সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহের রহস্য উন্মোচনে আগ্রহের শেষ নেই। চাঁদের প্রকৃত চেহারা, কীভাবেই বা জন্ম, কোন সম্পদ লুকিয়ে তার বুকে – এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত সেই চেষ্টা জারি থাকবে। ফের তারই প্রমাণ দিতে চলেছে চিন (China)। আগামী সপ্তাহে চাঁদে যান পাঠাচ্ছেন সে দেশের মহাকাশবিজ্ঞানীরা। মানববিহীন সেই যানের লক্ষ্য, চাঁদের বুক খুঁড়ে সেখান থেকে নুড়ি-পাথর আর মাটি সংগ্রহ করা। অভিযান সফল হলে নভোশ্চর ছাড়া স্রেফ যন্ত্রের মাধ্যমেই চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজে সফল হবে চিন। চিনের চন্দ্রদেবতার নামানুসারে এই যানটির নাম রাখা হয়েছে – চ্যাং ই-৫ (Chang’e-5)।
সত্তর দশকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন পরপর বেশ কয়েকটি যানে মহাকাশচারীদের পাঠিয়েছিল। ইতিহাস বলছে, তাঁরা চাঁদের শরীর থেকে অন্তত ৩৮২ কেজি মাটি এবং নুড়ি নিয়ে পৃথিবীতে ফিরেছিল। চন্দ্রাভিযানের ক্ষেত্রে গোড়া থেকে রাশিয়া যতটা এগিয়ে, ততটাই কিন্তু পিছিয়ে চিন। সেই দুয়ো ঘোচাতে এবার তেড়েফুঁড়ে চাঁদ বিষয়ক গবেষণায় জোর দিয়েছে জিনপিংয়ের দেশ। তারই একটা অংশ চ্যাং’ই-৫’এর অভিযান। ঠিক হয়েছে, চাঁদের যে এলাকা ঝঞ্ঝাপ্রবণ সেই ‘Ocean of Storms’ থেকে ২ কেজি নমুনা সংগ্রহ করবে এই চন্দ্রযানটি।
[আরও পড়ুন: এ কোন সকাল…! আলাস্কার এই শহরে আগামী ৬৫ দিন দেখা মিলবে না সূর্যদেবের]
কীভাবে কাজ করবে চিনের এই চন্দ্রযান? জানা গিয়েছে, চাঁদের কক্ষপথে চ্যাং’ই-৫ প্রবেশ করার পর দুটি রোবোটিক যান অবতরণ করানো হয় চন্দ্রপৃষ্ঠে। তার মধ্যে একটি চন্দ্রপৃষ্ঠে খননকাজ করবে। সেখান থেকে মাটি সংগ্রহের কাজ করবে একটি উত্তোলক যন্ত্র। তারপর তা কক্ষপথে দাঁড়িয়ে থাকা যান মারফত পৃথিবীতে পাঠাবে।
[আরও পড়ুন: কমবে করোনায় মৃত্যুর সম্ভাবনা! সম্ভাব্য চিকিৎসার হদিশ দিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিকিৎসক]
চন্দ্র গবেষণায় আরও বড় পরিকল্পনা আছে চিনের। আগামী ১০ বছরের মধ্যে চিনের দক্ষিণ মেরু অর্থাৎ যেদিকটা প্রায় অন্ধাকারাচ্ছন্ন, সেদিকে বেশ কয়েকটি রোবোটিক বেস স্টেশন তৈরি করা হবে। ২০৩০এর মধ্যে নভোশ্চর পাঠানোর ক্ষেত্রে তা বিশেষ সুবিধা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। চ্যাং’ই-৫’এর পর চ্যাং’ই-৬, চ্যাং’ই-৭ এবং চ্যাং’ই-৮ যান চাঁদের পাঠানোর দীর্ঘ পরিকল্পনাও রয়েছে চিনের। সব ঠিক থাকলে, আগামী সপ্তাহে চিনা চন্দ্রযান পাড়ি দেবে চাঁদের উদ্দেশে। সফল হলে আমেরিকা এবং রাশিয়ার পর এ ধরনের অভিযানে সাফল্যের তালিকায় নাম লেখাবে চিন।