shono
Advertisement

‘টের পাচ্ছি, বিপদ কাকে বলে’, বলছেন করোনা কবলিত আমেরিকা প্রবাসী ভারতীয়

নিজের অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করলেন সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে। The post ‘টের পাচ্ছি, বিপদ কাকে বলে’, বলছেন করোনা কবলিত আমেরিকা প্রবাসী ভারতীয় appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 04:48 PM Mar 21, 2020Updated: 04:48 PM Mar 21, 2020

ত্রাসের নাম নোভেল করোনা ভাইরাস। এই মুহূর্তে বিশ্ববাসীর ভয়ের এক ও একমাত্র কারণ। চিন, ইরান থেকে ইউরোপ, আমেরিকা – এক জীবাণুর কামড়ে কুপোকাত সকলে। উন্নত, শক্তিধর দেশগুলিও একে কাবু করতে ব্যর্থ। প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে চরম আশঙ্কায়। কেমন সেই পরিস্থিতি, সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে লিখলেন দেবলীনা সেনগুপ্ত দে

Advertisement

আমি গত ৫ বছর ধরে আমেরিকায় আছি। প্রথমে কাজের সূত্রে এসেছিলাম। এখন পরিবার নিয়ে থাকি। এক সময়ে রিসেশনের জন্য বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলিতে চাকরির সংকট দেখা দিলেও, তা থেকে বেরিয়ে এসেছে সংস্থাগুলো। আমার মতো আরও অনেক ভারতীয় কর্মী নিশ্চিন্তে কাজ করছেন এখানে। তো ওই সময়েও আমরা এতটা চিন্তিত হয়ে পড়িনি, যতটা চিন্তা হচ্ছে এখন।

করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় গোটা আমেরিকায় ন্যাশনাল এমার্জেন্সি জারি হয়েছে। সকলে ঘরবন্দি। সবচেয়ে অসুবিধের বিষয়, এই মুহূর্তে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস – হ্যান্ড সানিটাইজার, মাস্ক, টিস্যু এসব অমিল। সেই মার্চের প্রথম দিন থেকে। আপাতভাবে মনে হতে পারে যে প্রথম বিশ্বের দেশে এ ধরণের জরুরি পরিষেবা পাওয়া কোনো ব্যাপারই না। কিন্তু বাস্তবে তা নয়।

[আরও পড়ুন: এবার হোয়াইট হাউসে করোনার হানা, আক্রান্ত কর্মীকে নিয়ে আতঙ্কে আধিকারিকরা]

যাবতীয় অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্রের বেশিরভাগটা মেডিক্যাল এমারজেন্সির জন্য সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। তারপর যেটুকু আছে, তা স্টোর থেকে কিনতে গিয়ে নাকানিচোবানি খেতে হচ্ছে আমাদের। ভোর হতেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্টোরের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানো। এখানকার স্টোরগুলো কম সময়ে খোলা থাকছে। ক্রেতা পিছু বাটার, দুধ, পাঁউরুটি এবং নিত্যদিনের খাবার জিনিস কেনার পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এখানে আবার আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনাও আছে। তাপমাত্রা ওঠানামা করে, তবে সামগ্রিকভাবে শীতের ছোঁয়া থাকে। মাঝেমধ্যে বৃষ্টি। এই পরিবেশে স্টোরের সামনের লাইনে দাঁড়িয়ে টের পাচ্ছি, বিপদ কাকে বলে…

এখানে বেশিরভাগ মানুষ প্রাইভেট গাড়িতে যাতায়াত করেন। তাঁরা প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন না। আমি থাকি নিউ জার্সি, অফিস নিউ ইয়র্কে। সাধারণত পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যাতায়াত করি। অন্যান্য দিন দুটো ট্রেন পালটে বাড়ি থেকে অফিস পৌঁছতে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। এমারজেন্সি জারি হওয়ার আগে পর্যন্ত স্রেফ করোনা আতঙ্কেই মানুষজন এত কম বাইরে বেরিয়েছেন, যে অফিসের ব্যস্ত সময়েও লোকাল ট্রেনে যাত্রীর সংখ্যা ৯০ শতাংশ কমে গিয়েছে! রাত আটটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত রাস্তায় বেরনো একেবারে নিষিদ্ধ।

[আরও পড়ুন: স্ত্রীকে লুকিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে ইটালি ভ্রমণ, করোনায় আক্রান্ত যুবক]

আমেরিকায় এই মুহূর্তে করোনা পরিস্থিতি মোটেই সুবিধাজনক নয়। খাস হোয়াইট হাউসের এক কর্মী শুনেছি করোনা পজিটিভ। মৃতের সংখ্যা হু হু করে বেড়ে চলেছে। তবে সবটাই এত হতাশাজনক নয়। এখানকার স্বাস্থ্যকর্মী এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যতটা সম্ভব পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমার মেয়ের সাড়ে চার বছর বয়স। ও যে স্কুলে পড়ে, সেখানে অনলাইন ক্লাস চলছে। তবে স্কুল থেকে ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজনমতো খাবার এবং মেডিক্যাল সাপ্লাই দেওয়া হচ্ছে। তাই ছোটদের নিয়ে চিন্তা একটু কম। কিন্তু নিজেদের সুরক্ষার কথা তো নিজেদেরই ভাবতে হচ্ছে। ভাইরাস সংক্রমণ না হলেও, আমাদের মধ্যে তীব্র ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে ওই জীবাণু।

The post ‘টের পাচ্ছি, বিপদ কাকে বলে’, বলছেন করোনা কবলিত আমেরিকা প্রবাসী ভারতীয় appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement