সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত সপ্তাহ থেকে রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপোড়েন হয়েছে অনেক। যথাযথ, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে তাতে কার্যত ইতি টেনে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। কেন্দ্রীয় নির্দেশ খারিজ করে ৩১ মে অবসর নিয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় (Alapan Bandopadhyay)। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে নিজের মুখ্য উপদেষ্টা পদে এনেছেন। এভাবেই প্রাথমিকভাবে আলাপনকে নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপোড়েন শেষ হয়েছে। কিন্তু জিইয়ে রয়েছে তরজা। বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে শোকজ নোটিস পাঠিয়েছে কেন্দ্র। তিনদিনের মধ্যে জবাব তলব করা হয়েছে।বুধবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ওই প্রসঙ্গ শেষ। আর কোনও কথা বলার জায়গা নেই।
সোমবার থেকে নতুন দায়িত্ব নিয়ে বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর পাশের চেয়ারে। তিনি এখন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা। আর তাঁর এই নতুন পদে আসার পরই কেন্দ্রের তরফে চাপ আরও বাড়িয়ে আলাপনকে শোকজ করা হয়েছে। তবে এ নিয়ে আরও কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার নবান্নে সাংবাদিকরা আলাপন ইস্যু তোলামাত্রই কার্যত থামিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”আলাপন চ্যাপ্টার ইজ ক্লোজড। আর কোনও প্রশ্ন নয় এ নিয়ে। উনি অবসর নিয়েছেন। রাজ্য সরকার ওঁর পাশে থাকবে।” বুঝিয়ে দিলেন, এবার এই বিষয়টা নিয়ে আর প্রকাশ্যে কেন্দ্রের সমালোচনা বা অন্য কোনওভাবে বার্তা দেবেন না তিনি। বিষয়টি নিয়ে আইনি পথেই এগোবেন। এমনিতেও কেন্দ্রের তরফে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠানো শোকজ নোটিসের উত্তর তিনদিনের মধ্যে তাঁকে দিতে হবে। তারপর কোন দিকে মোড় নেয় ঘটনাপ্রবাহ, সেদিকে নজর সব মহলের।
[আরও পড়ুন: ‘অভিষেক এখনও নাবালক, ওঁর কথার উত্তর দেব না’,আলাপন ইস্যুতে মন্তব্য শুভেন্দুর]
এদিকে, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবসরের পরও তাঁকে কেন্দ্রের শোকজ নোটিস পাঠানো নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী আবু সোহেল। এ রাজ্যে ‘যশ’ পরবর্তী পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে কলাইকুন্ডায় যখন প্রধানমন্ত্রী বৈঠক ডেকেছিলেন, সেখানে আলোচনায় ছিলেন না তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তাকে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে শোকজ করা হয়েছে। এরপর বুধবার দায়ের করা মামলায় আইনজীবীর বক্তব্য, ১৯৫৪ সালের আইপিএস, আইএএস নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যে কর্মরত কোনও আমলাকে এভাবে বদলি করতে হলে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। তা করা হয়নি বলে অভিযোগ তাঁর। মামলার পরবর্তী শুনানি কবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। সবমিলিয়ে, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে অবসরের পর নতুন পথচলা শুরু করলেও, পূর্বের টানাপোড়েন এড়ানো যাচ্ছে না।