দেবব্রত মণ্ডল: সোমবার নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভাঙড় (Bhangar)। পঞ্চায়েত অফিসে ভাঙচুর, প্রধান, উপপ্রধানকে মারধর-সহ আরাবুলপুত্র হাকিমুল ইসলামের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় এলাকায় ছড়াল তুমুল চাঞ্চল্য। পালটা জমিরক্ষা কমিটির নেতাকে মারধরের ঘটনায় রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভে উত্তেজনা চরমে পৌঁছল একদা অশান্ত ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড এলাকায়।
সোমবার ভাঙড়ের পোলেরহাট ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে একশো দিনের কাজ-সহ অন্যান্য কাজের দাবিতে এলাকাবাসীদের নিয়ে পঞ্চায়েত অফিসে যান জমিরক্ষা কমিটির পঞ্চায়েত সদস্যরা। সেখানে পঞ্চায়েতের সচিব-সহ প্রধান, উপপ্রধান, আরাবুলপুত্র হাকিমুল ইসলামের সঙ্গে এলাকার উন্নয়নের কাজ এবং একশো দিনের কাজ নিয়ে ঝামেলা বাধে। অভিযোগ, জমিরক্ষা কমিটির লোকজন পঞ্চায়েত অফিসের ভিতর ঢুকে টেবিল-চেয়ার ভাঙচুর করেন। এর পাশাপাশি প্রধান, উপপ্রধান-সহ পঞ্চায়েতের কর্মীদের উপর চড়াও হন তাঁরা। জমিরক্ষা কমিটির সদস্যদের হাতে আক্রান্ত হন খোদ আরাবুলপুত্র হাকিমুল ইসলাম। হাকিমুল ইসলামের গাড়ি-সহ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ঘটনাকে ঘিরে চরম উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে কাশীপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। সাময়িকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এলাকা আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
[আরও পড়ুন: ঘাটালে দেওয়াল চাপা পড়ে প্রাণ হারালেন একই পরিবারের দুই অন্তঃসত্ত্বা]
ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসনে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। পাওয়ার গ্রিডের অদূরে নতুনহাট বাজারে কয়েকশো আরাবুল অনুগামী জড়ো হন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কাশীপুর থানার পাশাপাশি ভাঙড় থানার সহ-ডিএসপি তমাল সরকারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। তার কিছু পরেই নতুনহাট বাজারে জমি কমিটির নেতা মির্জা হাসানের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়া হয় এবং তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাকে ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয় নতুনহাটে। মির্জা হাসানের উপরে আক্রমণের খবর চাউর হতেই জমি কমিটির সদস্যরা মাছিভাঙা, খামারআইট গ্রাম থেকে বেরিয়ে এসে হাড়োয়া রোডে অবরোধ শুরু করেন। অবরোধের জেরে থমকে যায় যানচলাচল।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে চলছে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী রক্তক্ষয়ী আন্দোলন। বোমা, গুলি, পথঅবরোধ আন্দোলন বন্ধ হয়ে চালু হয় পাওয়ার গ্রিড। আবারও নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হতেই অশান্তির কালো মেঘা দেখা দিয়েছে এই এলাকায়। এ বিষয়ে জমি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসান বলেন, “আমি বিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার পথে আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করেছে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে।” পালটা আরাবুল ইসলামের দাবি, “আজ হঠাৎই জমি কমিটির লোকজন পঞ্চায়েতে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে। প্রধান উপপ্রধানকে মারধর করেছে। ওদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।”