সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আবাস যোজনায় (Awas Yojona) কেন্দ্রীয় দল। ১০০ দিনের কাজ খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় দল। রেশন দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় দল। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে কেন্দ্রীয় দল। গত দেড় বছরে রাজ্যে কার্যত ‘পান থেকে চুন খসলেই’ এসেছে কেন্দ্রীয় দল। কিন্তু তাতে বিরোধী শিবিরের লাভের লাভ কিছু হচ্ছে কী? এই দলগুলি পাঠিয়ে না রাজ্য সরকারকে সেভাবে চাপে ফেলা যাচ্ছে, আর না অভিযোগ প্রমাণ করার মতো বিস্ফোরক কোনও তথ্যপ্রমাণ এই কেন্দ্রীয় দলগুলি খুঁজে বের করতে পেরেছে। প্রাপ্তি বলতে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ‘দুর্নাম’।
বস্তুত, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এরাজ্যের বিজেপি (BJP) নেতারা অভিযোগ করছেন ভুরি ভুরি। কখনও আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ, কখনও ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ, কখনও রাজনৈতিক হিংসার অভিযোগ। কিন্তু কোনও অভিযোগ নিয়েই দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেননি বঙ্গ বিজেপির কুশীলবরা। তাঁরা নিজের কর্তব্য সমাধা করেছেন, কেন্দ্রের কাছে নালিশ করেই। কখনও সেটা দলীয় স্তরে, কখনও সেটা প্রশাসনিক স্তরে। আর কেন্দ্রও বঙ্গ নেতাদের কথা রাখতে একের পর এক কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়েছে রাজ্যে।
[আরও পড়ুন: ঝালদা পুরসভা নিয়ে ফের জটিলতা, হাই কোর্টের নির্দেশে আপাতত পূর্ণিমা কান্দুই পুরপ্রধান]
হিসাবে বলছে, গত দেড় বছরে ৩৫টির বেশি কেন্দ্রীয় দল এসেছে রাজ্যে। সেই দলগুলি জেলায় জেলায় গিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছে। বিভিন্ন অভিযোগ খতিয়ে দেখেছে। এবং সেটা করতে গিয়ে স্থানীয়দের কাছে বাধাও পাচ্ছেন। সাধারণ মানুষের ক্ষোভ গিয়ে পড়ছে তাদের উপরই। অথচ তাঁর নির্যাস এমন কিছু নয়। এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় দলগুলি এমন কোনও রিপোর্ট দিতে পারেনি, যাতে রাজ্য সরকারের বা তৃণমূলের (TMC) ভাবমূর্তির উপর বড়সড় আঘাত হানতে পারে। যার ফলে রাজ্য সরকারকে চাপে রাখার যে কৌশল কেন্দ্র তথা বিজেপি নিয়েছে তাতে লাভের লাভ কিছু হচ্ছে না।
[আরও পড়ুন: VIP আসনে কাটছাঁট, সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে প্রথম সারিতে রিকশাচালক-সবজি বিক্রেতারা]
উলটে এই লাগাতার দল পাঠানোটা বিজেপির জন্য বুমেরাং হতে পারে বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ ঘন ঘন কেন্দ্রীয় দল পাঠানোর এই রীতিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যাবহার করছেন। মুখ্যমন্ত্রী একাধিক সাম্প্রতিক সভায় অভিযোগ করেছেন, ‘এরাজ্যে পান থেকে চুন খসলে বা উইপোকা কামড়ালেও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছে!’ বস্তুত রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল প্রচার করছে, এই কেন্দ্রীয় দলগুলি আসছে স্রেফ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য আর রাজ্যের টাকা যাতে আটকে দেওয়া যায়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য। এই কেন্দ্রীয় দলগুলি নিজেদের রিপোর্টে বড়সড় কোনও ‘তির না মারতে’ পারলে রাজ্যের সেই অভিযোগই কিন্তু সিদ্ধ হবে। আর সেটা বিজেপির জন্য বুমেরাং হতে পারে।