নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: কড়া নিরাপত্তায় কর্ণাটকে শুরু গণনা। মানুষের রায় পৌঁছে গিয়েছে গণনা কেন্দ্রে। প্রথমেই শুরু হয়েছে পোস্টাল ব্যালটের ভোটের গণনা। সকাল আটটা থেকে শুরু হয়েছে ভোট গোনার কাজ। নিরাপত্তার জন্য প্রায় পঞ্চাশ হাজার পুলিশ মোতায়েন রয়েছে গোটা রাজ্যে।
[১৯ দিনের বিরতি, কর্ণাটক নির্বাচনের পরই বাড়ল পেট্রল-ডিজেলের দাম]
দাক্ষিণাত্যে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর ভাগ্য নির্ধারণ। একটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল নিয়ে জাতীয় রাজনীতি আলোড়িত হওয়ার ঘটনা বিরল। তবে জাতীয় রাজনীতিতে অতি তাৎপর্যপূর্ণ কর্ণাটক ভোটের গণনা ও ফল প্রকাশ। কারণ, এই ফলাফলেই অনেকটা নির্ভর করবে আগামী লোকসভা নির্বাচনের ফলও। রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে, না কি দক্ষিণে বিজেপির ‘পদ্ম’ ফুটবে এই দুইয়ের মধ্যে কী হতে চলেছে তার জবাব মিলবে মঙ্গলবারই। বুথ ফেরত সমীক্ষায় নির্বাচনের ফল ত্রিশঙ্কু হওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। কোনও কোনও সমীক্ষক সংস্থার দাবি, কংগ্রেস সর্বাধিক আসন পেতে চলেছে, তো আবার কোনও কোনও সংস্থা এগিয়ে রেখেছে বিজেপিকে।
তবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজ্যের লড়াইয়ের ময়দানে থাকা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার দল জেডিএসই রাজ্যে সরকার গঠনে ‘কালো ঘোড়া’ হবে বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের ফল নিয়ে রাজধানীর রাজনৈতিকমহলে সোমবার দিনভর আলোচনা চলেছে। কংগ্রেস ও বিজেপি দুই শিবিরই নির্বাচনের ফলাফলের পরে সরকার গঠন করার জন্য কী কী পদক্ষেপ করা হতে পারে, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া চলেছে। এদিন দিল্লিতে বিজেপির দপ্তরে কেন্দ্রীয় পদাধিকারীদের বৈঠকেও কর্ণাটকের সম্ভাব্য ফল নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। কংগ্রেস নেতারাও ঘনঘন বৈঠক করেছেন। রাজধানীর এআইসিসি অফিসের সামনে যজ্ঞও করেছেন কংগ্রেস কর্মীরা।
[বিজেপিকে রুখতে কর্ণাটকে বিরোধী জোট, ‘কিংমেকার’ জেডিএস]
এদিকে, নির্বাচনের ফলাফলে আজ যদি সত্যিই জেডিএস ‘কালো ঘোড়া’ হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে কংগ্রেসের সরকার গড়ার সম্ভাবনা প্রবল। কারণ, এদিনই জেডিএসের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী না করা হলে কংগ্রেসের হাত ধরতে তাদের কোনও আপত্তি নেই। আবার সিদ্দারামাইয়াও স্বয়ং জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় বসানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে তিনি প্রস্তুত। সেক্ষেত্রে অন্য কোনও দলিত নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের নাম উঠে আসছে। জেডিএসের অন্দরে কংগ্রেসের হাত ধরা নিয়ে মতভেদ ছিল ঠিকই, কিন্তু এবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবগৌড়াই যে নেবেন, তা সকলেরই জানা। সেজছেলে কুমারস্বামী বিজেপির দিকে ঝুঁকে থাকলেও, বিজেপির হাত ধরতে রাজি নন দেবগৌড়া। খাড়গে বা অন্য কোনও দলিত নেতা মুখ্যমন্ত্রী হলে তাতে জেডিএসের কোনও আপত্তি নেই। সিদ্দারামাইয়ার ক্ষেত্রে আপত্তির কারণ, এক সময়ে দেবগৌড়ার সঙ্গে মতান্তরের জেরেই জেডিএস ছেড়ে কংগ্রেসে আসেন তিনি।
কংগ্রেস জেডিএসের হাত ধরে ক্ষমতায় এলে দলিত মুখ্যমন্ত্রী করা হবে বলে যেমন শোনা যাচ্ছে, তেমনই উপমুখ্যমন্ত্রী পদটি জেডিএসকে ছাড়া হতে পারে। আবার, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার থেকে বিজেপি যদি কয়েকটি আসন কম পায় তাহলে নির্দল বিধায়কদের নিয়ে বিজেপিও সরকার গঠন করে ফেলতে পারে বলেও জল্পনা। এর আগে, গোয়া এবং মণিপুরের মতো রাজ্যে যেভাবে কম আসন পাওয়া সত্ত্বেও বিজেপি ক্ষমতা দখল করতে সমর্থ হয়েছিল এবারেও সেই একই চিত্র অপেক্ষায় কি না সেদিকেও নজর থাকছে। দিনভর এই সমস্ত হিসেবই নিকেশ চলছে।
[পঞ্চায়েতে নজর বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের, দিলীপকে ফোন রাজনাথের]
The post কড়া নিরাপত্তায় শুরু গণনা, কর্ণাটকে আজ ভাগ্য নির্ধারণ মোদি-রাহুলের appeared first on Sangbad Pratidin.