সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদের ঝড়, অন্যদিকে হেমা কমিটির রিপোর্ট ঘিরে মালয়ালম চলচ্চিত্র জগতের উত্তাল পরিস্থিতি। এমন পরিস্থিতিই বাংলা ইন্ডাস্ট্রির যৌন হেনস্তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন ঋতাভরী চক্রবর্তী। রূপাঞ্জনা মিত্র, অনীক দত্ত, পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়, সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়রাও তাঁকে সমর্থন করেন। এমন অবস্থায়, টলিউডে কাজের পরিবেশ ঠিক রাখার দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছে উইমেনস' ফোরাম ফর স্ক্রিন ওয়ার্কাস (Womens' Forum for Screen Workers+)। সংস্থার নামের পাশে একটি প্লাস চিহ্নও রয়েছে।
Charter of Demands by WFSW+ (1)
ইম্পা, আর্টিস্ট ফোরাম, ফেডারেশন ও টেলি অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর সেখানে আর জি কর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সিনেমা, সিরিয়াল ও ওয়েব প্ল্যাটফর্মে কাজ করা মহিলাদের যৌন হেনস্তার অভিযোগ কথা জানানো হয়েছে। চিঠিতে লেখা, "প্রত্যেকদিন আমাদের নানা ভাবে যৌন হেনস্তার শিকার হতে হয়। পাশাপাশি নিয়মিতভাবে নারী, শিশু এবং প্রান্তিক পরিচয়ের মানুষদের নির্যাতনের কথাও শোনা যায়। তবুও, আমাদের কাছে এমন কোনও কার্যকরী সহায়তা ব্যবস্থা নেই যেখানে ভারতীয় আইন অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ, নিষেধাজ্ঞা এবং প্রতিকারের দাবি জানাতে পারি।" অভিযোগ, এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও আলাপ আলোচনাও করা হয় না।
[আরও পড়ুন: জেলে দর্শনের ‘ফাইভস্টার ট্রিটমেন্ট’, গ্যাংস্টারের সঙ্গে খোশগল্প কন্নড় স্টারের! ভাইরাল ছবি-ভিডিও ]
এই সমস্ত বিষয়ের প্রতিকারের দাবিই জানানো হয়েছে চিঠিতে। প্রশ্ন করা হয়েছে, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যৌন হেনস্তার অভিযোগ জানানোর জন্য কোনও প্রতিষ্ঠান কি রয়েছে? পকসো আইনের শর্তগুলো কি মেনে চলা হচ্ছে? ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের জন্য যথাযথ ভাবে ইন্টিমেসি কোর্ডিনেটর বা ডিরেক্টর নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছে। লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি যৌন হেনস্তার অভিযোগ যেখানে জানানো যাবে এমন ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন চালু করার কথাও বলা হয়েছে।
চিঠিতে অপর্ণা সেন, শাশ্বতী গুহঠাকুরতা, অনুরাধা রায়, শকুন্তলা বড়ুয়া, চৈতালী দাশগুপ্তর মতো বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর নাম যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, দামিনী বেণী বসু, সোহিনী সরকার, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, দেবলীনা দত্ত, প্রিয়াঙ্কা সরকারদের নাম। এই প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে দামিনী জানান, খুবই সাধারণ কয়েকটি দাবি জানানো হয়েছে এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই কয়েকটি প্রশ্ন করা হয়েছে। গোটা দেশে যা পরিস্থিতি। তার উপরে হেমা কমিটির রিপোর্ট। এমন পরিস্থিতিতে সকলের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। একজন ডাক্তার খুন হওয়ার পর তাঁকে ভিক্টিম ব্লেম করতে ছাড়ছে না লোকজন। এমন অবস্থায় স্টুডিওতে কোনও অভিনেত্রী খুন হলে, তাঁকে যে স্লাট শেমিং করা হবে না, সেটা নিশ্চিত করে বলা তো যায় না। তাই কথাগুলো বলা প্রয়োজন।