আলাপন সাহা, দুবাই: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে আসার আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল শান্ত একটা কথা বলছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, বাংলাদেশ এবার আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে নামছে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অভিলাষ নিয়ে। কিন্তু হায়। চ্যাম্পিয়ন হওয়া দূরস্থান, গ্রুপ পর্বই পার করতে পারল না বাংলাদেশ! পরপর দু’টো ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। সেটাও এক ম্যাচ বাকি থাকতে। যা ওপার বাংলার ক্রিকেটমহলের বক্তব্য অনুযায়ী, অত্যন্ত লজ্জাজনক! পদ্মাপারের কোনও কোনও কাগজ তো আবার নাজমুলের বক্তব্যকে ‘আষাঢ়ে গল্প’ বলে ব্যঙ্গ করতেও ছাড়েনি!
রাগ হওয়া স্বাভাবিক। দেশজ টিম এত আগাম ঢাক-ঢোল বাজানোর পর মাঠে ‘মূষিক প্রসব’ করলে রাগ কার না হয়? বলাবলি শুরু হয়ে গিয়েছে যে, বাংলাদেশ ক্রিকেট যে আধাঁরে ছিল, সে আঁধারেই রয়েছে। সে যতই ঘরোয়া ক্রিকেটের খোলনলচে বদলে ফেলার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাক না কেন। যতই ঘূর্ণি পিচ তৈরি করা বন্ধ করে, ডিউক বল আনিয়ে পেস-বাউন্সের সঙ্গে ক্রিকেটারদের মানিয়ে নেওয়ার কাজকর্ম শুরু হয়ে যাক। অনেকেরই মনে হচ্ছে, এ সমস্ত করে কিছু হবে না। বদল প্রয়োজন সর্বোচ্চ পর্যায়ে। প্রয়োজন এমন একজনকে, যিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে সহজাত। যিনি পারবেন, টিমের উন্নতিকল্পে একটা নীলনকশা এঁকে দিতে। তা, তেমন নামও একখানা শোনা যাচ্ছে। তামিম ইকবাল!
নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ ক্রিকেটের কিংবদন্তি যিনি। তবে বিগত এক বছরে তামিমকে নিয়ে কম ঝঞ্ঝাট হয়নি। প্রথমে অবসর নিয়ে ফেলেছিলেন। তারপর অবসরের সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেছিলেন। পরে আবার নিজেই জানিয়ে দেন, আর খেলবেন না। শোনা যায়, শাকিব-আল-হাসানের সঙ্গে সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল তামিমের। যার ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই নীরবে ক্রিকেট থেকে সরে যেতে হয়েছিল তাঁকে। তবে বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। যা খবর, তাতে ক্রীড়া প্রশাসক হওয়ার দিকেই এগোচ্ছেন তামিম।
ওয়াকিবহাল মহলের কেউ কেউ বলছিলেন, বাংলাদেশে ক্রিকেট বোর্ডের অফিসে এখন প্রায়ই দেখা যায় তামিমকে। ভারতের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ টিম যখন দুবাইয়ে ছিল, তখন তামিম নিজেও ছিলেন মরুশহরে। ম্যাচের আগে ক্রিকেটারদের সঙ্গে দেখা করেন। আড্ডা দেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটমহল থেকে এটাও শোনা গেল, বর্তমান টিমের সঙ্গে তামিমের সম্পর্কও বেশ ভালো। ক্রিকেটাররাও অসম্ভব মানেন তামিমকে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে এখন প্রাক্তন ক্রিকেটারদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়ে আসা হচ্ছে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সেই পদে ছিলেন। বর্তমানে রয়েছেন রজার বিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট মহলে খোঁজখবর নিয়ে যা জানা যাচ্ছে, তাতে তামিমের বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এটাও শোনা গেল, এখনই যদি তিনি প্রেসিডেন্ট নাও হন, তাহলেও তাঁকে অন্য কোনও বড় দায়িত্বে নিয়ে আসা হতে পারে। কিছু সময় পর হয়তো তাঁকে প্রেসিডেন্টের চেয়ারে দেখা যেতে পারে।
