সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরেই কাশ্মীরের কিস্তওয়ার থেকে গ্রেপ্তার হল জামাত-ই-ইসলামি (কাশ্মীর)-র তিন সদস্য। দেশদ্রোহিতায় অভিযুক্ত এই সংগঠনটির ৭০টির বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সিল করে দেওয়ার পাশাপাশি নগদ ৫২ কোটি টাকাও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শ্রীনগরে থাকা এই নিষিদ্ধ সংগঠনটির অন্য অ্যাকাউন্টগুলির উপরও নজর রাখা হচ্ছে। এদিকে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে আজ, শনিবার শ্রীনগরের রাস্তায় নেমে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি ও তাঁর দলের কর্মী-সমর্থকরা। বিষয়টি কেন্দ্র করে নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় তাঁদের। এর ফলে যথেষ্ট উত্তেজনাও ছড়ায় ওই এলাকায়।
এই সপ্তাহেই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনটির শীর্ষনেতাদের শ্রীনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আটক করা হয়েছে এই সংগঠনের ২০০ জন নেতা-কর্মীকে। জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় থাকা জামাত-ই-ইসলামির অফিসগুলো সিল করে দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে তাদের কী কী সম্পত্তি আছে তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা।
২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঢুকে রাতভর তল্লাশি চালান পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার আধিকারিকরা। গ্রেপ্তার করা সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও জেলা স্তরের নেতাদের। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি বিষয়টির তীব্র নিন্দা করে বিবৃতি দেওয়া হয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সৈয়দ আলি শাহ গিলানির সংগঠন তেহরিক-ই-হুরিয়তের শাখা সংগঠন হিসেবে পরিচিত জামাত-ই-ইসলামির পক্ষ থেকে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছিল, জম্মু ও কাশ্মীরে উত্তেজনা বাড়ানোর লক্ষ্যে খুব ভালভাবে পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। যেভাবে নিরাপত্তারক্ষীরা ৩৫-এ আর্টিকল নিয়ে আদালতের শুনানির আগে জামাত-ই-ইসলামির প্রচুর সদস্যকে গ্রেপ্তার ও আটক করেছে তাকে এর পিছনে কোন দূরভিসন্ধি আছে। তবে আর্টিকল ৩৫-এর মধ্যে কোনও পরিবর্তন জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষ মেনে নেবে না।
[পাক সেনার গুলিতে পুঞ্চে নিহত ৯ মাসের শিশু-সহ একই পরিবারের তিনজন]
যদিও তাদের এই বিবৃতিকে গুরুত্ব না দিয়েই ২৪ তারিখে জামাত-ই-ইসলামির চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ ফৈয়াজ-সহ ১০০ জনেরও বেশি শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং কর্মীকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়। গোটা কাশ্মীর উপত্যকা জুড়ে যখন জামাত-ই-ইসলামির জম্মু ও কাশ্মীর শাখার বিভিন্ন অফিসে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ঠিক তখনই শক্তিশালী আইইডি বিস্ফোরণ হল পুলওয়ামার গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তায়। সূত্রের খবর, এই বিস্ফোরণেরও লক্ষ্য ছিল নিরাপত্তা রক্ষীরা। তবে সৌভাগ্যবশত এই ঘটনার ফলে কেউ হতাহত হয়নি। শুধুমাত্র স্থানীয় কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও বিস্ফোরণস্থলে একটি বিশাল বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। যদিও সিআরপিএফের কনভয়ে হামলার ঘটনার ১৬ দিনের মাথায় ফের পুলওয়ামার একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় এইভাবে শক্তিশালী আইইডি বিস্ফোরণের ঘটনায় যথেষ্ট আতঙ্ক ছড়িয়েছে।