠোর পদক্ষেপ কলকাতা হাই কোর্টের। আগামী এক মাসের মধ্যে তাঁদের মৃত্যুর শংসাপত্র রাজ্য সরকারকে ইস্যুর নির্দেশ দেন বিচারপতি শম্পা সরকার। এই নির্দেশের পরই X হ্যান্ডেলে কলকাতা হাই কোর্টকে কৃতজ্ঞতা জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
গত ২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর, নন্দীগ্রামে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির মিছিল ছিল। তাতে হামলার অভিযোগ ওঠে। চারজনের প্রাণহানি হয়। নিখোঁজ হয়ে যান অন্তত ১২ জন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আদিত্য বেরা ,সত্যেন গোলে, বলরাম সিং। ওই তিনজনই ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য। পরিবারের দাবি, তাঁদের খুন করা হয়েছে। জেলা পরিষদের তরফে প্রকাশিত তালিকায় এই তিনজনকে মৃত বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু পরিবারের লোকজনের দাবি, বার বার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও ডেথ সার্টিফিকেট পাননি। মাঝে কেটে গিয়েছে প্রায় ১৭ বছর। কার্যত বাধ্য হয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন 'নিখোঁজ' ৩ জনের পরিবার।
[আরও পড়ুন: ‘যদি বিরাট মাত্রায় কারচুপি না হয়ে থাকে…’, নতুন করে নিট নেওয়ার আবেদনে ‘না’ সুপ্রিম কোর্টের]
বৃহস্পতিবার বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে ওঠে এই মামলাটি। বিচারপতি পঞ্চায়েত দপ্তরের আধিকারিকদের প্রশ্ন করেন, কেন ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করতে এত দেরি হচ্ছে? আধিকারিকরা দেরি হওয়ার জন্য ভুল স্বীকার করে নেন। বলেন, "দেরি হচ্ছে আমাদের ভুল স্বীকার করছি। কিন্তু এখন অনলাইন আবেদন করতে হবে।" সওয়াল জবাব শোনার পর রাজ্য সরকারকে মৃত্যু শংসাপত্র ইস্যু করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতির নির্দেশ, এক মাসের মধ্যে এই তিনজনের পরিবার স্থানীয় পঞ্চায়েতে গিয়ে মৃত্যু শংসাপত্রের জন্য আবেদন করবেন। তাঁদের অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে সমস্ত সাহায্য করবেন পঞ্চায়েত সদস্যরা। এবং এক মাসের মধ্যেই ওই তিনজনের পরিবারকে মৃত্যুর শংসাপত্র হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি।
কলকাতা হাই কোর্টের এই রায়ের পর বিচারপতিকে কৃতজ্ঞতা জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময় নন্দীগ্রামের শহিদদের অবহেলা করেন বলেও অভিযোগ তাঁর। ওই তিনজনের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন শুভেন্দু।