রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: আইপিএলের ফাইনাল হওয়ার কথা ছিল ইডেনে। কিন্তু ভারত-পাক যুদ্ধ পরিস্থিতির পর ছবিটা বদলে গিয়েছে। নতুন সূচিতে ইডেনে প্লে অফ বা ফাইনালের কোনও কথাই নেই। শোনা যাচ্ছে, সেটা হতে পারে আহমেদাবাদে। তাতে বেজায় ক্ষুব্ধ কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীরা। 'অবিচারে'র বিরুদ্ধে ইডেনের সামনে শুক্রবার বিক্ষোভ আছড়ে পড়ল।
আইপিএলের অলিখিত প্রথা হল, টুর্নামেন্ট ফাইনালে যে দু’টো টিম খেলে, পরের বছর সেই দুই ফ্র্যাঞ্চাইজির শহরে টুর্নামেন্টের ‘প্রাইজড’ ম্যাচগুলো ভাগাভাগি হয়ে যায়। চ্যাম্পিয়ন টিমের শহর পায় পরের বছরের উদ্বোধনী ম্যাচ। সঙ্গে একটা কোয়ালিফায়ার এবং ফাইনাল। কেকেআর গতবারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন টিম। খাতায়-কলমে এখনই ইডেনে ফাইনাল হবে না, কোথাও বলা নেই। কিন্তু ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতির পর বিসিসিআইয়ের নতুন সূচির উপসংহারে লেখা, প্লে অফ এবং ফাইনালের কেন্দ্র এখনই জানানো হচ্ছে না। পরে তা বলে দেওয়া হবে। তবে বলা হচ্ছে, ফাইনাল নিয়ে যাওয়া হতে পারে আমেদাবাদে।
কেন এই 'অবিচার'? ইডেনের সামনে ব্যানার নিয়ে এদিন প্রবল বিক্ষোভ দেখান ক্রিকেটপ্রেমীরা। হিন্দি-ইংরেজি-বাংলায় লেখা সেই ব্যানারের মূল বক্তব্য, 'ক্রিকেটের নন্দন কানন ইডেন গার্ডেন থেকে আইপিএল ফাইনাল না সরানোর অনুরোধ BCCIকে'। পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে সেই বিক্ষোভের মূল বক্তব্য কিন্তু শুধু 'অনুরোধ' নয়, বরং প্রশ্ন তোলা হচ্ছে আহমেদাবাদের প্রতি 'পক্ষপাতিত্ব' নিয়ে।
এক ক্রিকেট সমর্থকের কথায়, "বিসিসিআই আমাদের বঞ্চিত করছে। আমাদের আশা ছিল, ইডেনে ফাইনাল দেখব। আর পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের কোনও সীমান্ত নেই। গুজরাটের আছে। বাংলায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় আছে। তাহলে কোন যুক্তিতে ফাইনাল সরানোর কথা শোনা যাচ্ছে? বোর্ডের কাছে আমাদের অনুরোধ, আমাদের প্রাপ্য যেন না কেড়ে নেওয়া হয়।" একই বক্তব্য ইডেনের সামনে জড়ো হওয়া তরুণ ক্রিকেটারদেরও।
সিএবি'র তরফ থেকে এর আগেই বোর্ডকে চিঠি লিখে জানানো হয়েছে, আগামী ৩ জুন ইডেন আইপিএল ফাইনাল আয়োজন করতে সব রকম ভাবে তৈরি। সেদিন শহরে কতটা কী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে, সেই সমস্ত তথ্য দিয়ে লেখা হল যে, শহরে সেদিন যদি অল্প-বিস্তর বৃষ্টিও হয়, তা হলেও ইডেন গার্ডেন্সের কাছে বন্দোবস্ত রয়েছে পুরো ফাইনাল আয়োজন করার। কথাটা ঠিকই। বাংলা ক্রিকেটমহলের কেউ কেউ বললেন, গ্রাউন্ড কভার থেকে শুরু করে ইডেনে যে উন্নত মানের সুপার সপার রয়েছে, তাতে অঝোর বৃষ্টি হলেও খেলা পঁয়তাল্লিশ মিনিটের মধ্যে শুরু করে দেওয়া সম্ভব। ভারতবর্ষের যে কোনও মাঠের তুলনায় ইডেনের নিকাশি ব্যবস্থা এতটাই উন্নত। সাধারণ সমর্থকদেরও সেটাই বক্তব্য। এদিন ইডেনে বিক্ষোভের পর কি বিসিসিআই নড়েচড়ে বসবে? উত্তরটা সময়ই দেবে।
