অভিরূপ দাস: আর জি করের ঘটনার পর কেউ চেয়েছেন বিচার। কেউ স্রেফ কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বাংলার বন্যা আবহে এই দ্বিতীয় শ্রেণির জনতাকে বিঁধলেন নাগরিক কবিয়াল।
প্রশ্ন তুললেন, ‘‘কদিন আগেও যারা সদলে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করেছিল, এই মুহূর্তে তারা কোথায়?’’ এই মুহূর্তে, যখন দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি। ডুবে গিয়েছে বাড়ি ঘরদোর। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জেলায় জেলায় ঘুরছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাওয়াই চটি পরে। সেই হাওয়াই চটি পরা নিয়ে কম ‘ট্রোল’ হয়নি ফেসবুকে। জঘন্য, কুরুচিপূর্ণ ভাষায় তাঁকে বিধেছেন বিরোধীরা। ফেসবুকে কবির সুমনের প্রশ্ন, ‘‘কালীঘাটের ময়না বলে যারা অনর্গল চেঁচাচ্ছিল আজ তারা কোথায়? কোন বন্যাদুর্গত এলাকায় তারা মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে? মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু চটি খুলে খালি পায়ে এক হাঁটু বন্যার পানিতে গ্রামে গ্রামে দেখে বেড়াচ্ছেন ক্ষতির বহর।’’ আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর পর শহরে দেখেছে একের পর এক আন্দোলন-মিছিল। পুরো বিষয়টি এই মুহূর্তে সিবিআই তদন্তাধীন। দ্রুত বিচার চেয়ে মিছিল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও । এরই মধ্যে কেউ চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ। এই দাবিকে সমর্থন করে এক শ্রেণির শহুরে মধ্যবিত্তর একের পর এক পোস্ট আছড়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। যার মূল হাতিয়ার ছিল ‘শকুনিপিসি’ ‘চটিবুড়ি’ জাতীয় শব্দবন্ধ। কবির সুমনের কথায়, ‘‘এই শহরের স্মার্ট ইংলিশ বলিয়ে প্রসাধন ঘষা ব্যক্তিত্বরা আজ কোথায় গেল? কোথায় গেল বিদ্রোহীরা? বন্যাদুর্গত এলাকায় তারা কেউ নেই কেন?’’
সিপিএম যে কায়দায় মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে, তাতে লজ্জা প্রকাশ করেছেন গানওয়ালা। বলেছেন, ‘‘আমার বন্ধুস্থানীয় দু’-একজন উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি ফেসবুকে লেখেন মমতা রাক্ষুসি। এরা নিজেদের মার্কসবাদী বলে পরিচয় দেয়। সিপিএম সমর্থক বলে। গা ঘিনঘিন করে।’’ পঁচাত্তরে চিরতরুণ ‘তোমাকে চাই’য়ের স্রষ্টা জানিয়েছেন, বয়স হয়েছে। এই বুড়ো বয়সে কারও কোনও কাজে লাগতে পারব না। কিন্তু এটা জেনে মরব যে এক বাঙালিকে মহিলাকে দেখেছিলাম যিনি নেতা, সাধারণ জনতার বন্ধু-অভিভাবক। কে সেই মহিলা? কবীরের বক্তব্য, ‘‘বামফ্রন্ট বিরোধী গণ আন্দোলনে মহাশ্বেতাদেবী আমায় বলেছিলেন কবীর রে, মমতার বুকে মাথা রেখে কাঁদা যায়।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অকুণ্ঠ সমর্থন জানানোর জন্য যাঁরা গায়কের সমালোচনা করেন তাঁদের জন্য গায়কের বক্তব্য, ‘‘আমার মৃত্যুর পরে আমার রেখে যাওয়া সুর-তাল-ছন্দ থেকে যাবে। ওদের থাকবে ছাই-হাড়গোড়।’’