shono
Advertisement
Champions Trophy

খলনায়ক থেকে ম্যাচ জয়ের কারিগর, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে কাকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন 'শাপমুক্ত' রাহুল?

২০২৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা সত্ত্বেও দেশবাসীর কাছে খলনায়ক হয়ে গিয়েছিলেন রাহুল।
Published By: Anwesha AdhikaryPosted: 10:21 AM Mar 10, 2025Updated: 10:21 AM Mar 10, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯ নভেম্বর, ২০২৩। ৯ মার্চ, ২০২৫। বছর দু'য়েক আগেও সেটা ছিল এমনই এক বিশ্বপর্যায়ের টুর্নামেন্ট। দেশের মাঠে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ। আর এবারেরটা ছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। চলতি বছরের মার্চের মতো সেটাও ছিল এক রোববার। তবে নভেম্বরের। কেএল রাহুল সেই ম্যাচটাও খেলেছিলেন। রবিবারও খেললেন। তফাত হল, ২০২৩ সালের সেই বিশ্বকাপ ফাইনালে দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা সত্ত্বেও দেশবাসীর কাছে খলনায়ক হয়ে গিয়েছিলেন রাহুল। মন্থরগতিতে ১০৭ বলে ৬৬ রান করেছিলেন যে। আর মার্চের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের রবিবারে রোহিত শর্মার পরে তিনি ভারত সমর্থকদের কাছে প্রাণের নায়ক। যাঁর ৩৩ বলে অপরাজিত ৩৪ নিয়ে চতুর্দিকে ধন্য ধন্য চলছে।

Advertisement

অর্থাৎ, একদিক থেকে রবিবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনাল রাহুলের কাছেও শাপমুক্তির বটে। তা, চ্যাম্পিয়ন হয়ে কী মনে হচ্ছিল তাঁর? চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সম্প্রচার সংস্থাকে এসে রাহুল বলছিলেন, "ক্যামেরায় বলতে পারব না। কিন্তু শেষের দিকে আমি কুৎসিত সমস্ত ভুলভ্রান্তি করছিলাম। আমাদের পরের দিকে ব্যাটিং ছিল। তাই মনে হয়েছিল যে, দলকে অনায়াসে জিতিয়ে দিতে পারব। কিন্তু এ সমস্ত বড় ম্যাচে নিজেকে শান্ত রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। তবে হ্যাঁ, শেষ পর্যন্ত দলকে জেতাতে পেরে সত্যিই ভালো লাগছে।"

কিন্তু যতটা বললেন চাপ সামলে জেতানোর কথা, কাজটা কি ততটাই সহজ ছিল? রাহুল এবার অদ্ভুত উত্তর দেন। সমস্ত কৃতিত্ব দিয়ে যান ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটকে। বলে দেন, "ভেতরে ভেতরে কী যে অনুভূতি হচ্ছে, ভাষায় প্রকাশ করা মুশকিল। আসলে ছোট থেকে যা করে এসেছি আমরা, সেটাই করেছি। স্কিল দেখিয়েছি। আর কী জানেন, ছোট থেকে নানা পর্যায়ে চাপ নিতে হয়েছে আমাদের। যে দিন থেকে ঠিক করেছি যে, পেশাদার ক্রিকেটার হব, চাপ নেওয়া সে দিন থেকে শুরু হয়েছে। চ্যালেঞ্জ সামলানো শুরু হয়েছে। আসলে বোর্ড যে ভাবে ক্রিকেটারদের ছোট থেকে তৈরি করে, যে ভাবে আমরা পেশাদার ক্রিকেটারে পরিণত হই, এ ধরনের জয়ের পিছনে সেই ব্যাপারগুলোই কাজ করতে থাকে।"

কী রকম? রাহুল এবার আরও বিশদে যান। বলে দেন, "কৃতিত্ব আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের। নিজেদের স্কিল, নিজেদের ব্যাটিং ক্ষমতা প্রকাশের জন্য যে প্ল্যাটফর্ম আমাদের ভারতীয় বোর্ড দিয়ে থাকে, অতুলনীয়। আমরা প্রতিনিয়ত নিজেদের অনন্ত চাপে ফেলতে থাকি। যে চাপ সবার অলক্ষ্যে আমাদের তৈরি করে দিয়ে যায়। ক্রমাগত আমাদের চ্যালেঞ্জ করে ক্রিকেটার হিসেবে আরও উন্নত করে। তাই নেপথ্যে কৃতিত্ব কিন্তু ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের।"

রাহুলকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে উইকেটকিপার-ব্যাটার হিসেবে খেলানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না ভারতীয় টিমের পক্ষে। কারণ, যাঁকে বসিয়ে গোটা টুর্নামেন্টজুড়ে খেলিয়ে যাওয়া হল রাহুলকে, তাঁর নাম ঋষভ পন্থ। টুর্নামেন্ট চলাকালীন অনেক তাবড় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞই বলেছিলেন যে, পন্থকে বসানো ঠিক হচ্ছে না। কারণ, তিনি গেমচেঞ্জার। কিন্তু রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় টিম রাহুলের উপর আস্থা হারায়নি। বরং পারিপার্শ্বিকের কথায় কান না দিয়ে তাঁকেই কিপার-ব্যাটার হিসেবে খেলিয়ে যাওয়া হয়েছে। যে আস্থার প্রতিদান প্রতিনিয়ত। দিয়ে গিয়েছেন রাহুল। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ঝোড়ো ব্যাটিং করে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনালে মাঝে মহাচাপ সামলে শান্ত ব্যাটিং করে। "যত দূর মনে পড়ছে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা পাঁচটা ম্যাচের মধ্যে তিনটেয় ব্যাট করার সুযোগ পেলাম। তিনবার আমাকে ব্যাট করতে নেমে এমন চাপ নিতে হল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটা বলও খেলার সুযোগ পাইনি। তাই একটু ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে মন্দ লাগছে না। টিমকে জিতিয়েও দিতে পারলাম। দেখুন, এ রকম পরিস্থিতিতে এই প্রথম পড়লাম না। আর এটাও শেষ বার হয়ে থাকল না। ভবিষ্যতে এ রকম বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে চাপে পড়লে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনাল থেকে পাওয়া শিক্ষা কাজে দেবে।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • একদিক থেকে রবিবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনাল রাহুলের কাছেও শাপমুক্তির বটে।
  • রাহুলকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে উইকেটকিপার-ব্যাটার হিসেবে খেলানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না ভারতীয় টিমের পক্ষে।
  • রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় টিম রাহুলের উপর আস্থা হারায়নি। বরং পারিপার্শ্বিকের কথায় কান না দিয়ে তাঁকেই কিপার-ব্যাটার হিসেবে খেলিয়ে যাওয়া হয়েছে।
Advertisement