আলাপন সাহা: এখনও কেমন যেন ঘোরের মধ্যে রয়েছেন কুলদীপ যাদব। ভারতীয় টিমের অন্যতম সেরা স্পিনারের ফুটবলের প্রতি বরাবরের আকর্ষণ। প্রচুর ম্যাচ দেখেন। বিদেশে গিয়ে ফুটবল ম্যাচ দেখেছেন। ইউরো কাপ দেখেছেন। ক্লাব ফুটবলে কুলদীপের প্রিয় দল বার্সেলোনা। আর অবশ্যই ফেভারিট লিওনেল মেসি!
মেসির সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে। তাঁর সঙ্গে আড্ডা হবে। কুলদীপের কাছে সেটা রীতিমতো স্বপ্ন ছিল। অবশেষে সেই স্বপ্নপূরণ। ভারত সফরের শেষ দিকে এক সংস্থার শুটিংয়ে মেসির সঙ্গে ছিলেন কুলদীপও। এত কাছ থেকে মেসি-সাক্ষাৎ হবে, সেটা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি! কুলদীপকে সবচেয়ে বেশি অবাক করে মেসির সারল্য। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম আইকন। কিন্তু কোনও দাম্ভিকতা নেই। একেবারে সহজ, সরল। সবার সঙ্গে অনায়াসে মিশে যেতে পারেন। কুলদীপের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা হয় মেসির। ভারতীয় স্পিনারের এক মুহূর্তের জন্য মনে হয়নি যে তিনি একজন কিংবদন্তির সঙ্গে কথা বলছেন! কুলদীপ স্প্যানিশ জানেন। মেসির সঙ্গে কথাবার্তার শুরুটাও হয় স্প্যানিশেই। আসলে কুলদীপ জানতেন, লিওনেল মেসির সঙ্গে স্প্যানিশে কথা বললে, আড্ডার ব্যাপারটা অনেক সহজ হয়ে যাবে। কুলদীপের কথায়, "জানতাম স্প্যানিশে কথাবার্তা বললে আড্ডাটা অনেক প্রাণবন্ত হবে। আমি নিজেও স্প্যানিশ শিখেছি।"
কুলদীপ নিজের ফুটবলের প্রেমের কথা, বার্সেলোনার প্রেমের কথা বলেন মেসিকে। মেসির সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগে নিজের স্প্যানিশ আরও একটু ভালো করে ঝালিয়ে নিয়েছিলেন। একইসঙ্গে এটাও বলেন, লিওকে নিয়ে তিনি ঠিক কতটা আবেগপ্রবণ। সংবাদ প্রতিদিন-কে ফোনে কুলদীপ বলছিলেন, "দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। জীবনে এমন কিছু কিছু ঘটনা, মুহূর্ত থাকে যা সারাজীবন সুখের স্মৃতি হিসাবে রয়ে যায়। এটাও ঠিক তাই। ওই মুহূর্তগুলো সোনালি অধ্যায় হয়ে থেকে যাবে। আগে কখনও এত সামনে থেকে মেসিকে দেখার সুযোগ পায়নি। বলতে পারেন আমার স্বপ্ন পূরণ হল। ভাবতে পারছেন লোকটার নাম মেসি। বিশ্ব ফুটবলে ওর অবদানের কথা আর কী বলব। সেই মানুষটাকে সামনে থেকে দেখছি। ওর সঙ্গে কথা বলছি। আড্ডা দিচ্ছি। জীবনে অন্যতম সেরা পাওনা বলতে পারেন। আরও একটা ব্যাপার আমাকে অবাক করে দেয়। অত বড় ফুটবলার। একজন কিংবদন্তি। কিন্তু কোনও অহংকার নেই। কোনও দাম্ভিকতা নেই। সবার সঙ্গে হেসে হেসে কথা বলছে। সবার কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনছে। এক কথায়, প্রচণ্ড ডাউন টু আর্থ। ওকে বলেছিলাম, আমি তোমার প্রচণ্ড বড় ভক্ত। তোমার খেলা ভীষণ আনন্দ দেয়।"
আর্জেন্টিনার দশ নম্বর অর্থাৎ নিজের জার্সিতে সই করে কুলদীপকে তা উপহার দেন। একইসঙ্গে কুলদীপের থেকে আবার বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে জানতে চান মেসি। সামনের বছর দেশের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলবে ভারত। সেই বিশ্বকাপের কথা জানতে চান কুলদীপের থেকে। একইসঙ্গে বিশ্বকাপের জন্য কুলদীপকে আগাম শুভেচ্ছাও জানান মেসি। কুলদীপ বলছিলেন, "ফুটবলার হিসাবে যতটা বড়, মানুষ হিসাবেও ঠিক ততটাই বড়। ওই শুটিংয়ে সবার সঙ্গে মিলে মিশে গিয়েছিল। কখনও বিরক্ত হতে দেখেনি। এর থেকেও অনেক কিছু শেখার রয়েছে।" সদ্য দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ শেষ হয়েছে। সামনের বছর আবার নিউজিল্যান্ড সিরিজ। তবে বিজয় হাজারেতে খেলবেন তিনি। শুরুর কয়েকটা ম্যাচে খেলবেন না। কয়েকটা দিন একটু বিশ্রাম নেবেন। তারপরই নামবেন উত্তরপ্রদেশের হয়ে বিজয় হাজারে ট্রফি খেলতে। সেখানেই নিউজিল্যান্ড সিরিজের প্রস্তুতি সারবেন। আসলে নিউজিল্যান্ড সিরিজের পরই যে বিশ্বকাপ। আর কুলদীপের লক্ষ্য বিশ্বকাপ জয়। ঠিক দু'বছর আগের মতোই।
