রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: অলিগলি থেকে উধাও পদ্ম। স্কোয়াডে ফিরছে লাল ঝান্ডা। পঞ্চায়েত নির্বাচন বিজেপিকে পিছনে ফেলে রাজ্যে দ্বিতীয় হওয়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছে সিপিএম। আর তাই আবার সেই পুরনো জনসংযোগের কৌশল আলিমুদ্দিনের। রাজপথে মিছিল করছে সিপিএম, সভাও হচ্ছে। জনসমাগমও খুব একটা খারাপ হচ্ছে না। কিন্তু পৌঁছতে হবে একেবারে ভোটারদের দরজায়। পাড়ায় পাড়ায় তুলতে হবে স্লোগান। মিছিল-মিটিংয়ের মাধ্যমে পার্টির কথা, কর্মসূচি, দাবিদাওয়া মানুষের ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। তাই রাজপথ ছেড়ে এবার অলিগলি-মহল্লায় নজর দিতে চাইছে আলিমুদ্দিন। সেই কারণেই আবার পাড়ায় পাড়ায় সক্রিয় হতে চলেছে লাল ঝান্ডার স্কোয়াড।
এই স্কোয়াড কী? পার্টির নয়া প্রজন্মের অনেকেই এই স্কোয়াড শব্দটির সঙ্গে সেভাবে পরিচিত নন। একটা সময় সিপিএমের অভিধানে এই স্কোয়াড শব্দটি চালু ছিল। রাজ্যে ক্ষমতায় থাকাকালীন শেষ দিকে এই স্কোয়াড আর দেখা যেত না। স্কোয়াড হল, খুব বেশি হলে ২০ জন কর্মী। যাঁরা হাতে কাস্তে-হাতুড়ি-তারা’র লাল ঝান্ডা নিয়ে পাড়ার মধ্যে অলিগলি কিংবা কারও বাড়ির উঠোন দিয়ে স্লোগান তুলে চক্কর মারবে। সেটাকেই বলা হত স্কোয়াড। পাড়ায় পার্টিটা রয়েছে, সেটা জানান দেওয়াই ছিল উদ্দেশ্য। সেই স্কোয়াড ফরম্যাটে আবার ফিরতে চাইছে পার্টি। দু’শো-আড়াইশো লোকের দরকার নেই, ২০-২৫ জন কর্মী মিলে এলাকায় ঘুরলে তা অনেক বেশি কার্যকর হবে।
[আরও পড়ুন: সম্পত্তি হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা! বিবাহ বিচ্ছেদ আটকাতে স্ত্রীকে ‘অপহরণ’ স্বামীর]
রাজ্য সিপিএমের এক নেতার কথায়, ব্রিগেড সমাবেশ কিংবা জেলায় জেলায় কেন্দ্রীয় সমাবেশ হতেই পারে। সেখানে হয়তো লোকও ভরবে। কিন্তু তার থেকেও বেশি কার্যকর এই পাড়ায় পাড়ায় মিছিল। কারণ, পার্টি ক্ষমতাচুত্য হওয়ার পর পাড়ায় পাড়ায় সিপিএমের (CPM) সংগঠন তলানিতে এসে ঠেকেছে। বুথে বুথে লোকের অভাব। তাই শাখা কমিটিগুলি এবার বুথে সংগঠন শক্তিশালী করার চেষ্টা শুরু করেছে। অর্থাৎ, নেতা-কর্মীদের বুথমুখী করতে হবে। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি সাংগঠনিক দুর্বলতা ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত। বুথে বুথে বিজেপির লোক নেই। বিজেপির সেই শূন্য স্থানের দখল নিতে তৎপর সিপিএম। তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগে মানুষের দরজায় যেতে চাইছে আলিমুদ্দিন। দলের ভেঙে পড়া সংগঠনকে গুছিয়ে নিতে চাইছেন মহম্মদ সেলিম-সুজন চক্রবর্তীরা (Sujan Chakraborty)।
পার্টির চিঠিতেও বলা হয়েছে, সংগ্রাম ও সাংগঠনিক কাজের প্রধান অভিমুখ পার্টির শাখা, বুথ পার্টির টিম, বুথ কমিটি গড়ে তোলা ও সেগুলির সাংগঠনিক ক্ষমতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করে তা প্রতিরোধ স্তরে উন্নীত করা। বুথ সংগঠনকে স্থায়ী সংগঠনের রূপ দেওয়ার কাজে যে গুরুতর ঘাটতি রয়েছে তা পার্টির চিঠিতেই স্বীকার করা হয়েছে। পার্টির চিঠিতে বলা হয়েছে, লক্ষ্যের বেশি বুথ সংগঠন গড়ে তোলার উপরই নির্ভর করছে পার্টির সাফল্য।