সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জঙ্গল সাফ করে গড়ে উঠছে বিশাল ইমারত, লাগাতার চলছে বন্যপ্রাণ ধ্বংস। এ কোনও নতুন ঘটনা নয়। তবে বন্যপ্রাণের সঙ্গে সঙ্গে এবার বিপন্ন মানুষের সবথেকে কাছের বন্ধু হয়ে উঠতে পারে যে প্রাণী অর্থাৎ সারমেয়। রাজধানীর পথেঘাটে আর দেখা যাবে না পথকুকুরদের। অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হবে তাদের। সঙ্গে করতে হবে নির্বীজকরণ। এই ঘটনায় সমস্ত মহলে চলছে নিন্দার ঝড়। থেমে নেই বিনোদুনিয়াও। বলিউড থেকে টলিউড অভিনেতা-অভিনেত্রীরা গর্জে উঠেছেন এই খবর চাউর হতেই।
এই ঘটনার পর সোশাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন বনিকন্যা জাহ্নবী কাপুর ও অভিনেতা বরুণ ধাওয়ান। দু'জনেই তাঁদের ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে এদিন ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে একই বার্তা দিয়েছেন। তাঁরা লিখেছেন, 'কেউ ওদের বলে ভয়ের কারণ অথচ আমরা যারা ভালোবাসি তাঁদের কাছে ওরা আমাদের হৃদস্পন্দন। শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির রাজপথ থেকে পথকুকুরদের সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যেতে হবে। যেখানে ওরা নিজেদের স্বাধীনভাবে বিচরণের জায়গা পাবেনা। দিনের আলোটুকু পাবে না এমনকি নিজেদের ভালোবাসার মানুষগুলোকেও কাছে পাবে না। ইট কাঠ পাথরে মোড়া শহরে ওরাই একটুকরো উষ্ণতা বয়ে নিয়ে আসত। যারা তা জানে তারা জানে। হ্যাঁ, যদিও এক্ষেত্রে নানা সমস্যা রয়েছে। সুরক্ষার বিষয়টাও জড়িয়ে রয়েছে এক্ষেত্রে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তাদের বন্দি করতে হবে। এর সনাধান হল একটাই, সঠিক চিকিৎসা, সময়মতো নির্বীজকরণ, ভ্যাকসিন দেওয়ার মতো বিষয়ে পদক্ষেপ করা এবং আরও বেশি সংবেদনশীল হওয়া।'
সরব হয়েছেন অভিনেতা ও পশু অধিকার রক্ষাকারী জন আব্রাহাম। অভিনেতা বলেছেন, 'পথকুকুর, কিন্তু ওরা সমাজের সঙ্গেই জড়িয়ে। এই শহরের সমস্ত কিছুর সঙ্গে ওরাও জড়িয়ে রয়েছে। বহু মানুষের থেকে ওরা ভালোবাসা পায়। ওদেরও নিজের মতো করে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।
হিন্দি টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী রূপালী গঙ্গোপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের এহেন নির্দেশের পর এক মন ভারি করা পোস্ট করেন অভিনেত্রী। তিনি সেখানে লেখেন, 'আমাদের সংস্কৃতিতে সারমেয় কালভৈরব মন্দিরের পাহারাদার। সেই মন্দিরে ওদের প্রতি অমাবস্যায় খাবার খাওয়ানো হয়। ওরা আমাদের পাশে থেকে বেড়ে উঠতে ও জীবনযাপন করতেই অভ্যস্ত। রাতে প্রতিটা বাড়ি থেকে দোকানপাট পাহারা দেওয়া সবেতেই ওদের একটা ভূমিকা রয়েছে।'
সরব হয়েছেন টলিউডের অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। পারিয়াদের এহেন পরিস্থিতিতে মুখর হয়েছেন অভিনেতা। ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন।'আমরা মানুষ। আমাদের মান ও হুঁশ দুইই থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু একটু খোঁজ নিয়ে দেখলে দেখা যাবে যে, মানুষ কুকুরের দ্বারা যত না আক্রান্ত হয়েছে তার থেকেও বেশি আক্রান্ত হয়েছে মানুষের দ্বারা। মানুষই মানুষের সবথেকে বড় শত্রু কুকুরেরা নয়। অবশ্যই কিছু কিছু ক্ষেত্রে কুকুরের কামড়ে বেশ কিছু জায়গায় জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে ঠিকই কিন্তু তার মানে এই নয় যে এত বড় পদক্ষেপ করতে হবে।'
