মুর্শিদাবাদ কিংস: ১৩৩/৮ (অগ্নিভ ৪৮, সুদীপ ২৩, করন লালা ২৯/৩)
লাক্স শ্যাম কলকাতা টাইগার্স: ১২৭/৯ (রণিত ঘোষ ৩৯, অভিষেক পোড়েল ২৬, শুভম চ্যাটার্জি ২৩, সুখমিত সিং ২২/৩, নীতিন ভর্মা (১৪/৩)
৬ রানে জয়ী মুর্শিদাবাদ কিংস।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জমে উঠেছে বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টির লিগ (Bengal Pro T-20 League)। রবিবার মুর্শিদাবাদ কিংস এবং লাক্স শ্যাম কলকাতা টাইগার্সের ম্যাচে মূলত দু'পক্ষের বোলারদের লড়াই হল। প্রথমে ব্যাট করে কলকাতা টাইগার্সদের সামনে ১৩৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিল মুর্শিদাবাদ। টি২০ ক্রিকেটে যা খুব কঠিন টার্গেট নয়। তথাপি সেই রান তুলতে হিমশিম খেল কলকাতার ব্যাটাররা। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ ওভারে জয় পেল মুর্শিদাবাদ। ৬ রানে জিতল তারা।
টি২০ ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় টুর্নামেন্ট আইপিএল দেখেছে ব্যাটারদের দাপট। সেখানে বোলাররা যেন মার খেতেই মাঠে নামেন। বিশ্বসেরা পেসার, স্পিনাররাও অচেনা তরুণ ব্যাটারের হাতে লাঞ্ছিত হন। কিন্তু টি২০ বিশ্বকাপে চিত্রটা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। সেখানে রান তুলনায় কম উঠছে, দাপট দেখাচ্ছেন বোলাররা। বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টির লিগের রবিবারের ম্যাচও সেই ঘরানার সাক্ষী হল। দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেটের পতন হয় মুর্শিদাবাদের। ব্যক্তিগত ১ রান আউট হয়ে যান কৌশিক ঘোষ। ইনিংস শুরুর আরেক ব্যাটার অদিত্য পুরোহিত দ্রুত ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। যদিও অধিনায়ক সুদীপ ঘরামি (২৩) আর অগ্নিভ পানের (৪৮) লড়াইয়ে খেলায় ফেরে বাংলার টি২০ লিগের কিঙ্গসরা।
যদিও বড় স্কোর করতে পারেনি নবাবের জেলার দল। অল্প রানেই থমকানোর পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান কলকাতার বোলার করন লালের। তিনি ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। করনকে যোগ্য সঙ্গ দেন সৌরভ শ্রীবাস্তব। ৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৩৩ করে মুর্শিদাবাদ। ব্যাট করতে নেমে কলকাতার ইনিংসে লড়াই চালান রণিত ঘোষ (৩৯), অভিষেক পোড়েল (২৬) এবং শুভম চ্যাটার্জি (২৩)। যদিও মুর্শিদাবাদের দুই বোলিং ব্রিগেড সুখমিত সিং (২২/৩), নীতিন ভর্মা (১৪/৩), দিশাদ খানদের (১৭/১) দাপটে শেষ পর্যন্ত হারতে হল কলকাতকে। ৬ রান বাকি থাকতেই ফুরিয়ে গেল লাক্স শ্যাম কলকাতা টাইগার্সের জন্য নির্দিষ্ট ২০ ওভার।
এদিকে হার পিছু ছাড়ছে না হারবার ডায়মন্ডসের (Harbour Diamonds)। বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টির লিগ (Bengal Pro T-20 League) পর্যায়ের ম্যাচ প্রায় শেষের পথে। কিন্তু নিজেদের ৭ ম্যাচে একটিও জয় পায়নি মনোজ তিওয়ারির দল। এদিন তাঁরা হারলেন রশ্মি মেদিনীপুর উইজার্ডসের (Rashmi Medinipur Wizards) কাছে। আর ৮ উইকেটে জিতে লিগের দ্বিতীয় দল হিসেবে প্লে অফে উঠে গেল সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের দল।
বিপিএলের প্রথম দিকে একেবারেই রান উঠছিল না। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, তত রানসংখ্যা বেড়েছে। এদিন প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে হারবার ডায়মন্ডসের রান ছিল ১৬৯। মনোজ আর অভিজিৎ ভগত দুজনেই ১৫ বলে ১৫ রান করে আউট হন। সেখান থেকে ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যান প্রয়াস বর্মণ ও শুভম সরকার। শশাঙ্ক সিং এদিন মাত্র ১০ রান করে থেমে যান। কিন্তু শুভমের দুরন্ত হাফসেঞ্চুরি তাদের এগিয়ে দেয়। শেষের দিকে যোগ্য সঙ্গ দেন বাদল সিং। একটি করে উইকেট নেন মেদিনীপুরের দীপক কুমার, অনুভব ত্যাগী, কৌশিক মাইতিরা।
[আরও পড়ুন: অজিবধের পর রাস্তায় নেমে উৎসব আফগানিস্তানে, ব্র্যাভোর ‘চ্যাম্পিয়ন’ ছন্দে মাতলেন রশিদরাও]
জবাবে একা হাতেই প্রায় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন প্রিয়াংশু শ্রীবাস্তব। ৫৭ বলে ৮৮ রান করে ম্যাচের সেরাও হন তিনি। শুরুতে যদিও ঋদ্ধিমান সাহার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল মেদিনীপুর। অন্যদিকে ৯ বলে ২৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে যান বিবেক সিং। তার পরই শুরু হয় প্রিয়াংশুর দাপট। সঙ্গে সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের ৫৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস তাঁদের জয় নিশ্চিত করে দেয়।
এই জয়ের ফলে বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টি লিগের দ্বিতীয় দল হিসেবে প্লে অফে চলে গেল মেদিনীপুর। শনিবারই হারবার ডায়মন্ডসকে হারিয়ে শেষ চারে পৌঁছে গিয়েছিল সোবিস্কো স্ম্যামার্স মালদহ। এদিনের জয়ের ফলে মেদিনীপুরের পয়েন্ট দাঁড়াল ৭ ম্যাচে ৯। অন্যদিকে ৭ ম্যাচে কোনও পয়েন্ট না পেয়ে মনোজরা লিগের একেবারে শেষে পড়ে রইলেন।