shono
Advertisement
RG Kar Protest

স্টেথোর জোরেই ঋজু শিরদাঁড়া, পর্দার নায়ক কিঞ্জল যখন তিলোত্তমায় বিপ্লবের দিশারী

রুপোলি পর্দার 'রং দে বাসন্তী' এখন বাস্তব!
Published By: Suparna MajumderPosted: 11:06 AM Sep 04, 2024Updated: 02:05 PM Sep 04, 2024

সুপর্ণা মজুমদার: 'একজন বিনয় বসু জন্ম দেবে হাজার বিনয় বসুর', দৃপ্ত কণ্ঠের সংলাপ। সিনেমা 'বিনয় বাদল দীনেশ ৮/১২'। পরিচালক অরুণ রায়। আর বিনয় বসু? কিঞ্জল নন্দ। কী আশ্চর্য এক মিল! বিপ্লবী বিনয় বসু ছিলেন ডাক্তারির ছাত্র। আর অভিনেতা কিঞ্জলের আর এক পরিচয় তিনি চিকিৎসক। যে স্টেথো গলায় ঝুলিয়ে রোগী দেখেন, সেই স্টেথোর জোরেই 'কারার ঐ লৌহ কপাট'-এর তালা খুলতে বাধ্য হয়েছে উর্দিধারীরা। শিরদাঁড়ার এমন জোর এ জীবনকালে তো দেখিনি।

Advertisement

কিঞ্জলের সিনেমা-সিরিজের তালিকায় 'হীরালাল', 'দ্য রেড ফাইলস', 'কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন', 'নন্দিনী'। আজ এক নন্দিনীর জন্যই তো রাস্তায় নেমেছেন তিনি। বাড়িতে ছোট্ট বাচ্চা। তার জন্যই তো এ পৃথিবী বাসযোগ্য করে তুলতে হবে। দিনের পর দিন রাস্তায় কাটছে, গলা ভেঙে গিয়েছে। কথা বলতে অসুবিধা হচ্ছে। এক ঢোক জল গিলে নিয়েই চলে আসছেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। বলতে হবে, জোরাল কণ্ঠে দিতে হবে স্লোগান, চিৎকার করতে হবে 'জাস্টিস ফর আর জি কর'। লড়াই! লড়াই! বাঁচার জন্য তো এই চাই।

হঠাৎ যেন 'রং দে বাসন্তী' সিনেমার কথা মনে করিয়ে দিলেন কিঞ্জল। ভগৎ সিং, শিবরাম রাজগুরু, রামপ্রসাদ বিসমিল, আশফাকুল্লা খান, দুর্গা ভাবি আর চন্দ্রশেখর আজাদ; সবার সঙ্গে যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল ডিজে, করণ, সুখি, আসলম, সোনিয়া, লক্ষ্মণরা। আর মাধবন অভিনীত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট অজয় সিং রাঠোরের মৃত্যুই তাদের হৃদয়ে জাগিয়েছিল প্রতিবাদের আগুন। সেই কি অভয়ার প্রতীক? ভাবুন ভাবুন! 'ভাবা প্র্যাকটিস' করুন।

ছবি: শুভজিৎ মুখোপাধ্যায়

[আরও পড়ুন: আর জি কর কাণ্ডে গ্রেপ্তার হবে আরও ৪! জট কাটাতে মুখোমুখি জেরার সম্ভাবনা]

বাস্তবের নায়কদের তো কোনও মেকআপের প্রয়োজন হয় না। তারা কিঞ্জলদের মতোই তো হয়। মেরুদণ্ডটা একদম সোজা। বিপ্লবের এমন জোয়ার আনতে পারে, যার স্রোতে ভেসে যায় যাবতীয় দ্বিধা-দ্বন্দ্ব-ভয়। রাজপথে জনসমুদ্রের বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ে। "আমরা ডাক্তার। আমরা ডাক্তারি করি। সেই জায়গা থেকে এই কর্মবিরতি আমাদেরও ভালো লাগছে না", বক্তব্য কিঞ্জলের। কিন্তু বিচার তো চাই। সেই কারণেই ৪ সেপ্টেম্বর ঘরের আলো নিভিয়ে প্রদীপ-মোমবাতি জ্বালানোর অনুরোধ। কিঞ্জলের কথায়, "যে যাঁর ঘরের আলো বন্ধ করে রাস্তায় আসুন। প্রদীপ জ্বালান, মোমবাতি জ্বালান ।নিজের মতো করে প্রতিবাদ (RG Kar Protest) করুন। কারণ আমি মনে করি প্রতিবাদটা প্রথমে ঘর থেকেই শুরু হয়।"

ছবি: ফেসবুক

এদিকে চলছে আন্দোলন হাইজ্যাকের চেষ্টা। 'রাজনৈতিক হাইজ্যাক', আর জি কর নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই শব্দটিই ব্যবহার করেছিলেন মীর আফসার আলি। তা থেকে সাবধান থাকতেও বলেছিলেন। কী বলবেন? কিঞ্জলের জবাব, "প্রথমেই জানিয়েছিলাম, এই আন্দোলন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক একটি আন্দোলন এখানে রাজনীতির কোনও ছায়া নেই। রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে সমস্ত দলের মানুষ আমাদের এই ফ্রন্টে আছেন। যাঁদের মধ্যে এখনও মনুষ্যত্ব বেঁচে আছে তাঁরা এই ঘটনাকে সমর্থন করবেন না। আমরা আমাদের মতো করেই আন্দোলন চালিয়ে যাব। কোনও রাজনৈতিক দলকে ফায়দা তুলতে দেব না।"

ফায়দা তো হচ্ছে কিঞ্জল। তোমার, আমার, আমাদের সবার। যাঁরা রোজ বাসে, ট্রেনে, মেট্রোতে ভিড় ঠেলে পরিশ্রম করতে আসেন। যাঁরা কনুয়ের ঠ্যালা সামলান, চোখের অশ্লীলতাকে উপেক্ষা করতে বাধ্য হন, তাঁরা তো আরও স্পষ্টভাবে বলবেন, 'দাদা একটু ঠিক করে দাঁড়ান'। রক্তের রং লাল। ঋতুস্রাবের রংও। সেই দাগ যতই অস্বস্তির কারণ হোক। বাস্তব। ঘোর বাস্তব। তাই ডাক্তারবাবু, ডাক্তারবাবুরা। ধন্যবাদ। আপনারা আমাদের মনে প্রতিবাদের ইনজেকশন 'পুশ' করে দিয়েছেন।

ছবি: ফেসবুক

[আরও পড়ুন: প্রতিবাদে হাসি কেন? প্রশ্ন উঠতেই স্বস্তিকার পালটা, ‘পিরিয়ড হলে…’]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • কী আশ্চর্য এক মিল! বিপ্লবী বিনয় বসু ছিলেন ডাক্তারির ছাত্র।
  • আর অভিনেতা কিঞ্জলের আর এক পরিচয় তিনি চিকিৎসক।
Advertisement