শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: করোনার (coronavirus) দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে কার্যত লকডাউন রাজ্যে। রোজগার সম্পূর্ণ বন্ধ। দিন কাটছে আর্থিক অনটনে। যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে স্ত্রী ও সন্তানদের গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী বাড়ির কর্তা। উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) হেমতাবাদের ভরতপুরে দগ্ধ হয়ে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হল। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
শনিবার উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া চৌনগর পঞ্চায়েতের ভরতপুর এলাকায় মর্মান্তিক ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এদিন সকাল সাতটা নাগাদ পরিবারের চার জনকে উদ্ধার করে হেমতাবাদের পুলিশ। ঘটনাস্থলেই দুই শিশুসন্তান-সহ বাবা, মায়ের মৃত্যু হয়েছে। আগুনে ঝলসে (Burning) যাওয়া দশ বছরের শিশুকন্যার তখনও প্রাণটুকু ছিল। কিন্তু আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভরতির কিছুক্ষণের মধ্যে ওই কন্যাসন্তানেরও মৃত্যু হয়েছে। নিশ্চিহ্ন গোটা পরিবার।
[আরও পড়ুন: হিংসার আগ্নেয়গিরিতে বসে রাজ্য, নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে তোপ ধনকড়ের]
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর মুখে পড়েছে বছর বত্রিশের রামচন্দ্র ভৌমিক, তাঁর স্ত্রী শংকরী ভৌমিক, বছর পাঁচেকের কন্যা সরস্বতী ভৌমিক এবং তিন বছরের ঝর্না ভৌমিক। আর দশ বছরের রানি ভৌমিকের রায়গঞ্জ মেডিক্যাল হাসপাতালে মৃত্যু হয়। নারকেলের ঝাড়ু তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে সংসার চলত। রায়গঞ্জ পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, “একই পরিবারের তিন শিশুসন্তান-সহ বাবা, মায়ের আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে। দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। মৃতের পরিবারের কোনও সদস্যই আর জীবিত নেই।”
[আরও পড়ুন: রাজ্যে কড়া নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও আগামী ১৪ দিন মিলবে এসব পরিষেবা, দেখে নিন একঝলকে]
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, সম্ভবত অভাবের তাড়নায় গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এক প্রতিবেশীর বক্তব্য, চিৎকারের আওয়াজ শোনা গিয়েছিল। ভোরে সবার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারপর জানাজানি হতেই প্রতিবেশীরা ভৌমিক বাড়িতে এসে দেখে, সকলেই অগ্নিদগ্ধ। পুলিশে খবর পাঠানো হলে পুলিশ দেহগুলি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। রানি কিছুক্ষণ মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে শেষমেশ হার মানে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হেমতাবাদ থানার পুলিশ।