সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৩ লক্ষ সেনা সম্বলিত পিপলস লিবারেশন আর্মি’র ৯০তম প্রতিষ্ঠা দিবসে শত্রুদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সেনাবাহিনীর বিশাল কুচকাওয়াজ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, “আক্রমণকারী যে কোনও শত্রুকে নিকেশ করতে সক্ষম লালফৌজ।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “লালফৌজের উচিত চিনা কমিউনিস্ট পার্টির নির্দেশকে কঠোরভাবে মেনে চলা। যেদিকে দল নির্দেশ করবে, সেদিকেই মার্চ করতে করতে এগিয়ে যেতে হবে সেনাকে।”
বিশ্বের বৃহত্তম সেনাবাহিনী পিএলএ-র নিয়ন্ত্রক সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের প্রধান জিনপিং এদিন বলেন, “আমি বিশ্বাস করি দেশের সেনার শৌর্য যে কোনও আক্রমণকারীকে নাস্তানাবুদ করবে। কারও ক্ষমতা নেই আমাদের হারাবে। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠিত রাখতে চিন যে কোনও মূল্য মেটাতে প্রস্তুত। “তাঁর এদিনের ভাষণে গত এক মাস ধরে ডোকলামে সেনা মোতায়েনের কোনও সরাসরি উল্লেখ না থাকলে বেজিং বরাবরই ভারতের অবস্থানকে তাদের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত বলে দাবি করে এসেছে। চিনা বিদেশমন্ত্রক অভিযোগ করেছে, ভারতীয় সেনা চিন সীমান্তে অনুপ্রবেশ করছে। এদিন ১০ মিনিটের ভাষণে চিনা প্রেসিডেন্ট বলেছেন, “বিশ্বের ইতিহাসে নয়া অধ্যায় তৈরি করতে চিনা সেনা প্রস্তুত।”
ভাষণের আগে মঙ্গোলিয়ার জুরিহেতে বৃহত্তম চিনা সেনাঘাঁটি ঘুরে দেখেন প্রেসিডেন্ট। এদিনের মতো বড় সেনা কুচকাওয়াজ বিশ্ব বহুদিন দেখেনি। চিনা টেলিভিশন ও রেডিওতে এদিনের অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচারিত গিয়েছে। একগুচ্ছ নয়া চিনা সামরিক সরঞ্জামও এদিন প্রদর্শিত হয়। দূরপাল্লার নিউক্লিয়ার ও প্রথাগত মিসাইল ছাড়াও জে-১৫ এয়ারক্রাফট ক্যারিয়র প্রদর্শিত হয় এদিনের অনুষ্ঠানে। তাঁর ভাষণে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সেনাবাহিনীকে যে কোনও মুহূর্তে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দেন। একইসঙ্গে দেশের স্বার্থে সেনা সরঞ্জাম ও অস্ত্রশস্ত্রকে আরও আধুনিক করে তোলারও আবেদন করেন। গোটা দুনিয়ায় আমেরিকার পরই প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে লালফৌজ। প্রতি বছর ১৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করা হয় পিএলএ-র জন্য।
China displays missiles in military parade pic.twitter.com/oURBBRVGha
— China Xinhua News (@XHNews) July 30, 2017
J-20 stealth jets, YJ-83 cruise missiles displayed at military parade marking 90th birthday of China’s People’s Liberation Army. #PLA90 pic.twitter.com/31KKy95hq0
— China Xinhua News (@XHNews) July 30, 2017
১৯২৭-এর পয়লা আগস্ট মাও জে দংয়ের নেতৃত্বে ‘কমিউনিস্ট পার্টি অফ চায়না’ বা সিপিসি বিশাল লালফৌজ গড়ে তোলে। এই সেনাকে নিয়ন্ত্রণ করে কমিউনিস্ট পার্টি, সরকার নয়। বিশ্বের খুব কম দেশেই সেনাকে নিয়ন্ত্রণ করে সে দেশের রাজনৈতিক দল। এদিন পিএলএ-র প্রতিষ্ঠা দিবসে পার্টিলাইনের প্রতি সেনাকে একান্ত আনুগত্য দেখানোর নির্দেশ দেন চিনা প্রেসিডেন্ট। তিনি আরও বলেন, চিনা সেনা এখন বিশ্বের অন্যতম আধুনিক ও ভয়ঙ্কর বাহিনী। প্রায় ১২ হাজার সেনা, সেনাকর্তা, ১২৯টি যুদ্ধবিমান ও ৫৭১টি সামরিক সরঞ্জাম এদিনের অনুষ্ঠানে শক্তি প্রদর্শন করে। ডোকলামে টানটান উত্তেজনার পরিস্থিতিতে চিনা সেনার এই শক্তি প্রদর্শনকে ভাল চোখে দেখছে না ভারত। তবে ডোকলাম থেকে সেনাকে একচুলও সরানো হবে না সেটাও স্পষ্ট করেছে নয়াদিল্লি। ভারত ছাড়াও উত্তর কোরিয়ার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বিগ্ন বেজিং। উত্তর কোরিয়াকে চাপে রাখতে দক্ষিণ কোরিয়ায় টার্মিনাল হাই অ্যালটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স বা থাড মিসাইল নিয়েও চাপে রয়েছে চিন।
দেখুন ভিডিও:
#XiJinping: Chinese armed forces have confidence, capability to defeat all invading enemies, safeguard world peace pic.twitter.com/Ka5atiBdu5
— China Xinhua News (@XHNews) July 30, 2017
The post আমাদের কেউ হারাতে পারবে না, লালফৌজের প্রতিষ্ঠা দিবসে হুঁশিয়ারি জিনপিংয়ের appeared first on Sangbad Pratidin.