টিটুন মল্লিক,বাঁকুড়া: প্রভাব খাটিয়ে নিজের মেয়ে মৈত্রী দানাকে কল্যাণীর এইমসে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন। এই অভিযোগেই সিআইডির জেরার মুখে বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা। আজ, শুক্রবার বেলা ১২ টার নাগাদ সিআইডির সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাঁকুড়া শহরের কানকাটা এলাকায় ওই বিজেপি বিধায়কের বাড়িতে হাজির হন। বাবার পাশে বসেই সিআইডি প্রতিনিধি দলের বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হন বিজেপি বিধায়কের মেয়ে মৈত্রীও।
সূত্রের খবর, এদিন প্রায় তিনঘণ্টা নীলাদ্রিবাবু ও তাঁর মেয়েকে জেরা করেন সিআইডির (CID) ৪ প্রতিনিধি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগেই সিআইডির তরফে এই বিজেপি বিধায়ক ও তাঁর মেয়েকে নোটিস পাঠিয়েছিল সিআইডি। এদিন সরাসরি তাঁদের বাড়িতেই হাজির হন তদন্তকারীরা। এদিনের জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে অবশ্য সাংবাদিকদের সামনে মুখ খোলেননি তদন্তকারী দলের সদস্যরা। তবে বিজেপি বিধায়কের ঘরে সিআইডি হানায় শোরগোল পড়ে যায়।
[আরও পড়ুন: শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার নামে আর্থিক ‘প্রতারণা’, কাঠগড়ায় তৃণমূল বিধায়ক রুকবানুর]
জানা গেল, এদিন নীলাদ্রিশেখর এবং মৈত্রীর জিজ্ঞাসাবাদ পর্বের একটি ভিডিওগ্রাফিও করা হয় সিআইডির তরফে। প্রভাব খাটিয়ে মেয়েকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে সিআইডির জেরা প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক। তবে এ প্রসঙ্গে তাঁর আইনজীবী শুভাশিস দে বলেন,“নীলাদ্রিশেখর দানার মেয়ে মৈত্রী দানা একটি ঠিকাদার সংস্থার অধীনে কাজ করেন। ওই ঠিকাদার সংস্থাই তাঁকে পারিশ্রমিক দেয়। উনি এইমসের কর্মী নন। বিষয়টি ভুলভাবে প্রচার করা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, প্রভাব খাটিয়ে বিজেপির দুই সাংসদ এবং দুই বিধায়ক-সহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে নদিয়ার কল্যাণীর এইমসে নিজেদের আত্মীয়দের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। আটজনের বিরুদ্ধে দায়ের হয় এফআইআর। সেই দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের ভার দেওয়া হয় সিআইডিকে। FIR-এ বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার, বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানার নাম ছিল। এইআইআর করেছিলেন শারিফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি।
[আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় বাউল শিল্পীকে ‘ধর্ষণ’, প্রাণনাশের হুমকি অভিযুক্তের]
তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্র বলছেন, “সিআইডি প্রতিনিধি তাঁদের কাজ করছেন। আমার কিছু বলার নেই। তবে যেটা বলার সেটা হল দিন কয়েক আগেই বাঁকুড়ার ওই বিজেপি বিধায়ক একটি দলীয় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছেন, আমার একটা চাকরি নিয়ে বিতর্ক কেন? তৃণমূল নেতারা হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন অফিসে হাজার হাজার লোক নিয়োগ করেছে। এই মন্তব্যে তিনি প্রভাব খাটিয়ে তাঁর মেয়ের চাকরি করে দেওয়ার প্রসঙ্গটিই স্বীকার করে নিয়েছেন।”