সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানের জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী হুমাইরা আসগর আলির রহস্যজনক মৃত্যুতে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। করাচির প্রতিরক্ষা দপ্তরের আবাসন থেকে সম্প্রতি উদ্ধার হয়েছে তাঁর পচাগলা দেহ। পচনধরা শরীরজুড়ে পোকা দৌড়াত্ম্যে এমন অবস্থা যে সুন্দরী হুমাইরার মুখ চেনার উপায় ছিল না! একজন জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রীর আচমকাই 'উধাও' হয়ে যাওয়ার বিষয়টি কেন কাউকে ভাবাল না? ইতিমধ্যেই সেই প্রশ্নে তোলপাড় পাক মুলুকের বিনোদুনিয়া। এবার প্রকাশ্যে হুমাইরার শেষবার্তা।
মৃত্যুর আগে শেষবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু দুরেশেহওয়ারকে ভয়েস নোট পাঠিয়েছিলেন হুমাইরা আসগর আলি। সেই রেকর্ডিংয়ের হুমাইরাকে বলতে শোনা যায়, "আমি ভীষণ খুশি যে তুমি মক্কায় গিয়েছ। আমার জন্য, তোমার এই মিষ্টি বন্ধু তথা বোনটার জন্য অনেক প্রার্থনা কোরো। আমার কেরিয়ারের উন্নতির জন্যেও আল্লাহর কাছে প্রার্থনা কোরো। আমার জন্য তোমাকে প্রার্থনা করতেই হবে।" সেই বার্তাতেই হুমাইরা আসগর আলির উল্লেখ করেছেন, তিনি ট্যুরে এত ব্যস্ত ছিলেন যে বন্ধুর ফোন ধরতে পারেননি। তবে অভিনেত্রীর এহেন বার্তায় স্পষ্ট যে, তার হাতে সেরকম কোনও কাজ ছিল না। এদিকে পরিবারের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক বহু আগেই ছিন্ন হয়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছিল তাঁর পরিবার। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেই বার্তা বন্ধুকে পাঠিয়েছিলেন অভিনেত্রী। যা কিনা বর্তমানে তাঁর মৃত্যুর পর দেদারগতিতে ভাইরাল।
প্রথমটায় জানা গিয়েছিল, দু সপ্তাহ আগে মৃত্যু হয়েছে হুমাইরার। তবে সম্প্রতি তদন্তকারীদের দাবি, অভিনেত্রীর অন্তত আট-নয় মাস আগে মৃত্যু হয়েছে। দ্বিতীয় তথ্যের উপরই বিশেষ জোর দিচ্ছেন তাঁরা। কারণ বিগত ন’মাস থেকেই হুমাইরা বাড়ি ভাড়া দেননি বলে শোনা গিয়েছিল। ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় অবশ্য প্রাথমিকভাবে বাইরে থেকে ফ্ল্যাটে ঢুকে কারও খুন করার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছে পুলিশ। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জানলে শিরদাঁড়া দিয়ে হিমস্রোত বইতে বাধ্য! ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ, পচন ধরে এমন অবস্থা হয়েছিল যে হুমাইরার মুখ চেনার উপায় নেই। পেশি, ত্বকের টিস্যু সব আলাদা হয়ে গিয়ে হাড় গুঁড়ো হওয়া শুরু করেছিল। অস্থিমজ্জা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। শুধু তাই নয়, শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কালো রঙে পরিণত হওয়া শুরু করেছিল। আঙুল এবং নখে পচন ধরে অস্তিত্ব না থাকার মতো অবস্থা। বদলে বেরিয়ে এসেছে হাড়। তবে মেরুদণ্ডের অস্তিত্ব মিললেও তার সুষুম্নাকাণ্ড ছিল না। সারা শরীরে বাসা বেঁধেছিল বাদামি পোকা। বিশেষ করে চুলে ভরে গিয়েছিল পোকা।
এদিকে ৩২ বছর বয়সি অভিনেত্রীর মরদেহ নিতে অস্বীকার করেছে তাঁর নিজেরই পরিবার। হুমাইরার বাবা এবং ভাই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, "আমরা অনেক আগেই ওর সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছি। হুমাইরার দেহ নিয়ে আপনাদের যা মনে হয়, তাই করুন। আমাদের কিছু করার নেই। আমরা ওর দেহ গ্রহণ করব না।" শুধু পরিবার নয়, হুমাইরার বন্ধুত্বের পরিসরও যে খুব কম ছিল, সেটা বেশ বোঝা যাচ্ছে। অন্তত পাকিস্তানি অভিনেত্রীর শেষবার্তা থেকেই বোঝা যায়, যে তিনি একাকীত্বে ভুগছিলেন। আর সেইজন্যই মক্কায় তীর্থ করতে যাওয়া বন্ধুকে তাঁর জন্য প্রার্থনা করতে বলেছিলেন।
