শেখর চন্দ, আসানসোল: সরকারি আইনজীবী চাইলেন ৫ দিনের পুলিশি হেফাজত। জিতেন্দ্র তিওয়ারির আইনজীবী চাইলেন জামিন। দু’জনই দু’জনের আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করেন। টানা এক ঘণ্টা চল্লিশ মিনিটের শুনানিতে টানটান উত্তেজনা এজলাসে। অবশেষে জিতেন্দ্রকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ আদালতের।
এদিন শুনানির শুরুতেই বলতে উঠে সরকারি আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ কেনও তিনি আরও পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজত চাইছেন তার স্বপক্ষে যুক্তি দেখান। তিনি বলেন, কম্বল বিতরন অনুষ্ঠানে যে বিদ্যুতের বিল দেখানো হয়েছে তা ভুয়ো। ঐ দিন যে ডেকোরেটর কাজ করেছিল তার লাইসেন্স নেই। ৩০০০ কম্বল কিনে ৬০০০ কুপন বিলি করা হয়েছিল। তদন্তে নেমে এরকমই নানা তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তিনি বলেন, পুলিশি হেফাজত শুধু কোনও জিনিস উদ্ধারের জন্যই নয় ঘটনার অন্তর্নিহিত কারণ জানতেও পুলিশি হেফাজত নেওয়া হতে পারে। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, তদন্ত বিনা বাধায় অগ্রসর হবে। তাই তদন্তের স্বার্থেই জিতেন্দ্রকে আবার পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
[আরও পড়ূুন: ‘বাহবা নন্দলাল/১১৪৯ টাকার গ্যাসে ফুটছে বিনা পয়সার চাল’, কেন্দ্রকে বিঁধতে নতুন স্লোগান মমতার]
গতকাল জিতেন্দ্র দাবী করেন যে আটদিন পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন মোট দু’ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ বলেন, “কতক্ষণ জেরা করবে তা ঠিক করে তদন্তকারী সংস্থা। এটা অন্য কেউ ঠিক করতে পারে না। তাছাড়া পুলিশি হেফাজতের আবেদনে কি লেখা ছিল যে তারা প্রতিদিন চব্বিশ ঘণ্টা করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে? প্রশ্ন তোলেন তিনি। এর বিরোধিতা করতে নেমে জিতেন্দ্রর আইনজীবী শেখর কুণ্ড বলেন, ইলেকট্রিক বিল, ডেকরেটারের লাইসেন্স এগুলো অজুহাত। রাজনৈতিক কারণে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁর মক্কেলকে পুলিশ হেফাজত চাইছে। এর ফলে তাঁর মক্কেলকে অপদস্থ করতে চাইছে পুলিশ।
বিরোধিতা করতে নেমে সরকারি আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ বলেন, সুপ্রিম কোর্টে অন্য তিনজনকে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত গ্রেপ্তার না করার নির্দেশ দিয়েছে। জামিন দেননি। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে তদন্তের স্বার্থে তার জামিন খারিজ করে পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজত দেওয়া হোক। শুনানির শেষলগ্নে বলতে ওঠেন জিতেন্দ্র নিজে। তিনি বলেন, একটু ভাল করে বিষয়টি নিয়ে ভাবা হোক। একটা অনুষ্ঠানে দুর্ঘটনার কারণে তিনজন মারা যান। এদের মধ্যে দু’জন ঐ এলাকার আরেকজন অন্য জায়গার। যে বাইরের তার পরিবারের একজনকে দিয়ে ভুল বুঝিয়ে মামলা করানো হল। অনুষ্ঠান যে জায়গায় হয়েছে, সেখানের যে দু’জন মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিবারের কেউ মামলা করলেন না। কারণ, তারা জানত ঘটনাটি নিছকই দুর্ঘটনার। জিতেন্দ্র আরও বলেন, “আমার পরিবারকে বিভিন্নভাবে অপদস্থ করা হয়েছে। ছটপুজোয় হেফাজতে থাকতে হল। রামনবমীর মিছিলে তিনি প্রতি বছরই অংশগ্রহণ করেন, অনুগ্রহ করে রায় দেবার আগে এই কথাগুলোও বিবেচনা করা হোক।