সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টিকিট বিলিকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের অন্দরে তুঙ্গে কাজিয়া৷ আগে থেকেই শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে রাজ্যস্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ জমছিল৷ এবার সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটল সরাসরি হাইকমান্ডের চৌকাঠে৷ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রাজস্থান ও তেলেঙ্গানায় কংগ্রেসের টিকিট বিলির প্রক্রিয়ায় অসন্তুষ্ট রাজ্য নেতাদের একাংশ৷ পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর হয়ে ওঠে যে, কোনও উপায় না পেয়ে অবশেষ কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভে দেখালেন তাঁরা৷
[সবরীমালা ইস্যুতে উত্তাল কেরল, বিমানবন্দরে মহিলা সমাজকর্মীকে ঘিরে বিক্ষোভ ]
সম্প্রতি রাজস্থান, তেলেঙ্গানার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে কংগ্রেস৷ সেই ঘোষণার পর থেকেই অসন্তোষের প্রকাশ করতে থাকেন এই দুই রাজ্যের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ৷ তাঁদের অভিযোগ, প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হয়েছে৷ অনেক যোগ্য প্রার্থী, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে দলের হয়ে কাজ করছেন, তাঁদের প্রার্থী করা হয়নি৷ উঠেছে স্বজনপোষণেরও অভিযোগ৷ এবার এই একগুচ্ছ অভিযোগই হাইকমান্ডের কান পর্যন্ত পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন তেলেঙ্গানা ও রাজস্থানের বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতা ও কর্মীরা৷ সেই লক্ষ্যে, বৃহস্পতিবার তুঘলক রোডে রাহুল গান্ধীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা৷ বিক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে৷ গ্রেপ্তার করা হয় বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা-কর্মীকে৷
রাজস্থান কংগ্রেসের এক বিক্ষুব্ধ নেতা বলেন, “আমি ওনাকে (রাহুল গান্ধী) বলেছিলাম, তাঁদেরই টিকিট দিন, যাঁরা দলের জন্য রক্তপাত করেছে৷ কিন্তু তেমনটা হয়নি৷” একই সুর শোনা যায় হায়দরাবাদের প্রাক্তন মেয়র তথা কংগ্রেস নেত্রী বান্দা কার্তিকা রেড্ডি ও তাঁর স্বামী চন্দ্র রেড্ডির গলাতেও৷ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তেলেঙ্গানা থেকে কোনও আসনেই প্রার্থী করা হয়নি বান্দা রেড্ডিকে৷ সেই ক্ষোভই শীর্ষ নেতৃত্বের বাসভবনের সামনে উগরে দিলেন তিনি ও তাঁর স্বামী৷ গ্রেটার হায়দরাবাদের প্রাক্তন এই মেয়র জানান, “গত ৩০ বছর ধরে প্রাণ দিয়ে দল করছি আমি৷ তারপরেও আমাকে টিকিট দেওয়া হয়নি৷” এই দম্পতিকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ কেবল এই দুই রাজ্যেই নয়, টিকিট বিলি ও প্রার্থী বাছাইকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রদেশেও দুই কংগ্রেস শীর্ষ নেতার মধ্যে বিরোধ বাধে৷ রাহুল গান্ধীর সামনেই বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও দিগ্বিজয় সিং৷ পরে তিন সদস্যের বিশেষ কমিটির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়৷
[জেহাদি নিশানায় আরএসএস শাখা, উত্তর ভারতে সক্রিয় জঙ্গি মুসা]
পাশাপাশি, কংগ্রেসের গোদের উপরে বিষফোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের ‘হিন্দুত্ব-কার্ড’৷ বিজেপিকে টক্কর দিতে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচন থেকে যে ‘টেম্পল-রান’-এর রাজনীতি শুরু করেছিলেন সভাপতি রাহুল গান্ধী৷ সেই কৌশলই এবার বুমেরাং হয়েছে৷ তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ের মতো রাজ্যগুলি ভোটের মুখে দল ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন একগুচ্ছ সংখ্যালঘু নেতা। নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের অন্দরের এই ডামাডোল পরিস্থিতি ফায়দা তুলতে কোনও কসুর করছে না প্রতিপক্ষ বিজেপি৷ সূত্রের খবর, কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধদের কাছে টানার কাজ শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির৷ তলে তলে যোগাযোগ করা হচ্ছে তাঁদের সঙ্গে৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, এখনই সামাল না দিলে এই পরিস্থিতি প্যাঁচে ফেলতে পারে রাহুল ব্রিগেডকে৷ শেষ হয়ে যেতে পারে তাঁদের উনিশে সরকার গড়ার স্বপ্ন৷
The post কংগ্রেসের অন্দরে তীব্র অসন্তোষ, রাহুলের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ কর্মীদের appeared first on Sangbad Pratidin.